Advertisement
E-Paper

টেট নিয়ে জাল চিঠি, অভিযোগ

টেটের কাউন্সেলিং-এ ডাক পেয়েছেন স্ত্রী। ই-মেল এবং এসএমএসে তা জেনেই প্রিন্ট আউট বের করে স্ত্রীকে নিয়ে শুক্রবার বাঁকুড়া শহরের বিদ্যাভবনে (জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিস) গিয়েছিলেন এক বিমা সংস্থার কর্মী।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৭ ০২:২৪

টেটের কাউন্সেলিং-এ ডাক পেয়েছেন স্ত্রী। ই-মেল এবং এসএমএসে তা জেনেই প্রিন্ট আউট বের করে স্ত্রীকে নিয়ে শুক্রবার বাঁকুড়া শহরের বিদ্যাভবনে (জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিস) গিয়েছিলেন এক বিমা সংস্থার কর্মী। দফতরে গিয়ে কর্মীদের হাতে সেই কাগজ দিতেই জানতে পারলেন, যে চিঠি তিনি নিয়ে এসেছেন, সেটি জাল! আদৌ প্রাথমিক শিক্ষা দফতর থেকে তাঁর স্ত্রীকে কাউন্সেলিংয়ের চিঠি পাঠানো হয়নি।

এ কথা জানার পর থেকেই ওই দম্পতির আক্ষেপ মিটছিল না। কাউন্সেলিংয়ে আসার ভুয়ো চিঠি কী ভাবে পেলেন ওই বধূ? বিদ্যাভবনের এক কর্মীর কথায়, “তার উত্তর ওঁরাই ভাল দিতে পারবেন। তবে এটাই প্রথম না। গত কয়েক দিন ধরেই বেশ কিছু মানুষ ভুয়ো চিঠি নিয়ে কাউন্সেলিংয়ে আসছেন।’’ দফতরের কর্মীরা জানাচ্ছেন, ওই বধূকে যে ই-মেল আইডি থেকে কাউন্সেলিংয়ে যাওয়ার চিঠি পাঠানো হয়েছে, সেটির সঙ্গে টেট কাউন্সিলের অফিশিয়াল ই-মেল আইডি-র অনেকটাই মিল। ভুয়ো ই-মেল আইডি-টি হল wbpryatet2014@gmail.com। আর টেট কাউন্সিলের ই-মেল আইডি wbprytet2014@gmail.com। এক ঝলকে ফারাক বোঝা কঠিন।
প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের অনুমান, এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে জড়িতরা আবেদনকারীদের কাছে নিজেদের দাবিকে বিশ্বাসযোগ্য করতেই গুগল মেলে টেট কাউন্সিলের ইউজার নেম ব্যবহার করছে। কিন্তু, যে হেতু একই ইউজার নেম দিয়ে দু’টি ইমেল আইডি খোলা যায় না, তাই সুক্ষ বদল এনে ভুয়ো আইডি-তে ইংরেজি ‘এ’ যোগ করে দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে পরীক্ষার্থীর নাম, রোল নম্বর, মোবাইল নম্বর সবই সঠিক দেওয়া থাকছে। দফতরের কর্মীদের ধারণা, যে-সব পরীক্ষার্থী টেট কাউন্সেলিংয়ের জাল চিঠি পাচ্ছেন, তাঁরা নিশ্চয় ওই প্রতারণা চক্রের শিকার। টাকার বিনিময়ে প্রাথমিকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে ওই চক্রটি কাজ করছে।
এই অনুমান যে একেবারে মিথ্যে নয়, তা জানা গেল এ দিন বিদ্যাভবনে আসা প্রতারিত বধূর স্বামীর সঙ্গে কথা বলেই। প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে গোটা ঘটনাটি খুলে বলেন। পেশায় বিমা সংস্থার ওই কর্মীর দাবি, “দিন দশেক আগে ইঁদপুরের এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল। তিনি পাঁচ লক্ষ টাকার বিনিময়ে স্ত্রীকে টেটে চাকরি পাইয়ে দেবেন বলেছিলেন। প্রাথমিক ভাবে তাঁকে নগদ ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি।’’ তিনি জানান, ওই ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর নাম, রোল নম্বর ও প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে গিয়েছেন। টাকা দিয়েছেন বলে কোনও প্রমাণ রয়েছে? ওই বিমা কর্মী বলেন, “ওই ব্যক্তি একটি কাগজে লিখে দিয়েছেন, তিনি ‘ধার’ হিসেবে আমার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়েছেন।’’
ঠকে গিয়েছেন বুঝতে পেরেই স্ত্রীকে নিয়ে বিদ্যাভবন থেকে চলে যান ওই বিমা সংস্থার কর্মী। বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানালে নিজেও সমস্যায় পড়তে পারেন ভেবে পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ারও সাহসও পাচ্ছেন না ওই যুবক। বাঁকুড়ার স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) নির্মাল্য কুমার দে বলেন, “গত কয়েক দিনে বেশ কিছু পরীক্ষার্থী এই ধরনের ভুয়ো ই-মেল পেয়ে কাউন্সেলিংয়ে এসেছিলেন। তবে আমরা সব যাচাই করে দেখে ওঁদের বাদ দিয়ে দিচ্ছি।’’ একটি বড়সড় চক্র এই ঘটনায় জড়িত বলেই মনে করছেন স্কুল শিক্ষা দফতরের কর্মীরা। যদিও পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ না হওয়ায় পুরো বিষয়টিই ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “এ বিষয়ে অভিযোগ পেলেই আমরা ব্যবস্থা নেব।’’

Fake Letter TET Primary Teachers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy