Advertisement
E-Paper

বাসের দেখা নেই, টোটো-ভ্যানে ঠাসা ভিড়, শিকেয় দূরত্ববিধি

কোনও রুটে বেসরকারি বাস চললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২০ ০৪:০৮
ভোগান্তি-চিত্র: বোলপুরে। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

ভোগান্তি-চিত্র: বোলপুরে। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

পথ চেয়ে ঘণ্টা পেরিয়ে যাচ্ছে। বাসের দেখা নেই। তাই অনেক অফিস-কাছারি খুলে গেলেও পথে বেরিয়ে নাকাল হচ্ছেন জেলার সাধারণ মানুষ। মঙ্গলবারও তার ব্যতিক্রম হল না।

কোনও রুটে বেসরকারি বাস চললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। আবার কোথাও বা একেবারেই চলছে না বেসরকারি বাস। যাত্রীদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে তাই যেমন শারীরিক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে, তেমনই অনেক বেশি খরচও করতে হয়েছে। জেলার বোলপুর, রামপুরহাট, সিউড়ি মহকুমার সর্বত্র একই চিত্র দেখা গিয়েছে।

পাঁচ দিন আগে বেসরকারি বাস চলাচল শুরু করলেও সব রুটে বাস চলাচল করছে না জেনে পথে বেরিয়ে যাতে বিপত্তির মধ্যে না পড়তে হয় সেই কারণে অনেকেই নিজেদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছনোর জন্য নির্দিষ্ট সময়ের থেকে বেশ কিছুটা আগে বেরো। তাতেও ভোগান্তি এড়াতে পারেননি তাঁরা। বাসের অপেক্ষায় স্ট্যাণ্ডে ঘন্টার পর ঘন্টা অনেককে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। দেখা মেলেনি বাসের। অগত্যা টোটো, অটো, যন্ত্র চালিত ভ্যান রিক্সয় ভরসায় যাতায়াত করতে হয়েছে।

এ দিন শালবাদরা পাথর শিল্পাঞ্চলে কাজে যোগদান করার জন্য ঝাড়খণ্ডের পাকুড় এলাকার আটজন যুবককে দেখা গেল রামপুরহাট বাসস্ট্যান্ডে। তাঁরা শালবাদরা রুটের বাসের খোঁজ করছিলেন। ওই রুটে বাস চলছে না জেনে তাঁরা জাতীয় সড়কের ধারে অপেক্ষমান টোটো এবং ভ্যানরিকশা মল্লারপুর পর্যন্ত ভাড়া করলেন। মল্লারপুর থেকে শালবাদরা ১১ কিলোমিটার পথ কিভাবে পৌঁছবেন তা না জেনেই যাত্রা শুরু করলেন ওঁরা।

একইভাবে রামপুরহাট বাসস্ট্যান্ড ছাড়িয়ে জাতীয় সড়কের ধারে মাড়গ্রাম মোড়ে এসে দেখা গেল রামপুরহাট থেকে মাড়গ্রাম, বিষ্ণূপুর হয়ে মুর্শিদাবাদের পারুলিয়া রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকার জন্য যাত্রীরা টোটো, যন্ত্রচালিত ভ্যানে যাতায়াত করছেন। মাড়গ্রামের বাসিন্দা এক মহিলা যাত্রী বললেন, ‘‘রামপুরহাট মেডিক্যালে মা ভর্তি আছেন। মাকে দেখতে এসেছিলাম। কিন্তু বাস চলাচল বন্ধ থাকার জন্য দ্বিগুণ পয়সা খরচ করতে হল।’’ যাত্রীদের অনেককেই গাদাগাদি করে যন্ত্রচালিত ভ্যান রিশা এবং টোটোতে যাতায়াত করতে দেখা গেল। উপায় ছিল না দূরত্ববিধি মানারও।

জাতীয় সড়কের ধারে রামপুরহাট লোটাস প্রেস মোড়ে নলহাটি থানার পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাঝবয়সী কল্পনা কোনাই চোখের চিকিৎসার জন্য রামপুরহাট এসেছিলেন। গ্রাম থেকে নলহাটি পর্যন্ত তিন কিলোমিটার পথ হেঁটে এসেছেন তিনি। তারপর নলহাটি বাসস্ট্যাণ্ডে ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করে বাস না পেয়ে টোটো করে নলহাটি থেকে রামপুরহাট আসেন। বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনিও।

একই ছবি দেখা গিয়েছে দুবরাজপুরে। সেখানকার বাসিন্দা সিউড়ি পুরসভার অধীনে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক নার্সিং স্টাফ দুপুর বারোটার সময় ডিউটি ধরার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে সাড়ে দশটা থেকে দুবরাজপুর পাওয়ার হাউস মোড়ে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়েছিলেন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে বেসরকারি বাস না পেয়ে পৌনে বারোটার সময় সরকারি বাস পেয়ে সিউড়ি রওনা দেন তিনি।

বোলপুর মহকুমাতেও দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। বোলপুরে মেয়ের বাড়ি এসেছিলেন নলহাটির বাসিন্দা বিকাশ দত্ত। সিউড়ি যাওয়ার জন্য বোলপুর বাসস্ট্যান্ডে সকাল দশটা থেকে বারোটা পর্যন্ত দাঁড়িয়েও বাস পাননি তিনি। একই অবস্থা বোলপুরের বাসিন্দা শ্যামল কর্মকার নামে এক বেসরকারী সংস্থার কর্মীর। তিনি জানান, অফিসে জরুরি কাজ আছে। তাই তিন গুণ ভাড়া দিয়ে সিউড়ি যেতে হচ্ছে। জেলার তিনটি মহকুমায় বীরভূম জেলা বাস মালিক সমিতির তিনটি সংগঠন আছে। বাস মালিকদের তিনটি সংগঠনের সদস্যরা জানান, সরকার বাস চালাতে বললেও বাসে যাত্রী সংখ্যা কম থাকার জন্য বাস চালিয়ে জ্বালানি খরচ, বাস চালক, কন্ডাকটর ও বাসকর্মীদের খরচ উঠছে না। এর জন্য অধিকাংশ মালিকই চালাতে রাজি নন বলে তাঁদের দাবি।

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy