Advertisement
E-Paper

পুকুর ভরাটে বাধা, নালিশ ঘরে হামলার 

পুকুর ভরাট হচ্ছে— এই অভিযোগ তুলে এককাট্টা হয়েছিলেন গ্রামের কিছু বাসিন্দা। অভিযোগ, তারই জেরে হামলা হল এক জনের বাড়িতে। মারধর করা হল প্রৌঢ়াকেও। রবিবার রাতে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহর লাগোয়া মড়ার পঞ্চায়েতের যমুনাবাঁধ কলোনির ঘটনা। ঘটনায় মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৫৫
অভিযোগকারী সায়ন দাসের বাড়ির সামনে। নিজস্ব চিত্র

অভিযোগকারী সায়ন দাসের বাড়ির সামনে। নিজস্ব চিত্র

পুকুর ভরাট হচ্ছে— এই অভিযোগ তুলে এককাট্টা হয়েছিলেন গ্রামের কিছু বাসিন্দা। অভিযোগ, তারই জেরে হামলা হল এক জনের বাড়িতে। মারধর করা হল প্রৌঢ়াকেও। রবিবার রাতে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহর লাগোয়া মড়ার পঞ্চায়েতের যমুনাবাঁধ কলোনির ঘটনা। ঘটনায় মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জখম সবিতা দাসের বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

যমুনাবাঁধ কলোনি ষোলোআনা কমিটির সম্পাদক সৌমেন শীলের অভিযোগ, বলাই দাস নামে এলাকারই এক যুবক এবং তাঁর সঙ্গীরা ষোলোআনার একটি পুকুর ভরাট করার চেষ্টা করছিল। এলাকার প্রবীণ প্রবীন রমেন আচার্য, নরেশচন্দ্র মজুমদাররা দাবি করেছেন, ষাটের দশকের গোড়ায় ‘ফুড ফর ওয়ার্ক’ প্রকল্পে সেটি খনন করা হয়েছিল। নিয়ন্ত্রণ করে ষোলোআনা। এখন তাতে জল নেই। যে জায়গাটা নিয়ে অভিযোগ, সেটির ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বিষ্ণুপুর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক বিপ্লব দাস বলেন, ‘‘খাতায়কলমে ডাঙা বলে উল্লেখ করা রয়েছে। তবে এক সময়ে পুকুর কাটা হয়েছিল। বছরের একটা সময়ে জলও থাকে। তাই বোজানোর চেষ্টা করলে সেটা বেআইনি হবে।’’

সৌমেনবাবু বলেন, ‘‘পুকুরের পাশের একটি জমি সম্প্রতি বিক্রি হয়। তার পরেই জমি মাফিয়াদের হয়ে পুকুর ভরাট করার চেষ্টা করছিল বলাই আর কিছু লোকজন। আমরা প্রতিবাদে এককাট্টা হয়েছিলাম। তার জেরে বেশ কিছু দিন ধরেই হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।’’ তাঁর দাবি, এরই মধ্যে পুকুর সংস্কার করে মাছ চাষের পরিকল্পনা করে ষোলোআনা। সেই ব্যাপারেই কলোনির সাবাইকে রবিবার একটি বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। সৌমেনবাবু বলেন, ‘‘আমি সায়নের থেকে ফোন নিয়ে বলাইকে বৈঠকে আসতে বলেছিলাম।’’ তাঁর অভিযোগ, সেই জের টেনে রাতে লোকজন নিয়ে সায়নের বাড়িতে হামলা করে বলাই। ছেলেকে বাঁচাতে এসে জখম হন বছর পঞ্চান্নর সবিতাদেবী।

বাঁ দিকের জায়গাটিই ভরাটের চেষ্টা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

সায়নের দাবি, গোলমালের আঁচ পেয়ে পড়শিরা বেরিয়ে আসতেই হামলাকারীরা পালায়। দু’জনকে জনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা। রাতেই বলাই-সহ আরও কয়েক জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সায়ন। এলাকা থেকে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। সোমবার বিষ্ণুপুর আদালতে ধৃত পাঁচ জনেরই জেল হাজতের নির্দেশ হয়েছে। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) সুকোমলকান্তি দাস জানান, অন্য অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি করছে পুলিশ।

সোমবার বাড়িতে গিয়ে দেখা মেলেনি বলাই দাসের। তাঁর খোঁজ দিতে পারেননি স্ত্রীও। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্বামী জমি বেচাকেনার কাজ করেন। পুকুর ঘেঁষা একটা জমি ও কেন বিক্রি করিয়েছে, সেই কথা বলে ষোলোআনা দশ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিল। অত টাকা দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই।’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, রবিবার বৈঠকে কেন বলাই যাননি, সেই কথা বলে ষোলোআনার লোকজনই রাতে তাঁদের বাড়িতে হামলা করে। তবে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সৌমেনবাবুরা। এই ধরনের কোনও অভিযোগ এখনও থানায় জমা পড়েনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এ দিন সকালে যাওয়া হয়েছিল অভিযোগকারী সায়ন দাসের বাড়িতেও। সায়নের বাবা জগন্নাথ দাস মড়ার পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য। তিনি বলেন, ‘‘রাত সাড়ে ১১টা হবে তখন। বলাই আরও আট জন ছেলেকে নিয়ে বাড়ির সামনে এসে গালিগালাজ শুরু করে। সবাই মত্ত ছিল। হুমকি দিচ্ছিল, না বেরোলে মেরেই ফেলবে।’’ তাঁর অভিযোগ, সায়ন গিয়ে দরজা খুলতেই বাঁশ আর রড নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে হামলাকারীরা। ছেলেকে বাঁচাতে গেলে মারধর করা হয় সবিতাদেবীকেও। আর ততক্ষণে চলে আসেন পড়শিরা। ধরে ফেলেন দু’জনকে। সবিতাদেবীকে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে।

বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জখম প্রৌঢ়ার কিছু শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে। তাঁর অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।

Bishnupur Violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy