প্রতীকী ছবি
খুনের ঘটনার পর থেকেই দুই পাড়ায় বিবাদ তুঙ্গে। এক পাড়া কার্যত পুরুষশূন্য। অথচ লকডাউনের সময় বাড়িতে চাল-ডালের টানাটানি। সেই চাল জোগাড়ে ঘোষপাড়ার রেশন দোকানে গিয়ে তাঁদের মারধর খেতে হয়েছে বলে অভিযোগ রামপুরহাট থানার রদিপুর গ্রামের লেটপাড়ার মহিলাদের।
গত ১৫ মার্চ রাতে লেটপাড়ার একটি ক্লাবের বারান্দা থেকে উদ্ধার হয় ঘোষপাড়ার দুধ ব্যবসায়ী ও তৃণমূলকর্মী মধুসূধন ঘোষের মৃতদেহ। ওই ঘটনায় লেটপাড়ার কিছু সিপিএম কর্মীর দিকে অভিযোগের আঙুল ওঠে। পাল্টা হিসেবে লেটপাড়ায় বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ঘোষপাড়ার তৃণমূ কর্মীদের বিরুদ্ধে। খুনের ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তেরা পলাতক। তবে, গ্রামে এখনও উত্তেজনা রয়েছে।
এ দিকে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশজুড়ে লকডাউন চলায় পুরুষহীন লেটপাড়ার পরিবারগুলি পড়েছে চরম বিপাকে। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, বুধবার সরকার থেকে বিনামূল্যে রেশন দেবে জেনে ঘোষপাড়ার রেশন ডিলারের দোকানে সকাল ৮টা থেকে লাইন দিয়েছিলেন লেটপাড়ার জনা কুড়ি মহিলা। সঙ্গে ছোট ছেলেমেয়েরাও ছিল। অভিযোগ, বাঁশের ছোট লাঠি হাতে তেড়ে এসে লেটপাড়ার ওই মহিলাদের মারধর শুরু করেন ঘোষপাড়ার কয়েক জন মহিলা। আচমকা হামলায় লেটপাড়ার মহিলারা ছেলেমেয়েদের নিয়ে রেশন দোকান থেকে পালিয়ে যান। লাঠির আঘাতে চার-পাঁচ জন মহিলা জখম হন। মিনিট কুড়ি ঝামেলা হওয়ার পরে গ্রামে পুলিশ এসে লেটপাড়ার মহিলাদের রেশন সামগ্রী দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা করে। কিন্তু উত্তেজনা থাকার জন্য লেটপাড়ার অনেকেই বিনামূল্যে সরকারি পরিষেবা নিতে আর ঘোষপাড়ার দিকে পা বাড়াননি।
লেটপাড়ার আক্রান্ত মহিলারা বলেন, “পাড়ার অধিকাংশ পুরুষ এখনও বাড়ির বাইরে। বাড়িতে আয় করার মতো কেউ নেই। খাবারেও টান। সেজন্য সরকার থেকে ঘোষিত বিনামূল্যে চাল আনতে গিয়েছিলাম। আমাদের দেখতে পেয়ে ঘোষপাড়ার মহিলারা বাড়ির পুরুষদের একাংশের উস্কানিতে আমাদের মারধর করে রেশনম নিতে বাধা দেয়।“ এ দিনের ঘটনায় ওই মহিলারা আতঙ্কিত। তাঁরা বলছেন, “লকডাউনের জন্য গ্রামের বাইরে যেতে পারছি না। রেশনও আনতে পারছি না। এই পরিস্থিতিতে আমরা কী করে গ্রামে থাকব, সেটা নিয়ে চিন্তায় আছি।“
রেশন ডিলার যুগল ঘোষও মানছেন, ওই খুনের ঘটনার জেরেই লেটপাড়ার বাসিন্দাদের একাংশের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ঘোষপাড়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, “আমার রেশন দোকানের সামনে ঘটনা হওয়ার জন্য আমি দু’পক্ষকে থামিয়ে দিই।“
বিডিও (রামপুরহাট ১) দীপাণ্বিতা বর্মন বলেন, “পুলিশ এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানকে এই পরিস্থিতিতে গ্রামের সকল মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যাপারে নজরদারি দিতে বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy