আলো নেই। রাস্তার একটা বড় অংশই চলাচলের অযোগ্য। আগাছায় ভরে গিয়েছে চারপাশ। সিউড়ি শহরের উপকণ্ঠে জেলাপরিষদের নিয়ন্ত্রণে থাকা একমাত্র শ্মশান সতীঘাটের এটাই ছিল ছবি।
সেই ছবিটা কিছুটা হলেও বদলাতে চলেছে। সৌজন্যে সিউড়ির যাত্রিক ক্লাব। দুর্গাপুজোর খরচ বাঁচিয়ে সেই টাকা দিয়েই আগাছা সাফাইয়ে হাত লাগিয়েছে ক্লাব। সম্প্রতি গত চার দিন ধরে ময়ূরাক্ষী নদীর উপর গড়ে ওঠা তিলপাড়া জলাধার ঘেঁষা শ্মশানে কাজ করছেন ২০-২৫ জন করে শ্রমিক।
ক্লাব সম্পাদক সঞ্জয় দাস, সদস্য ইন্দ্রনীল চৌধুরী, বুড়ো ভৌমিকরা বলছেন, ‘‘যেহেতু ক্লাব, তাই প্রায়ই এলাকার মানুষের ডাকে শ্মশানে ছুটতে হয়। শ্মশানে আলো নেই, ঠিকমতো রাস্তা নেই। তিনটি ঝিল (শবদাহের জন্য নির্ধারিত স্থান) ও অসংখ্য যে সমাধিক্ষেত্র রয়েছে, সেগুলি কার্যত আগাছায় ঢেকে গিয়েছিল। তাই এই উদ্যোগ।’’ সদস্যেরা জানাচ্ছেন, প্রতি বারই শ্মশানে গিয়ে তাঁদের মনে হতো মানুষকে শেষযাত্রায় যেখানে নিয়ে আসতেই হয়, সেখানকার এমন হাল থাকবে কে। তাই পরিকাঠামো বদলাতে না পারলেও শবদাহ করতে এসে মানুষ যেন দু’দণ্ড দাঁড়াতে পারেন, স্বস্তি বোধ করেন— তার জন্যই ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে এই কর্মকাণ্ড করছে ওই ক্লাব।
স্থানীয় সূত্রে র খবর, দিনে গড়ে চারটি শবদাহ হয় ওই শ্মশানে। অসুবিধার কথা জেলা পরিষদকে কেন বলা হল না? ক্লাব সদস্যেরা বলছেন, ‘‘অনেক দিন থেকে শুনছি পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ করবে জেলা পরিষদ। অনেক টাকাও বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু আমরা কাজে হাত লাগানো পর্যন্ত তেমন কিছু নজরে আসেনি। আমরা শুধু প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছি।’’
সতীঘাট শ্মশানের পরিকাঠামো যে বেহাল, তা মেনে নিয়েছেন জেলার সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘যে কেউ এমন কাজে এগিয়ে আসতে পারেন। তাঁদের স্বাগত। তবে, আমরা সত্যিই বড় পরিকল্পনা নিয়েছি। শ্মশানের উন্নতিতে ভারতসেবাশ্রম সঙ্ঘ ১০ লক্ষ টাকা দিচ্ছে। টাকা দেবে সিউড়ি ১ পঞ্চায়েত সমিতি ও পুরসভা। বোর্ড গঠিত হয়েছে। অ্যাকাউন্টও খোলা হয়েছে। টাকা এলেই কাজ শুরু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy