Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Murder

নিখোঁজ বধূর গলাকাটা দেহ পাওয়া গেল প্রতিবেশীর গোবর গ্যাসের ট্যাঙ্কে, ধৃত শ্বশুর এবং শাশুড়ি

মোনালিসা বছর ছয়েক আগে ঢেকিয়ার পার্শ্ববর্তী গ্রাম বিষজোড়ের এক যুবককে ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন। তাঁদের এক কন্যাসন্তান হয়। পরে পাশের গ্রাম ঢেকিয়ার কাজু ঘটককে বিয়ে করেন তিনি।

Dead body of a woman recovered from a tank at Bankura

মোনালিসা ঘটক এবং কাজু ঘটক। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৩ ১২:৩২
Share: Save:

পুত্রবধূর গলার নলি কেটে খুন। দেহ লোপাট করতে তা ফেলে দেওয়া হয়েছিল প্রতিবেশীর গোবর গ্যাসের ট্যাঙ্কে। সেই ঘটনায় গ্রেফতার করা হল শ্বশুর এবং শাশুড়িকে। এই ঘটনা বাঁকুড়ার শালতোড়া ব্লকের ঢেকিয়া গ্রামের। দু’দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন ওই বধূ। শনিবার প্রতিবেশীর গোবর গ্যাসের ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে বাঁকুড়ার শালতোড়া থানায় নিজের শ্বশুর এবং শাশুড়িকে নিয়ে হাজির হন ঢেকিয়া গ্রামের বাসিন্দা কাজু ঘটক। কাজু পেশায় টোটোচালক। তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁর স্ত্রী মোনালিসা ঘটক বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নিখোঁজ। ঘটনার পর থেকে তাঁর বাবা সুজিত ঘটক এবং মা ইতু ঘটককেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে পুলিশকে জানান কাজু। ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় কাজুর বাবা এবং মায়ের সন্ধান পায় পুলিশ। বিষ্ণুপুর থানার হিংজুড়ি গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন তাঁরা। সেখান থেকে দু’জনকে আটক করে শালতোড়া থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে কাজুর বাবা এবং মা মোনালিসাকে গলার নলি কেটে খুনের কথা স্বীকার করে নেন। এর পরেই তাঁদের নিয়ে ঢেকিয়া গ্রামে যায় পুলিশ। এর পর তাঁদের প্রতিবেশীর পরিত্যক্ত একটি গোবর গ্যাসের ট্যাঙ্ক থেকে মোনালিসার দেহ উদ্ধার হয়। মোনালিসার বাপের বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে সুজিত এবং ইতুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে।

মোনালিসা বছর ছয়েক আগে ঢেকিয়ার পার্শ্ববর্তী গ্রাম বিষজোড়ের এক যুবককে ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন। তাঁদের এক কন্যাসন্তানও রয়েছে। পরে পাশের গ্রাম ঢেকিয়ার কাজুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন মোনালিসা। এর পর কাজুকে বিয়ে করেন তিনি। মোনালিসার বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, মোনালিসার সঙ্গে ছেলের বিয়ে মেনে নিতে পারেননি কাজুর বাবা এবং মা। মোনালিসার মা সোমা সিংহ বলেন, ‘‘আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম আমার মেয়েকে অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে ওরা। কিন্তু পরে জানলাম ওকে খুন করে দেহ গায়েব করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। আমাদের ধারণা, এই ঘটনায় কাজুরও প্রত্যক্ষ যোগসাজশ রয়েছে। আমরা তিন জনেরই ফাঁসি চাই।’’

পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির আঁশ বটি দিয়ে বৌমার গলার নলি কেটে খুন করেন কাজুর মা ইতু। তার পর দেহ লুকিয়ে রাখা হয় প্রতিবেশীর গোবর গ্যাসের ট্যাঙ্কে। এর পরেই সুজিত এবং ইতু গা ঢাকা দেন। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। দেহ উদ্ধারের পাশাপাশি, দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ধৃতেরা ওই বধূকে খুনের কথা স্বীকার করেছেন। ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হবে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা পারিবারিক অশান্তির কারণেই এই খুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder arrest Homicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE