Advertisement
E-Paper

করোনা আক্রান্তকে ঘিরে পোস্ট

করোনায় আক্রন্ত ব্যক্তিদের নিয়ে সমাজ-মাধ্যমে ভুয়ো নানা পোস্ট দেখা যাচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২১ ০৬:৪৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

করোনা আক্রান্তের বাড়ির জরুরি পরিষেবা গ্রামবাসীর একাংশ বন্ধ করে দিয়েছেন বলে সমাজ-মাধ্যমে ছড়ানো অভিযোগকে ঘিরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে বাঁকুড়ার মেজিয়ায়। বুধবার করোনা আক্রান্ত ওই ব্যক্তি গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ না তুললেও দাবি করেন, বিক্রেতারা তাঁদের জিনিসপত্র দিতে চাইছেন না। গ্রামবাসীও দাবি করেছেন, ফেসবুকে যা লেখা হয়েছে, তা একেবারেই ভিত্তিহীন। রবিবার ফেসবুকে ওই পোস্ট করার পরেই তদন্তে নেমেছে মেজিয়া থানার পুলিশ। যিনি ওই অভিযোগ তুলেছিলেন, তিনিও ফের ফেসবুকে পোস্ট করে দাবি করেছেন ‘সমস্যা মিটে গিয়েছে’।

পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। করোনায় আক্রন্ত ব্যক্তিদের নিয়ে সমাজ-মাধ্যমে ভুয়ো নানা পোস্ট দেখা যাচ্ছে। এ ধরনের পোস্ট যাঁরা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠছে বিভিন্ন মহলে। বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) বিবেক বর্মা বলেন, “করোনা বা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক যে সব মন্তব্য সমাজ-মাধ্যমে করা হচ্ছে, তার উপরে আমাদের কড়া নজর রয়েছে। ভুয়ো অভিযোগ বা গুজব ছড়ানোর কোনও পোস্ট হলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।”

মেজিয়া থানা এলাকার ওই ব্যক্তির ৩০ এপ্রিল করোনা রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। রবিবার বাঁকুড়া সদর থানা এলাকার এক ব্যক্তি মেজিয়ার ওই আক্রান্তের সপরিবারের ছবি ফেসবুকে দিয়ে অভিযোগ তোলেন, করোনা মুক্ত হয়ে গেলেও ওই ব্যক্তির বাড়িতে দুধ, জল দিতে যাওয়া বারণ করে দিয়েছেন গ্রামবাসীর একাংশ। এমনকি, গ্রামে ওই ব্যক্তির স্ত্রীকে আনাজ ও মাছ কিনতেও দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে ফোন করা হলে আক্রান্ত ব্যক্তি দাবি করেন, “দিন তিনেক আগে আমার স্ত্রী মাছ কিনতে গিয়েছিল গ্রামে। তবে আমার করোনা হওয়ায় তাঁকে মাছ দেওয়া হয়নি। দুধ ও জল কিনে খাই। সেগুলিও বাড়িতে দিতে আসছে না। তবে এ ক্ষেত্রে গ্রামবাসী আপত্তি করেছেন বলে শুনিনি। আমার মেয়ে গ্রামের কল থেকেই জল নিয়ে আসছে। কারও কোনও আপত্তি নেই। কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের লোক বাড়িতে খাবারের জিনিসপত্র দিয়ে গিয়েছেন। তাই এখন মুদির দোকানে যাওয়ার দরকার পড়ছে না। তবে গ্রামের লোকেরা কেউ আমার বাড়িতে আসছেন না।”

করোনায় আক্রান্তদের ক্ষেত্রে কী ধরনের বিধিনিষেধ স্বাস্থ্য দফতরের তরফে রয়েছে? মেজিয়ার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক দীপ্যমান চট্টোপাধ্যায় জানান, স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাঁর সংস্পর্শে আসা লোকজনকে ১৭ দিন কোয়রান্টিন থাকতে হয়। এর মধ্যে আক্রান্ত বা তাঁর সংস্পর্শে আসা লোকজন অন্য মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকে যায়। ওই সময়ে বাইরের কারও আক্রান্তের বাড়িতে যাওয়া স্বাস্থ্য-বিধির নিয়ম বিরুদ্ধ। তিনি বলেন, “করোনা আক্রান্ত মেজিয়ার ওই ব্যক্তির সঙ্গে ফোনে আমার যোগাযোগ রয়েছে। তাঁকে ও পরিবারের লোকজনকে আপাতত বাইরে বেরোতে নিষেধ করেছি। কিছু দিন আগে তাঁকে ওষুধও দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল থেকে।”

গ্রামবাসীর তরফে দাবি করা হয়েছে, করোনা হয়েছে বলে তাঁর বাড়িতে দুধ বা জল দিতে গ্রামের কেউ নিষেধ করেননি। করোনা আক্রান্তের বাড়িতে যাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত নয় বলেই তাঁরা আপাতত সেখানে যাচ্ছেন না। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যও দাবি করেন, “করোনা আক্রান্ত ওই ব্যক্তি নিজে আমাকে মাঝেমাঝেই ফোন করেন। কিন্তু আক্রান্ত হওয়ার পরে উনি গ্রামে কোনও সমস্যায় পড়ছেন এমন কথা জানাননি।’’

মেজিয়া থানার পুলিশেরও দাবি, তদন্তে দেখা গিয়েছে, করোনা সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা জল, দুধ দেওয়া বন্ধ করেছেন। ফেসবুকে পোস্ট করা ওই ব্যক্তি দাবি করেন, “আমি ওই পরিবারটিকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি। আমার কাছে তাঁরাই নানা সমস্যার অভিযোগ করেছিলেন বলেই প্রতিকার চেয়ে ফেসবুকে আবেদন করেছিলাম। সমস্যা মিটে যাওয়ায় পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছি।”

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy