বাল্যবিবাহ রুখতে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। মানলেন, বীরভূমে বাল্যবিবাহের প্রবণতা উদ্বেগজনক।
সোমবার বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে এ বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে কৃতী ও উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে বাল্যবিবাহ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, “বাল্যবিবাহ রোধে বীরভূম জেলার খুব খারাপ অবস্থা। আমরা পিছিয়ে পড়া জেলা থেকে ধাপে ধাপে বীরভূমকে এগিয়ে নিয়ে এসেছি। কিন্তু, বাল্যবিবাহ কোনও ভাবে আটকাতে পারছি না। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।’’ এর পরেই পড়ুয়াদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের আরও বেশি করে লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে না হয়ে যায়। সকল পড়ুয়াকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে।”
ঘটনা হল, প্রশাসনের তরফ থেকে বারবার মানুষকে সচেতন করা সত্ত্বেও বীরভূমে বাল্যবিবাহ রোধ করা যাচ্ছে না। বাল্যবিবাহে এই জেলা প্রথম সারিতে। চরম উদ্বেগের নাবালিকা মাতৃত্বের হারও। তা ঠেকাতে নাগাড়ে প্রচার চালাচ্ছে প্রশাসন। গ্রামাঞ্চল থেকে শহরে নেওয়া হচ্ছে নানাবিধ কর্মসূচিও। তবু, বাল্যবিবাহের প্রবণতা ঠেকানো যাচ্ছে না বলেই প্রশাসন সূত্রের খবর। এ বার সে কথা উঠে এল মন্ত্রী চন্দ্রনাথের বক্তব্যে।
কয়েক দিন আগেই মন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ বোলপুর বিধানসভা এলাকার ২৭টি স্কুলের প্রায় তিন হাজার পরীক্ষার্থী ও তাদের স্কুলগুলিতে ‘মমতা ফলক’ ও বিশেষ শংসাপত্র দিয়ে সম্মাননা প্রদান করা হবে। এ দিন সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রামোন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান ও তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী-সহ অনেকে। পড়ুয়াদের হাতে স্মারক, বিশেষ শংসাপত্র, মিষ্টির প্যাকেট দেওয়া হয়। অনুব্রতের পরামর্শ, “যখনই স্কুলে যাবেন, নিজের মা বাবাকে প্রণাম করবেন। আর একবার মনে মনে সরস্বতী মাকে ডেকে নেবেন। তা হলে লক্ষ্যে পৌঁছবেই।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)