Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

বাড়ি নিয়ে বচসা সাঁইথিয়ায়

একটি পুরনো বাড়ির দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকালে উত্তেজনা ছড়াল সাঁইথিয়ার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাংশের অভিযোগ, পড়শি অজিত পারেখ জোর করে ওই বাড়িটির দখল নিতে চাইছেন। তার থেকেই বিবাদের সূত্রপাত। অভিযুক্ত অজিতবাবুর যদিও দাবি, মালিকের থেকে তিনি বৈধ ভাবে ওই বাড়িটি লিজ নিয়েছেন।

এই সেই বাড়ি। শুক্রবার সকালে সাঁইথিয়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

এই সেই বাড়ি। শুক্রবার সকালে সাঁইথিয়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩৪
Share: Save:

একটি পুরনো বাড়ির দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকালে উত্তেজনা ছড়াল সাঁইথিয়ার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের কাংশের অভিযোগ, পড়শি অজিত পারেখ জোর করে ওই বাড়িটির দখল নিতে চাইছেন। তার থেকেই বিবাদের সূত্রপাত। অভিযুক্ত অজিতবাবুর যদিও দাবি, মালিকের থেকে তিনি বৈধ ভাবে ওই বাড়িটি লিজ নিয়েছেন। পুরসভার থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে সেই বাড়ি সংস্কারের জন্যই তাঁর লোকজন এ দিন সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু, কিছু বাসিন্দা তাতে জোর করে বাধা দেন। তার জেরে কাজ বন্ধ রাখতে তিনি বাধ্য হন। ওই ঘটনায় অজিতবাবুরই পাশে দাঁড়িয়েছেন সাঁইথিয়ার পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘লিজের বৈধ কাগজপত্র দেখার পরে পুরসভা নিয়ম মেনে ওই বাড়ি সংস্কারের প্ল্যান অনুমোদন করেছে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাঁইথিয়া দর্জিপাড়ার যে বাড়ি নিয়ে এ দিন সকাল থেকে গন্ডগোল, তাঁর মালিক ছিলেন তারাশঙ্কর মুখোপাধ্যায়। সেই বাড়ি ভাড়া নিয়ে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এক ব্যক্তির সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত গাঁজার দোকান চালাতেন। সেই কারণে সাঁইথিয়া মোহনবাগান মোড় থেকে রেলস্টেশন যেতে বাঁ হাতের প্রথম গলিপথ আজও ‘গাঁজাগলি’ নামেই পরিচিত। পাড়ার লোক জন দীর্ঘদিন থেকে পাড়ায় গাঁজা বিক্রি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি গাঁজা বিক্রেতা বাড়ি ছেড়ে চলে যান। তবে গাঁজা বিক্রির লাইসেন্স নম্বর দেওয়া সাইনবোর্ডটি এখনও রয়ে গিয়েছে। অজিতবাবুর দাবি, ‘‘তারাশঙ্করবাবুর মৃত্যুর পরে বছর চারেক আগে বাড়িটি ওঁর ছেলেদের থেকে ৯৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়েছি। বাড়িটি সংস্কার করতে চাই। পুরসভা সেই প্ল্যানের অনুমোদনও দিয়েছে। কিন্তু এ দিনের বাধায় কিছু করা যায়নি। অশান্তি এড়াতে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে।’’

অজিতবাবুর এমন দাবি করলেও সেই বক্তব্য মানতে নারাজ এলাকার উত্তেজিত জনতা। তাঁদের দাবি, এই ওয়ার্ডে কোনও প্রাইমারি স্কুল নেই। প্রয়াত তারাশঙ্করবাবুর বাড়িটি দেবত্তোর সম্পত্তি। দীর্ঘদিন আগে পাড়ার লোকজন বাড়িটিতে প্রাইমারি স্কুল করার প্রস্তাব দেন তারাশঙ্করবাবুকে। তিনি স্কুলের জন্য বাড়িটি দান করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন বলে ওই বাসিন্দাদের দাবি। পাড়ার বাসিন্দা অমর চট্টোপাধ্যায়, মানিক দাস, তাহির খানদের বক্তব্য, ‘‘পাড়ার সকলেই জানত ওই গাঁজা বিক্রেতা বাড়ি ছেড়ে দিলে সেখানে প্রাইমারি স্কুলের বন্দোবস্ত করা হবে। কিন্তু অজিতবাবু চুপিসাড়ে তারাশঙ্করবাবুর ছেলেদের থেকে ওই বাড়ি লিজ নিয়েছেন।’’ তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না বলে তাঁদের বক্তব্য। পাশাপাশি স্কুলের স্বার্থে পাড়ার লোকজন অজিতবাবুকে লিজের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছেন। এমন দাবি করলেও এ দিন প্রয়াত তারাশঙ্করবাবুর প্রতিশ্রুতির সাপেক্ষে কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেননি এলাকার উত্তেজিত বাসিন্দারা।

তবে, তারাশঙ্করবাবুর ছোট ছেলে মৃণাল মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘বাবা ৩২ বছর আগে মারা গিয়েছেন। তাঁর এমন কোনও প্রতিশ্রুতির কথা আমাদের জানা নেই। দেবোত্তর সম্পত্তির ওই বাড়িটি আমরা অজিতবাবুকে লিজ দিয়েছি। সেই বাড়িতে কী হবে, তা একান্ত অজিতবাবুর ব্যাপার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sainthia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE