E-Paper

টিফিনের টাকা জমিয়ে স্কুলে খাওয়ার আয়োজন চার ছাত্রীর

গরমের কারণে কিছু দিন আগে পর্যন্ত সকালে স্কুল হচ্ছিল। সেই সময় বাড়ি থেকে টিফিনের টাকা দিলেও সেই টাকা খরচ না হওয়ায় ছাত্রীরা নিজেদের কাছেই জমিয়ে রেখেছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৪ ০৮:৩০
সিউড়ির কড়িধ্যা যদুরায় হাই স্কুলে মিড-ডে মিলে ‘তিথি ভোজন’।

সিউড়ির কড়িধ্যা যদুরায় হাই স্কুলে মিড-ডে মিলে ‘তিথি ভোজন’। নিজস্ব চিত্র।

জন্মদিনে কেক কেটে কিংবা পরিবারের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় গিয়ে আনন্দ না করে , তার বদলে গোটা স্কুলের জন্য খাওয়ার আয়োজন করল অষ্টম শ্রেণির চার ছাত্রী। নিজেদের টিফিনের টাকা জমিয়ে মিড-ডে মিলে ‘তিথি ভোজন’-এর আয়োজন করল কড়িধ্যা যদুরায় হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এই চার ছাত্রী। সঙ্গে ছিলেন স্কুলের এক শিক্ষকও। ছাত্রীদের এই উদ্যোগে আপ্লুত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে পড়ুয়া সকলেই।

মিড-ডে মিলে ‘তিথি ভোজন’-এর আয়োজন যদুরায় স্কুলে নতুন কিছু নয়। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পারিবারিক কোনও অনুষ্ঠান থাকলেই তাঁরা এই আয়োজন করে থাকেন৷ গোটা স্কুলকে এক পরিবারের চোখে দেখা শিখিয়েছেন তাঁরাই। এ বার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দেখানো সে পথেই হাঁটল ঈশিকা ধীবর, পাপিয়া দাস, মধুমিতা অঙ্কুর এবং মুন্নি অঙ্কুর নামে চার ছাত্রী।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, জুনের আলাদা আলাদা দিনে ওই চার ছাত্রীর জন্মদিন ছিল। একই মাসে জন্মদিন হওয়ায় তারা চারজনে মিলে এই পরিকল্পনা করে। চার ছাত্রীরই আর্থিক পরিস্থিতি খুব একটা ভাল নয়৷ তার পরেও টিফিনের টাকা জমিয়ে তাদের এই ভাবনাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন শিক্ষকেরা। ছাত্রীদের উদ্যোগে কিছুটা আর্থিক সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন স্কুলের শিক্ষক বিজয়চাঁদ ভারতীও।

জানা গিয়েছে, গরমের কারণে কিছু দিন আগে পর্যন্ত সকালে স্কুল হচ্ছিল। সেই সময় বাড়ি থেকে টিফিনের টাকা দিলেও সেই টাকা খরচ না হওয়ায় ছাত্রীরা নিজেদের কাছেই জমিয়ে রেখেছিল। ৫ টাকা, ১০ টাকা করে জমিয়ে বেশ কিছুটা টাকা এক সঙ্গে তুলে দেয় স্কুলের শিক্ষকদের হাতে। তারা জানায়, এই টাকা দিয়েই গোটা স্কুলকে তারা ‘ট্রিট’ দিতে চায়। সে মতোই এ দিন যদুরায় স্কুলের মিড-ডে মিলে রান্না হয় নানা পদ। এ দিন স্কুলের খাবারের মেনুতে ছিল ভাত, ডাল, মিক্সড ভেজ, ডিমের কারি ও রসগোল্লা।

ছাত্রীদের এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক যামিনীকান্ত সাহা বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের এই উদ্যোগে আমরা খুবই খুশি হয়েছি। ওই ছাত্রীরা আজ নিজেদের হাতে করে সকলকে খাবারও দিয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ওদের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল না। কিন্তু ওদের মন অনেক বড়৷ তাই একটু একটু করে টাকা জমিয়ে তারা এই অসাধারণ আয়োজন করেছে।’’

চার ছাত্রী জানায়, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিয়মিত এই ধরনের আয়োজন করেন। সেই উদ্যোগ থেকে প্রভাবিত হয়েই এই আয়োজনের ভাবনা। ভাই, বোন ও বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে আনন্দ করার জন্যই এই উদ্যোগ। আগামী দিনে বাকিরাও এই ধরনের আয়োজন করলে ভাল লাগবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Suri Mid Day Meal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy