প্রতীকী চিত্র।
কলকাতা পুরভোটকে সিপিএম ‘গণতন্ত্রের প্রহসন’ বলে আখ্যা দিলেও, নির্বাচনের ফলাফল বাম-শিবিরকে কিছুটা অক্সিজেন জুগিয়েছে বলে মনে করছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল। এই প্রেক্ষিতে আগামী পুরভোটে বাঁকুড়ার শহরাঞ্চলে বিরোধী পরিসরের দখল নিতে কৌশল ছকছে সিপিএম। দলের কয়েক জন নেতা ইঙ্গিত দিয়েছেন, ‘জনসংযোগ রয়েছে’, এমন তরুণ দলীয় কর্মীদের পুরভোটে প্রার্থী করা হতে পারে। এমনকি, তাঁদের ‘চিহ্নিত’ করার কাজও শুরু করেছেন বাম-নেতৃত্ব।
একই ইঙ্গিত মিলেছে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অজিত পতির কথাতেও। তিনি বলেন, “মাঠে নেমে কাজ করা কর্মীদেরই সব সময় বেশি সুযোগ দেওয়া হয়। এটাই দলের নীতি। এ বার পুরনির্বাচনেও তার অন্যথা হবে না। সর্বত্রই গ্রহণযোগ্য মানুষকে আমরা প্রার্থী করব।” চলতি মাসের শেষে সিপিএমের দু’দিনের জেলা সম্মেলন হবে। দলীয় সূত্রে খবর, সেখানেও অনেক তরুণ মুখকে জেলা কমিটিতে জায়গা করে দেওয়া হতে পারে। সেখানে পুর-নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হবে বলে খবর।
গত পুরনির্বাচনে বাঁকুড়া পুরসভায় প্রধান বিরোধী ছিল বামেরাই। ২৪টির মধ্যে ১২ ওয়ার্ডে জিতেছিল তৃণমূল। পাঁচটি পেয়েছিল বামেরা। বিজেপি এবং কংগ্রেস জিতেছিল যথাক্রমে দু’টি এবং একটি ওয়ার্ড। চারটি ওয়ার্ডে জেতা নির্দল প্রার্থীর সমর্থনে বোর্ড গড়েছিল তৃণমূল। তার পরে, ২০১৮ থেকে পরিস্থিতি বদলে যেতে শুরু করে। জেলায় বিরোধী পরিসরের দখল নেয় বিজেপি। গত বিধানসভা নির্বাচনে ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে বামেরা এখন শহরের সবক’টি ওয়ার্ডেই তৃতীয় স্থানে। তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ সেখানে বিজেপি।
কলকাতা পুরভোটের ফল বেরনোর পরে, সিপিএম নেতাদের একাংশ মনে করছেন, পুরভোটে উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচন করা গেলে, গেরুয়া-শিবিরের দিকে ঝোঁকা ভোটারদের বড় অংশকে বামেদের দিকে ফিরিয়ে আনা যাবে। দল সূত্রে খবর, জনসংযোগে জোর দিতে বলা হয়েছে কর্মীদের। সেখানেও সামনের সারিতে থাকছেন ‘উজ্জ্বল ভাবমূর্তির’ নতুন মুখ। মানুষ কী ধরনের প্রচারে বেশি সাড়া দিচ্ছেন, তা-ও পরখ করে নেওয়া হচ্ছে। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য অভয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “যাঁরা ভুল বুঝে বিজেপি-মুখী হয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলছি।”
কলকাতা পুরভোটের ফল যে বামেদের সামনে নতুন সুযোগ তৈরি করেছে, তা মানছেন তৃণমূল নেতৃত্বও। তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহমহাপাত্র মানছেন, “বিজেপির দিকে ঝুঁকে পড়া অনেক সিপিএম কর্মীই পুরনো দলে ফিরছেন। ফলে, সিপিএম আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে উঠলে আশ্চর্যের কিছু নেই।”
বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সদ্য প্রাক্তন সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র অবশ্য মনে করেন, “বিরোধী-ভোট ভাগ করতে কৌশল নিয়েছে তৃণমূল। তাতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হবেন না। মানুষ ভোট দিতে পারলে, পুরভোটে আমরাই জিতব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy