Advertisement
০৪ মে ২০২৪

নিরাপত্তা কোথায়, প্রশ্ন বাঁকুড়ায়

বুধবার রানিবাঁধে মনোনয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছিল বিজেপির। দলের জেলা নেতাদের অভিযোগ, তারই মধ্যে হামলা চালায় শাসকদলের লোকজন। আক্রান্ত হয়ে ওই রাতেই বাঁকুড়া মেডিক্যালে মৃত্যু হয় অজিত মুর্মু নামে বিজেপি প্রার্থীর।

চড়াও: জেলাশাসকের অফিস চত্বরে। নিজস্ব চিত্র

চড়াও: জেলাশাসকের অফিস চত্বরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২৪
Share: Save:

আজ, শনিবার থেকে মহকুমাশাসকের অফিসে পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীরাও মনোনয়ন তুলতে পারবেন বলে প্রশাসন জানিয়েছে। আশ্বাস দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার। কিন্তু শুক্রবার বাঁকুড়ায় খোদ জেলাশাসকের অফিসের সামনেই বিজেপি নেতৃত্বের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন, কে দেবে নিরাপত্তা?

বুধবার রানিবাঁধে মনোনয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছিল বিজেপির। দলের জেলা নেতাদের অভিযোগ, তারই মধ্যে হামলা চালায় শাসকদলের লোকজন। আক্রান্ত হয়ে ওই রাতেই বাঁকুড়া মেডিক্যালে মৃত্যু হয় অজিত মুর্মু নামে বিজেপি প্রার্থীর। জেলায় বিরোধীদের মনোনয়নে বাধা দেওয়ার আরও বেশ কিছু অভিযোগ উঠে এসেছে। এই সমস্ত নিয়ে কথা বলতে শুক্রবার দুপুর ১২টা নাগাদ জেলাশাসকের কাছে যাচ্ছিলেন বিজেপির রাজ্য নেতারা। দফতরের সামনেই তাঁরা আক্রান্ত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলাশাসকের দফতর চত্বরে ভূমি অধিগ্রহণ দফতরের সামনে বিজেপির গাড়ি ঘিরে ধরে একদল লোক। তাঁদের অনেকের মাথা ঢাকা ছিল হেলমেটে। ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বলতে ইট নিয়ে দলটি চড়াও হয় গাড়িতে। বাইরে টেনে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয় শ্যামাপদবাবুকে। পড়তে থাকে এলোপাথাড়ি কিল, চড়, লাথি, ঘুঁষি। কোনও রকমে পালিয়ে গাড়িতে গিয়ে ওঠেন তিনি। দ্রুত এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে যান বিজেপির প্রতিনিধিরা।

এই ঘটনায় প্রশাসন এবং পুলিশের মুখ পুড়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। সূত্রের দাবি, প্রশাসনের কর্মীদের একাংশও বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের বাসিন্দা বলেন, ‘‘জেলাশাসকের দফতর চত্বরেই যদি হামলা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ নিজেদের নিরাপদ ভাববেন কোন ভরসায়?’’ বিবেকানন্দবাবু দাবি করেছেন, চত্বর ছেড়ে চলে আসার পরে জেলাশাসক নিজে তাঁকে ফোন করেছিলেন। নিরাপত্তা দিয়ে তাঁদের দফতরে নিয়ে গিয়ে কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা যাননি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা জেলাশাসসকে জানিয়ে গিয়েছিলাম। উনি আমাদের আসতে বলেছিলেন। তার পরেও ওঁর দফতরের সামনেই আমাদের উপরে হামলা হল। কোনও পুলিশকর্মী এগিয়ে এলেন না। আবার যেতাম কার ভরসায়?’’

এ দিকে, ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বলতে হামলা হওয়ায় ধন্দ দেখা দিয়েছে। হামলাটা করেছে কারা? বাঁকুড়া জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি তথা তৃণমূলের জেলা নেতা অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এটা পরিষ্কার বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।’’ বিজেপির অভিযোগ, তাঁদের ঘাড়ে দোষ চাপাতে ‘জয় শ্রীরাম’ বলে হামলা করেছে শাসকদলের লোকজন।

রানিবাঁধে অজিত মুর্মুর মৃত্যুর পরে শাসকদলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিল বিজেপি। বুধবার রাতের ওই ঘটনার পরে সংবাদমাধ্যমের একাংশের সামনে মৃতের ছোটভাই দাবি করেন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে তাঁর দাদা খুন হয়েছেন। তৃণমূলও সেই কথা তুলে ধরেছিল। শুক্রবার বিজেপির একাংশ পাল্টা একটি ভিডিয়ো তুলে ধরেছেন। সেখানে অজিতের এক দাদাকে তাঁর ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য তৃণমূলকে দায়ী করতে শোনা গিয়েছে। বিজেপির দাবি, ওই ভিডিয়োটি বুধবার রাতে অজিতের মৃত্যুর পরে বাঁকুড়া মেডিক্যাল চত্বরে তোলা।

অরূপবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, বিজেপির উপরে তাঁরা কোথাও আক্রমণ করেননি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE