Advertisement
E-Paper

ফের খয়রাশোল উত্তপ্ত বোমাবাজিতে, জখম দুই

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে সংঘাত বাধে নিহত নেতা দীপক ঘোষ অনুগামীদের সঙ্গে বিরোধী শিবিরের নেতা উজ্জ্বল হক কাদেরীর অনুগামীদের। যিনি দিন কয়েক আগে দীপক ঘোষ হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৫৯
চিহ্ন: বাড়ির দরজায় বিস্ফোরণের দাগ। বড়রায়। নিজস্ব চিত্র।

চিহ্ন: বাড়ির দরজায় বিস্ফোরণের দাগ। বড়রায়। নিজস্ব চিত্র।

বোমাবাজিতে ফের তেতে উঠল খয়রাশোলের কাঁকরতলা থানা এলাকার বড়রা গ্রাম। শাসকদলের দুটি গোষ্ঠীর গোলমালেই এই ঘটনা বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। ঘটনায় দু’জন জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বুধবার রাতের ঘটনা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। পরে পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযুক্তদের কেউ ধরা পড়েনি বলেই খবর।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে সংঘাত বাধে নিহত নেতা দীপক ঘোষ অনুগামীদের সঙ্গে বিরোধী শিবিরের নেতা উজ্জ্বল হক কাদেরীর অনুগামীদের। যিনি দিন কয়েক আগে দীপক ঘোষ হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন। অভিযোগ, নিহত ব্লক সভাপতির দুই অনুগামীকে বেধড়ক মারধর করেছে উজ্জ্বলের লোকজন। শেখ আনসার নামে এক তৃণমূল কর্মীকে মেরে হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি। শেখ সাজন নামে আর এক কর্মীকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করা হয়েছে।

কেন ঝামেলা?

স্থানীয় বাসিন্দা ও তৃণমূলের একটি সূত্র বলছে, বড়রা গ্রাম বেআইনি কয়লা কারবারের করিডর। এলাকায় রাজনৈতিক ভাবে যে ক্ষমতায় থাকে, কয়লার নিয়ন্ত্রণের রাশ থাকে তাদের হাতে। এখানে শাসকদলের দুটি গোষ্ঠী হওয়ায় কার হাতে রাশ থাকবে, সে প্রশ্নে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের আগে থেকে সেই লড়াই শুরু হয়েছে। সেই সময় পাল্লা ভারী ছিল দীপকের অনুগামী শেখ আজফার ওরফে কালোর। কিন্তু উজ্জ্বল হক কাদেরীকে ব্লক কার্যকরি সভাপতি করে দেওয়ার পরে উজ্জ্বলের দিকে ঝুঁকতে থাকেন কেউ কেউ।

পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের আগে দলীয় কার্যালয়ে বিস্ফোরণ ও পুলিশের উপরে হামলায় অভিযুক্ত হয়ে শেখ আজফার ‘ফেরার’ হতেই রাশ আসে উজ্জ্বল হকের দিকে। ইতিমধ্যে নিহত হন দীপক ঘোষ। এর পরে সাময়িক অচলাবস্থা তৈরি হলেও বড়রা এলাকায় পাল্লা ভারী ছিল উজ্জ্বলদেরই। কিছু দিন আগে গ্রেফতার হয়েছেন উজ্জ্বলও। কারও মতে, এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেদের হারানো জমি ফিরে পেতে চাইছে কালোর লোকজন। তৃণমূলের একটি সূত্রের মতে, সংঘাত ঘটছে সেই কারণেই।

অভিযোগ, উজ্জ্বল ঘনিষ্ঠ শেখ বিট্টু, শেখ স্বপন, আকবর, শেখ সাবিররা রাতের বেলায় বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করে বিপক্ষ শিবিরে থাকা শেখ মান্নানের ভাই শেখ সাজনকে এবং বাড়িতে ঢুকে আনসারের হাত-পা ভেঙে দেয়। দুটি পরিবারেরই দাবি, ঘটনার পিছনে মূল ইন্ধন রয়েছে শেখ জয়নালের। যিনি উজ্জ্বল ঘনিষ্ট নন। তৃণমূলের যে ব্লক কমিটি খয়রাশোল নিয়ন্ত্রণ করে সেই ১১ সদস্যের কমিটির সদস্য ফজিলা বিবির স্বামী জয়নাল।

ঘটনার দায় এড়িয়েছেন জয়নাল। উল্টে পুলিশের বিরুদ্ধেই স্ত্রী ফজিলা বিবি ও তাঁর ভাইয়ের স্ত্রীকে মারধর ও বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ তুলছেন জয়নাল। তাঁর দাবি, ‘‘রাতের বেলায় একটা ঘটনা ঘটেছে। তবে যে বা যারা এমন কাণ্ড করেছে, তাদের উপর আমার কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে হ্যাঁ, উজ্জ্বল হক কাদেরী আমার বন্ধু।’’ কাঁকরতলা ও লোকপুর পুলিশ অভিযান চালানো কথা স্বীকার করলেও কারও বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ মানেনি পুলিশ। পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘ঠিক কী হয়েছে দেখা হচ্ছে। আমরা অভিযুক্তদের খুঁজছি।’’

Violence Bombing Injury
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy