Advertisement
E-Paper

বান্দোয়ানে অবারিত দ্বার বিডিও-র চেম্বার

কয়েক মাস আগে যে অফিসের ভিতরে সিআইডি-র গোয়েন্দারা তল্লাশি চালিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে বিডিও-কে গ্রেফতার করে নিয়ে যান। সেই অফিসেই সটান ঢুকে নতুন বিডিও-র সঙ্গে দেখা করতে পারছেন আমজনতা।

সমীর দত্ত

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৭ ০১:৪০
ভরসা: ব্লক অফিসে বিজ্ঞপ্তি। —নিজস্ব চিত্র।

ভরসা: ব্লক অফিসে বিজ্ঞপ্তি। —নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গে অফিসে দেখা করতে গেলেও অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত এলাকার বান্দোয়ানের ব্লক অফিসে গেলে অন্য অভিজ্ঞতা। বিডিও-র দরজায় সাঁটানো নোটিস— ‘অফিসে প্রবেশ করার জন্য অনুমতির প্রয়োজন নেই, এই অফিস আপনাদের’।

কয়েক মাস আগে যে অফিসের ভিতরে সিআইডি-র গোয়েন্দারা তল্লাশি চালিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে বিডিও-কে গ্রেফতার করে নিয়ে যান। সেই অফিসেই সটান ঢুকে নতুন বিডিও-র সঙ্গে দেখা করতে পারছেন আমজনতা। সরাসরি জানাতে পারছেন, নিজেদের সমস্যার কথা। বিডিও মহাদ্যুতি অধিকারী বলছেন, ‘‘এটাই তো চাই। মাস দেড়েক বান্দোয়ানের বিডিও হয়ে এসে দেখছি, সাধারণ মানুষ তাঁদের অধিকার বোধ সম্পর্কে সচেতন নন। অনেকেই বিডিও-র চেম্বারে ঢুকতে ইতস্তত বোধ করেন। এমনকী অনেকই জুতো খুলে ভিতরে ঢুকে চেয়ারের বদলে মেঝেতে বসে পড়েন। অথচ তাঁদের সঙ্গে সহজ ভাবে কথা বলা গেলে, এলাকার অনেক খবর পাওয়া যায়। তাতে প্রকৃত উন্নয়নের কাজ করা সহজ হয়।’’

সম্প্রতি ওই অফিস ঘুরে গিয়েছেন জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়। তিনি বলেন, ‘‘সমস্ত অফিসই জনগণের অফিস। কিন্তু নানা কারণে চেম্বারে প্রবেশের কিছু নিয়ম করতে হয়েছে। তবে বান্দোয়ান ব্লক অফিসে যা হয়েছে, তা অন্যেরাও করতে পারেন।’’

ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া ঠরকাদহ গ্রামের বাসিন্দা অতুল মুর্মু, পানু মুর্মু একশ‌ো দিনের কাজের বকেয়ার টাকা কবে মিলবে জানতে সম্প্রতি ব্লক অফিসে এসেছিলেন। অতুলবাবু জানান, আগে বিডিও-র দরজার বাইরে এক কর্মী বসে থাকতেন। তিনি সাক্ষাৎপ্রার্থীদের প্রচুর প্রশ্ন করতেন। এরপরে তাঁর করুণা হলে বিডিও-র সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার অনুমতি মিলত।

পানুবাবু বলেন, ‘‘আগে ঘণ্টাখানেক অপেক্ষার পরে বলা হতো, সাহেব ব্যস্ত আছেন। আপনারা অন্য দিন আসবেন। বিডিওদের সঙ্গেও ভাল করে কথা বলার সুযোগ হতো না। এ বার ব্লক অফিসে এসে দেখলাম, অনেক পাল্টে গিয়েছে। বিডিও-র চেম্বারের বাইরে কেউ বসে নেই। নোটিসটা পড়তে পারিনি। তাই দরজার সামনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। এক কর্মীই আমাদের ভিতরে যেতে বলেন।’’

দেখা তো সহজে হল, কাজ হল কি? বিডিও বলেন, ‘‘মজুরি দেওয়ায় কিছু জটিলতা ছিল। আশা করছি শ্রমিকেরা একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা কয়েক দিনের মধ্যে পেয়ে যাবেন।’’

বান্দোয়ান পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সন্ধ্যারানি সহিস বলেন, ‘‘এই ক’বছরে অন্তত তিন-চারজন বিডিও-র সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। মহাদ্যুতিবাবু সব কর্মীদের নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন। সাধারণ লোকজনের সঙ্গেও ভাল করে কথা বলেন। এতে জনসংযোগও ভাল হয়।’’ তিনি জানান, নতুন বিডিও যোগ দেওয়ার পরে ব্লক অফিসের কাজে গতি এসেছে। এই ব্লকে কয়েক মাস স্থায়ী বিডিও না থাকায়, বেশ কিছু কাজ থমকে গিয়েছিল। সে সব কাজ এগোচ্ছে। বান্দোয়ান ব্লক এলাকায় একশো দিনের কাজের প্রায় ১ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা বকেয়া মজুরিও দেওয়ার কাজ চলছে।

পূর্বতন বিডিও-র গ্রেফতারির কথা মনে করিয়ে তৃণমূলের বান্দোয়ান ব্লক সভাপতি রঘুনাথ মাঝি বলেন, ‘‘ওই ঘটনার কথা সবাই শুনেছেন। তাই প্রশাসকের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরাতে মহাদ্যুতিবাবু ঠিক কাজই করছেন।’’

BDO BDO Office Bandwan বান্দোয়ান
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy