Advertisement
০৩ মে ২০২৪
manbazar

সহকারী নিয়োগে  স্বজনপোষণ মন্ত্রীর! শোরগোল

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নিয়ম অনু‌যায়ী কোনও মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী ফি বছর তিন জন করে ‘অ্যাটেন্ডেন্ট’ বা সহকারী নিয়োগ করতে পারেন।

পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু!

পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু! — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানবাজার শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৪২
Share: Save:

‘অ্যাটেন্ডেন্ট’ পদে নিয়োগের জন্য নিজের ছেলে, ভাই, জা-সহ পরিবারের একাধিক সদস্যকে না কি সুপারিশ করেছেন মানবাজারের বিধায়ক তথা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু! এমন দাবি ঘিরেই শুরু হয়েছে জোর চর্চা। বিরোধী দলের তরফে তো বটেই, তৃণমূলের একাংশও এ নিয়ে সরব হয়েছে সমাজ মাধ্যমে। বিষয়টি বেআইনি না হলেও এর সঙ্গে নৈতিকতার প্রশ্ন জড়িয়ে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।

প্রতিক্রিয়া চেয়ে এ দিন সন্ধ্যারানিকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তাঁর স্বামী তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ গুরুপদ টুডুর ব্যাখ্যা, “মন্ত্রী নিজের এক্তিয়ার বলে নিয়োগ দিয়েছেন। এতে অনিয়মের কিছু হয়নি। মন্ত্রীর ছেলে বা পরিবারের কি চাকরির দরকার নেই!” গুরুপদের আরও দাবি, সন্ধ্যারানি একা নন, মন্ত্রিসভার সদস্যদের আরও কেউ কেউ তাঁদের পরিজনদের এ ভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। তাই শুধু তাঁর দিকে আঙুল তোলা অর্থহীন।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নিয়ম অনু‌যায়ী কোনও মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী ফি বছর তিন জন করে ‘অ্যাটেন্ডেন্ট’ বা সহকারী নিয়োগ করতে পারেন। শুরুতে এক বছর মন্ত্রীর ফাইফরমাস খাটার পরে তাঁরা সরাসরি রাজ্য সরকারের গ্রুপ-ডি পদে স্থায়ী চাকরি পান। অর্থাৎ, কোনও পরীক্ষা বা মূল্যায়ন ছাড়া কার্যত সুপারিশের ভিত্তিতে স্থায়ী সরকারি চাকরি মেলে।

সূত্রের খবর, ২০১৬-য় সন্ধ্যারানি প্রথম মন্ত্রিত্ব পাওয়ার পরে, এ পর্যন্ত তাঁর বেশ কয়েক জন পরিজন ও ঘনিষ্ঠের ‘অ্যাটেন্ডেন্ট’ পদে নিয়োগ হয়েছে। এ সব ক্ষেত্রে মন্ত্রী নিশ্চয় তাঁর পরিবারের সদস্যদের দিয়ে ফাইফরমাস খাটাননি, উড়ে আসছে এমন কটাক্ষও।

ঘটনা হল, পূর্বতন সরকারের আমলে বছরে দু’জন করে ‘অ্যাটেন্ডেন্ট’ মিলত। ২০১৪-য় সেই নিয়ম পরিবর্তন হয়। সেই প্রসঙ্গ টেনে সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক প্রদীপ রায়ের দাবি, “অম্বরীশ মুখোপাধ্যায়, বিলাসিবালা সহিস বা রবীন্দ্রনাথ হেমব্রমেরা তো বাম আমলে জেলা থেকে মন্ত্রী ছিলেন। কই তাঁদের বিরুদ্ধে তো এ ভাবে স্বজনপোষণের অভিযোগ ওঠেনি। এটা আসলে স্বজনপোষণ নয়, পরিবার পোষণ।”

বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গার টিপ্পনী, “মন্ত্রীর নিজের দলেরই তো অনেক শিক্ষিত ছেলেমেয়ে বেকার রয়েছেন। তাঁদের বঞ্চিত করে উনি নিজের পরিবারের সদস্যদের নিয়োগ দিয়েছেন। এতেই বোঝা যায়, উনি এলাকার কী উন্নয়ন করবেন!

জেলার কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর ব্যাখ্যা, “মন্ত্রী তাঁর পছন্দের মানুষকে ‘অ্যাটেন্ডেন্ট’ হিসাবে রাখতে পারেন। এতে অনিয়ম না হলেও নৈতিকতা কতটা বজায় রইল, সে প্রশ্ন উঠবেই।” দলীয় ভাবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

manbazar Sandhyarani Tudu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE