একটি হোম-স্টে থেকে প্রাক্তন কেয়ারটেকারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল শান্তিনিকেতনে। সোমবার স্থানীয় ফুলডাঙা এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম অমিত দাস (৩৩)। বাড়ি শান্তিনিকেতনেরই রতনপল্লির ডেইলি ব্রেড রোডে। পুলিশ আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে, সংবাদমাধ্যমের কাছে মৃতের পরিবার অভিযোগ করেছেন, পরিকল্পনা করেই ওই যুবককে খুন করা হয়েছে। তবে, এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত এই মর্মে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। প্রাথমিক ভাবে তাঁরা ঘটনার তদন্তে পুলিশ-কুকুরের দাবি জানিয়ে দেহ উদ্ধার করতে বাধাও দেয়। পরে নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দিলে পুলিশকে মৃতের পরিবার দেহ উদ্ধার করতে দেয়। এ দিনই দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। এসডিপিও (বোলপুর) ও পুলিশ সুপার, কেউ-ই ফোন ধরেননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দীর্ঘ দিন ধরে শান্তিনিকেতনে আসা বিদেশি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় ওই হোম-স্টেতে অমিত দাস কেয়ারটেকারের কাজ করতেন। হোম-স্টে মালিকের সঙ্গে ঝামেলা হওয়ায় বছর দু’য়েক আগে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। তিনতলা একটি মূল ভবন ছাড়াও ওই চত্বরে অতিরিক্ত দু’টি ঘরে অতিথিদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। কেয়ারটেকারের থাকার জন্য রয়েছে একটি ছোট আউটহাউস। হোম-স্টের বর্তমান কেয়ারটেকার বিজয় ঘোষ জানান, রবিবার মূল ভবনে কোনও অতিথি না থাকলেও চত্বরে থাকা অন্য ঘরগুলিতে অতিথি ছিল। তাঁদের রাতের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা অবশ্য মূল ভবনের দোতলায় করা হয়েছিল। বিজয়বাবুর দাবি, ‘‘খাওয়া-দাওয়া মিটতে ঘরে তালা দিতে যাই। তখনই নীচে নির্দিষ্ট জায়গায় থাকা চাবির গোছা খুঁজে পাইনি। রাত হয়ে গিয়েছিল। শেষে উপায় না দেখে তখনকার মতো আউট হাউসের একটি তালা মূল ভবনের কোলাপসিবল গেটে লাগাই।’’
কেয়ারটেকার আরও জানান, এ দিন সকালে তিনি কোলাপসিবল গেটের তালা খুলতে গিয়ে দেখেন ভেতর থেকে আরও একটি তালা দেওয়া রয়েছে। বিজয়বাবু ফোনে ঘটনার কথা হোম-স্টের মালিক কৃষ্ণ দে-কে জানান। কৃষ্ণবাবু শান্তিনিকেতনের বাইরে থাকায় তাঁর বন্ধু তথা স্থানীয় বাসিন্দা শান্তনু শতপথীকে বিষয়টি দেখতে অনুরোধ করেন। শান্তনুবাবু বলেন, “কৃষ্ণবাবু ফোনে ঘটনার কথা জানানোর পরে আমি হোম-স্টেতে যাই। কেয়ারটেকার এবং অন্য কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মূল ভবনের চারদিক ঘুরে দেখি। একতলার একটি ঘরের পাশ থেকে আমরা এসি চলার শব্দ শুনতে পাই। ঘরের জানালার কাছে যেতে টিভির শব্দ কানে আসে। লাঠি দিয়ে জানালা খুলতেই দেখি ঘরের ফ্যানের সিলিং থেকে পুরনো ওই কেয়ারটেকারের দেহ ঝুলছে!’’ পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তাঁরা থানায় খবর দেন। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ শান্তিনিকেতন তদন্ত কেন্দ্র থেকে পুলিশও পৌঁছে যায়। তারাই প্রথম কোলাপসিবল গেটের তালা ও ভেতরের ঘরের দরজার ছিটকিনি ভেঙে ভেতরে ঢোকে।