হাসপাতালের জায়গা জবরদখলমুক্ত করার জন্য আগেই স্থানীয় জবরদখলকারীদের নোটিস দিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু জায়গা দখলমুক্ত করা দূরে থাক, এ বার জবরদখলকারীদের বাধায় আটকে গেল হাসপাতালের সীমানা পাঁচিল তৈরির কাজ। দ্রুত বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক তন্ময় ঘোষ।
বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এত দিন কোনও সীমানা পাঁচিল ছিল না। ফলে হাসপাতাল চত্বর কার্যত পরিণত হয়েছিল গবাদি পশুর অবাধ চারণভূমিতে। সন্ধ্যা হলেই হাসপাতাল চত্বর পরিণত হত সমাজবিরোধীদের আড্ডাস্থলে। হাসপাতালের নিজস্ব জায়গার একটা বড় অংশ দখল করে রীতিমতো ঘর বাড়িও বানিয়ে ফেলেছিলেন জবরদখলকারীরা। সম্প্রতি এই হাসপাতাল পাকা সীমানা পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফেলার উদ্যোগ নেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ হওয়ার পর কংক্রিটের সীমানা পাঁচিল তৈরির কাজ শুরু হয়। নোটিস দিয়ে দ্রুত হাসপাতালের জায়গা জবরদখলমুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। হাসপাতাল চত্বর জবরদখলমুক্ত হওয়া তো দূর, জবরদখলকারীদের আন্দোলনের জেরে শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য থমকে গেল সীমানা পাঁচিল নির্মাণের কাজ।
জবরদখলকারীদের দাবি, তাঁরা প্রায় ৭০ বছর ধরে ওই জায়গায় বসবাস করে আসছেন। পুনর্বাসন না দিলে জবরদখলমুক্তকারীরা নিজেদের অবস্থান থেকে সরতে নারাজ।
জবরদখলকারী রিয়া মাদ্রাজি বলেন, ‘‘আমরা এখানে ৭০ বছর ধরে বসবাস করে আসছি। এখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের সরে যেতে বলছে। আমরা এত তাড়াতাড়ি কোথায় যাব? পুনর্বাসন না দিলে আমরা কোথাও নড়ব না।’’ হাসপাতলের সুপার শুভঙ্কর কয়াল বলেন, ‘‘সীমানা পাঁচিল তৈরির কাজ ৮০ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। ১৫০ মিটারের কাজ এখনও বাকি রয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকটি দোকান ও ঘরবাড়ি রয়েছে। আমরা কোনও পরিবারকে উচ্ছেদ না করে তাদের দখলে থাকা জায়গা ছোট করে দিয়ে পাঁচিল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু জবরদখলকারীরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’
বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ বলেন, ‘‘এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কোনও ব্যক্তি বা পরিবারকে বিপদে ফেলে উন্নয়নের কাজ করার বিরোধী। আমরাও তেমনটা মনে করি। তাই সীমানা পাঁচিল নির্মাণের কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত প্রয়োজনীয় সমাধানসূত্র বার করা হবে।’’