Advertisement
E-Paper

দোতলায় ভর্তি শিশুর দেহ মাটিতে

হাসপাতালের নবজাত অসুস্থ শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রের ঠিক নীচেই নিকাশি নালা থেকে উদ্ধার হল এক সদ্যোজাতের দেহ। রবিবার সকালে বাঁকুড়া মেডিক্যালের ঘটনা। অসুস্থ শিশুটি নবজাত অসুস্থ শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে (এসএনসিইউ) ভর্তি ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৮ ০০:৩৯
এই কাপড়ে (ইনসেটে) জড়িয়ে পড়ে ছিল দেহ। নিজস্ব চিত্র

এই কাপড়ে (ইনসেটে) জড়িয়ে পড়ে ছিল দেহ। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালের নবজাত অসুস্থ শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রের ঠিক নীচেই নিকাশি নালা থেকে উদ্ধার হল এক সদ্যোজাতের দেহ। রবিবার সকালে বাঁকুড়া মেডিক্যালের ঘটনা। অসুস্থ শিশুটি নবজাত অসুস্থ শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে (এসএনসিইউ) ভর্তি ছিল। সেখানকার শৌচাগারের জানলা থেকে দু’দিনের শিশুটিকে তার মা নীচে ফেলে দেন বলে অভিযোগ নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের। হাসপাতালের সুপার শুভেন্দুবিকাশ সাহা বলেন, ‘‘ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়েছে।’’

পরিবার সূত্রে খবর, বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানার কুকড়াঝোড় গ্রামের ঝুমা মণ্ডল শনিবার সকালে বাড়িতেই একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু সময়ের আগে ভূমিষ্ঠ হওয়ায় শিশুটি দুর্বল ছিল। স্থানীয় অমরকানন গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এসএনসিইউ-তে শিশুটিকে স্থানান্তর করা হয়। ঝুমাকে পাশের ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, এ দিন সকালে শিশুটিকে দুধ খাওয়ানোর জন্য ঝুমাকে এসএনসিইউ-তে ডেকে পাঠানো হয়। দুধ খাওয়ানোর পরে শিশুকে নিয়ে সবার নজর এড়িয়ে পাশের শৌচাগারে ঢুকে পড়েন ঝুমা। কিছু পরেই তিনি বেরিয়ে এসে কান্নাকাটি জুড়ে দেন। দাবি করেন, তাঁর শিশুকে কেউ চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। সেই সময়েই দোতলার এসএনসিইউ-র ঠিক নীচে নিকাশি নালায় একটি লাল কাপড়ে মোড়া শিশুর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন লোকজন। তাঁরা ওয়ার্ডে মাস্টারকে জানান। এক সাফাই কর্মী শিশুটিকে তুলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখেন, তার মৃত্যু হয়েছে।

এরপরেই ওই মহিলা মৃত শিশুটিকে দেখে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেন। নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের দাবি, তাঁদের চাপে পড়ে ওই প্রসূতি স্বীকার করেন, তিনি নিজেই শৌচাগারের জানলার গ্রিলের ফাঁক দিয়ে গলিয়ে বাচ্চাটিকে নীচে ফেলে দেন। ওই মহিলাকে হাসপাতালের মধ্যেই আটকে রাখা হয়।

ঘণ্টাখানেক পরে তিনি বলেন, ‘‘মেয়েটা খুবই দুর্বল। নাভি দিয়ে রক্ত পড়ছিল। ঠিক মতো দুধও খেতে পাচ্ছিল না। শাশুড়ি দুর্বল শিশুর জন্ম দেওয়ায় আমাকে কথা শুনিয়েছিল।’’ ঝুমার সঙ্গে হাসপাতালে ছিলেন তাঁর মা ও দাদা। দাদা ইন্দ্রজিৎ লায়েক বলেন, ‘‘বছর পাঁচেক আগে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি সঞ্জয়ের সঙ্গে বোনের বিয়ে দেওয়া হয়। তাদের চার বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। শ্বশুরবাড়িতে বোনের সঙ্গে এমনিতে অশান্তি থাকলেও প্রথম মেয়েকে নিয়ে কোনও অশান্তি ছিল না। তবে দ্বিতীয় মেয়েটি দুর্বল হওয়ায় গঞ্জনা শুনতে হচ্ছিল।’’ হাসপাতালেই ছিলেন ঝুমার স্বামী। তিনি অবশ্য কথা বলতে চাননি। পরে ফোন করা হলেও তা ধরেননি।

এমন অভিযোগ এই প্রথম নয়। ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর বাঁকুড়া শহরের পাটপুরের এক বধূ আট দিনের মেয়েকে রাতের অন্ধকারে কুয়োয় ফেলে মেরে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। পুলিশের দাবি, জেরায় ওই মহিলা তাদের জানিয়েছিলেন, সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে তিনি দুর্বল থাকায় অতটুকু শিশুর যত্ন কী ভাবে নেবেন, তা নিয়ে দুর্ভাবনায় ছিলেন। সে কারণেই তিনি ওই কাণ্ড ঘটান বলে পুলিশ দাবি করেছিল।

পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, ‘‘ঘটনাটি নিয়ে শিশুর পরিবার বা হাসপাতাল থেকে অভিযোগ হয়নি। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। অভিযোগ এলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Bankura Medical College Hospital Newborn Dead Body
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy