Advertisement
E-Paper

বোমা নিষ্ক্রিয় করল জেলারই বম্ব স্কোয়াড

এ বার বোমা নিষ্ক্রিয় করলেন জেলায় থাকা সিআইডি বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের স্থায়ী ইউনিটের সদস্যেরাই। লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়েছে রবিবার

দয়াল সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৯ ০৪:০৭
অভিযান: ফাঁকা জমিতে বোমা নিষ্ক্রিয় করার কাজ চলছে।

অভিযান: ফাঁকা জমিতে বোমা নিষ্ক্রিয় করার কাজ চলছে।

এ বার বোমা নিষ্ক্রিয় করলেন জেলায় থাকা সিআইডি বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের স্থায়ী ইউনিটের সদস্যেরাই। লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়েছে রবিবার। মঙ্গলবার খয়রাশোলের লোকপুর থানা এলাকার নওপাড়া গ্রামের ডাঙাপাড়ায় মাঠ থেকে প্লাস্টিকের প্যাকেটে ভর্তি ২৫টি তাজা বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ জানান, বুধবার সেগুলিই নিষ্ক্রিয় করেছে বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড।

জেলা পুলিশ জানাচ্ছে, তাজা বোমা উদ্ধার হলেই বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেওয়া হত। কলকাতা থেকে নির্দেশ পেয়ে দুর্গাপুর থেকে সিআইডি-র বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড জেলায় এসে সেগুলি নিষ্ক্রিয় করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হত। সেই সময়টুকু বোমা পাহারা দিয়ে থাকা বা কোথাও সরিয়ে রেখে অপেক্ষা করা, দুটোই ঝুঁকি ছিল। সেই সমস্যা এড়াতেই জেলায় স্থায়ী বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড রাখার ভাবনা শুরু হয় কয়েক মাস আগে। লোকসভা নির্বাচনের সময়ে এই পদক্ষেপ জরুরি ছিল বলে মানছে পুলিশ মহলও। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বোলপুর) তন্ময় সরকার বলছেন, ‘‘বোমা উদ্ধারের খবর পাওয়া মাত্রই বোমা নিষ্ক্রিয় করতে ঘটনাস্থলে যাবে দলটি। এতে অনেক দ্রুত উদ্ধার হওয়া বোমা নিষ্ক্রিয় করা যাবে। কমবে ঝুঁকির আশঙ্কা।’’

বীরভূমের নানা প্রান্তে মজুত রাখা বোমার বিস্ফোরণ ও প্রাণহানির একাধিক ঘটনা ঘটেছে ধারাবাহিক ভাবেই। তাজা বোমা উদ্ধারের ঘটনা তো লেগেই আছে। নানুর, লাভপুর, সাঁইথিয়া, ইলামবাজার বা খয়রাশোল এলাকায় কী বাম জমানা, কী তৃণমূলের সময়— বোমা তৈরির ‘আঁতুড়ঘর’ তকমা সেঁটে থাকেছে জেলায় গায়ে। গত বছর সেপ্টেম্বরে প্রচণ্ড বিস্ফোরণে খয়রাশোলের কাঁকরতলা থানা এলাকার তৃণমূলের এক অঞ্চল কার্যালয় প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। বোমা বাঁধার সময় বিস্ফোরণে শেখ কৌসর নামে এক যুবকের মৃত্যু হয় ইলামবাজারের পাইকুনি গ্রামে।

খয়রাশোলেরই কাঁকরতলা থানা এলাকার একটি খামার বাড়িতে এবং সদাইপুর থানার সাহাপুরের কৃষিজমি থেকে উদ্ধার হয় দুই জেরিক্যান ভর্তি প্রায় শ’খানেক তাজা বোমা। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে লাভপুরের ঘটনা অনেকের মনে এখনও টাটকা। সেই সময় ময়ূরাক্ষী নদীতে বালির ঘাটের দখল ঘিরে লাভপুর থানার মীরবাঁধ এবং দরবারপুরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। পুলিশের দাবি, ওই দিন সকালে পাশাপাশি দুই গ্রামের সমাজবিরোধীদের মধ্যে প্রথমে বোমাবাজি হয়। তার পরে দুপুরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে দরবারপুর। মৃত্যু হয় ৯ বাসিন্দার।

জেলা পুলিশের তথ্যই বলছে, গত এক বছরে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অন্তত ৫০০টি তাজা বোমা উদ্ধার হয়েছে। সেগুলিকে নিষ্ক্রিয় করতে প্রতিবার দুর্গাপুর থেকে ছুটে আসতে হয়েছে বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডকে। এমন ‘রেকর্ড’ রয়েছে যে জেলায়, লোকসভা নির্বাচনের আগে সেখানে স্থায়ী স্কোয়াড রাখার ভাবনাও সেই কারণে।

ভোটের আগে জেলা পুলিশের এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও, এমন পরিস্থিতির জন্য ঘুরিয়ে শাসক দলকেই দায়ী করেছে বিরোধীরা। সিপিএম, বিজেপির দাবি— বিরোধীরা যাতে কোনও ভাবেই শাসক দলের বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ায় সে জন্য এত সংখ্যক বোমা তৈরি করছে শাসক দলের লোকেরা। বোমা তৈরি হয়েছে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণেও। বিরোধীদের আশঙ্কা, বম্ব স্কোয়াডের স্থায়ী ইউনিট গড়লেও, কোন বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করা হবে, সেই চাবিকাঠি থাকবে শাসকদলের হাতেই। তৃণমূল অবশ্য এ সব অভিযোগ মানেনি।

Bomb Siuri CID Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy