Advertisement
E-Paper

মূর্তির কাছে ডিওয়াইএফের পতাকা

পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় মঙ্গলবার স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন সাড়ম্বরে পালিত হওয়ার মধ্যে রঘুনাথপুর নতুন বাসস্ট্যান্ডে বিবেকানন্দের মূর্তির কাছে ডিওয়াইএফের পতাকা বাঁধা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হল।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৬ ০০:৩৬

পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় মঙ্গলবার স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন সাড়ম্বরে পালিত হওয়ার মধ্যে রঘুনাথপুর নতুন বাসস্ট্যান্ডে বিবেকানন্দের মূর্তির কাছে ডিওয়াইএফের পতাকা বাঁধা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হল।

এ দিন সকালে রঘুনাথপুর নতুন বাসস্ট্যান্ডে বিবেকানন্দের মূর্তিতে ডিওয়াইএফের তরফে মাল্যদান করা হয়। পরে ওই মূর্তির রেলিংয়ে সংগঠনের কয়েকটি পতাকা বাঁধা হয়। তা নিয়ে শাসকদল তৃণমূল যেমন ক্ষোভ প্রকাশ করেছে, তেমনই এলাকার সংস্কৃতমনা বিভিন্ন মানুষজনও অসনন্তোষ গোপন করেননি।

তৃণমূলের রঘুনাথপুর শহর কমিটির যুগ্ম কাযর্করী সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় পরামাণিকের কথায়, ‘‘স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তিতে মালা দিতে গিয়ে ডিওয়াইএফ গোটা এলাকা দলীয় পতাকা দিয়ে মুড়ে দিয়েছে। এটা কী ধরনের সংস্কৃতি. হতে পারে? মূর্তিটি বামফ্রন্ট সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। তার মানে তো এই দাঁড়ায় না যে বিবেকানন্দের মূর্তির কাছে ডিওয়াইএফ পতাকা বাঁধার অধিকার পেয়ে গিয়েছে।’’ প্রয়াস নামে একটি সাংস্কৃতিক সংস্থার অন্যতম কর্মকর্তা কৌশিক সরকারেরও দাবি, খুবই দৃশ্যকটু লেগেছে ওই পতাকার ছড়াছড়ি। তাঁর দাবি, ‘‘আমরাও মূর্তিতে মালা দিতে গিয়ে ডিওয়াইএফের কর্মীদের পতাকাগুলি সরিয়ে দিতে বলেছিলাম। ওঁরা শুনতে চাননি। বচসাও হয়।’’ যদিও ডিওয়াইএফের জবাব, তাঁরা স্বামীজির প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ জানিয়েছেন সংগঠনের উদ্যোগে। তাই সেখানে দলীয় পতাকা লাগানো হয়েছিল। এতে বিতর্কের কী রয়েছে, তাঁরা বুঝতে পারছেন না।

তবে ওই বিতর্কটুকু বাদ দিয়ে এ দিন দুই জেলাতে যুব দিবস পালন খুবই বর্ণময় হয়েছে। জয়রামবাটিতে মা সারদার জন্মভূমিতে শ্রী শ্রী মাতৃ মন্দিরে স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৪ তম জন্মজয়ন্তী পালিত হয়। জাতীয় যুব দিবসের ভোরে পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে শুভ অনুষ্ঠানের সূচনা করেন স্বামী শিবপ্রদানন্দ মহারাজ। বাঁকুড়া শহরে কেন্দুয়াডিহি রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রমের উদ্যোগে সকালে শোভাযাত্রা বের হয়। ছাত্রছাত্রীরা যোগ দিয়েছিলেন। দিনভর নানা অনুষ্ঠান হয়। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ থেকে ক্লাব ও রাজনৈতিক দলের তরফে স্বামীজির মূর্তিতে মাল্যদান, আলোচনাসভা থেকে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয়।

এ দিন ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বরাবাজার সীমানায় লাকা প্রাথমিক স্কুলে স্বামীজির স্মরণে নানা অনুষ্ঠান হয়। সকালে স্বামীজির প্রতিকৃতি নিয়ে প্রায় ৩০০ পড়ুয়া গ্রাম প্রদক্ষিণ করেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শরৎচন্দ্র পরামানিক জানান, স্বামীজির ভাবনা ছড়িয়ে দিতে তাঁর জীবনী নিয়ে ক্যুইজ প্রতিযোগিতা করা হয়। গ্রামবাসীও অংশগ্রহণ করেছিলেন। এ ছাড়া ব্রতচারী নৃত্য, যোগাসন প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। এ দিন মানবাজারে বিবেক চেতনা উৎসব উপলক্ষ্যে শোভাযাত্রা সহকারে একটি র‍্যালি বের হয়েছিল। র‍্যালিতে বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা ছাড়াও মানবাজারের বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুডু, জয়েন্ট বিডিও শ্রীকুমার ভট্টাচার্য প্রমুখ হাঁটেন। পরে মানবাজার হাইস্কুলের মঞ্চে খুদে পড়ুয়াদের নিয়ে বসে আঁকো, স্বামীজির জীবনী সংক্রান্ত ক্যুইজ প্রতিযোগিতা হয়েছে।

পুরুলিয়া নবকিশলয় সঙ্ঘের উদ্যোগে সঙ্ঘ প্রাঙ্গণে বিবেকানন্দের চিকাগো বক্তৃতার অংশ বিশেষ পাঠ করেন খুদে সদস্যেরা। এ ছাড়াও ছিল আলোচনাসভা। সন্ধ্যায় ভানাস নামের একটি সংস্থা সন্ধ্যায় বিবেকানন্দের প্রতিকৃতি নিয়ে শহরে শোভাযাত্রা বের করে। পাড়া ব্লকের সুরুলিয়া বিবেকানন্দ শিশু বিদ্যালয়ের উদ্যোগেও আলোচনাসভা-সহ নানা অনুষ্ঠান ছিল। রঘুনাথপুর বিবেকানন্দ পাঠচক্র ও প্রয়াসের উদ্যোগে সকালে রঘুনাথপুর পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের ক্ষুদিরাম পার্ক থেকে নতুন বাসস্ট্যান্ডের বিবেকানন্দের মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত একটি পদযাত্রার আয়োজন করা হয়। বিবেকানন্দের মূর্তিতে মাল্যদান করেন পুনুড়া সাধন আশ্রমের স্বামী ভাস্করানন্দ। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাহিত্যসেবী রবিলোচন দত্ত।

কাশীপুরেও পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে বিবেকানন্দের আবক্ষ মূর্তিতে মালা দেওয়া হয়। তারপরে স্বামীজির মূর্তির পাদদেশ থেকে একটি শোভাযাত্রা নবনির্মিত বিবেকানন্দ রিক্রিয়েশন সেন্টারে গিয়ে শেষ হয়। পরে এই হলে আলোচনাসভা-সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

state news swami vivekananda dyfi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy