এ বার বিশ্বভারতীর উপাচার্যের সমালোচনা শোনা গেল বিজেপি নেতা তথা রাজ্য কোর কমিটির সদস্য অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখে। ফাইল ছবি।
এর আগে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিরুদ্ধে তোপ দেখেছেন তৃণমূল নেতা, রাজ্যের মন্ত্রীও। উপাচার্যের সমালোচনায় সরব হয়েছে বাম ছাত্র সংগঠনও। এ বার বিশ্বভারতীর উপাচার্যের সমালোচনা শোনা গেল বিজেপি নেতা তথা রাজ্য কোর কমিটির সদস্য অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখে।
মঙ্গলবার বোলপুর সাংগঠনিক জেলায় এসে দলের কার্যকর্তাদের আলোচনা সারেন গত বিধানসভা ভোটে বোলপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ। উপস্থিত ছিলেন বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অষ্টম মণ্ডল-সহ দলের কার্যকর্তারা। তার পরে সাংবাদিক সম্মেলনে উপাচার্যের বিরুদ্ধে সরব হন অনির্বাণ। তিনি বলেন, ‘‘এই বিশ্বভারতীর উপাচার্যের তালিকায় এক সময় চারুচন্দ্র দত্ত ছিলেন, বিশেষ মেন্টর হিসেবে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ছিলেন। তাঁরা-পড়ুয়া অধ্যাপকদের সঙ্গে কিভাবে আচরণ করতেন, নানা বিষয়ে জট কাটাতে কিভাবে উদ্যোগী হতেন সেই উদাহরণ যদি আমরা দেখি তাহলে বোঝা যায় এখন মানসিক অবনতি হয়েছে।’’
উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের সুরেই তিনি বলেন, ‘‘যেভাবে পড়ুয়াদের সঙ্গে ব্যবহার করা উচিত তা একেবারেই হচ্ছে না। এখানে যে জটগুলি রয়েছে, সেগুলি কাটানোর যে পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে তা একেবারেই সঠিক নয়। এই ধরনের আচরণ একজন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের হতে পারে না।’’
পৌষমেলা বন্ধ করারও সমালোচনা করেন অনির্বাণ। তাঁর কথায়, ‘‘ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলাকে যেভাবে উনি (উপাচার্য) নিজের জেদ ও অহঙ্কারের জন্য বন্ধ করে দিলেন সেটা খুবই দুঃখের বিষয়। সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ও এক সময় বলেছিল পরিবেশবান্ধব মেলা করার জন্য তারা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। কিন্তু এখানকার যিনি উপাচার্য তিনি মেলা করার আবেদন না করলে মন্ত্রণালয় কিভাবে সহযোগিতা করবে?’’ অনির্বাণের তোপ, ‘‘বিশ্বভারতী মেলা কেন করল না সে বিষয়ে উনি কোনও সঠিক বক্তব্য এখনও দিতে পারেননি। উনি নিজেকে নিজে জিজ্ঞাসা করুন উনি রবীন্দ্রনাথের আদর্শের প্রতি কতটা নিষ্ঠা দেখিয়ে কাজ করেছেন গত তিন বছরে।’’ যদিও এ বিষয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
তবে নাম না করে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকেও কটাক্ষ করেন অনির্বাণ। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের একজন মন্ত্রী বলেছেন উপাচার্যকে যাঁরা নিয়োগ করেছিলেন তাঁরাও দাগি আসামী ছিলেন। এই ধরনের ভাষা তাঁর মুখে মানায় না। কারণ তাঁদের দলের নেতারা অবৈধ টাকার স্তূপের উপর বসে রয়েছেন।” অনুব্রত প্রসঙ্গেও আক্রমণ করে অনির্বাণ বলেন, ‘‘তাঁদের দলের নেতারাই বলছেন দিল্লিতে যাতে উনি যেতে না পারেন তার জন্য ব্যবস্থা করেছি। আসলে দিল্লি গেলে অনেক রাঘব বোয়ালদের নাম বেরোবে, তাই তাঁরা যেতে দিতে চাইছেন না।’’
তৃণমূল অবশ্য অনির্বাণকে আমল দিতে নারাজ। তারা বলছে, যে প্রার্থী বিধানসভা ভোটের ফল বেরোনো শেষ হওয়ার আগেই তল্পিতল্পা গুটিয়ে বোলপুর ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তাঁর কথার কোনও গুরুত্ব নেই। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ফিরহাদ হাকিম উপাচার্য সম্পর্কে সঠিক মন্তব্য করেছেন। ওনাকে যারা নিয়োগ করেছে তারাও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত। কাজেই বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য না করাই শ্রেয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy