Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নেতাজির স্মৃতি বিজড়িত রাস্তা সংস্কারের দাবি

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর স্মৃতি বিজড়িত সাঁতুড়ির গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়ক থেকে সাঁতুড়ি থানার মোড় পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার রাস্তার পুরোটাই জুড়ে খানাখন্দে ভর্তি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাঁতুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:০৬
Share: Save:

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর স্মৃতি বিজড়িত সাঁতুড়ির গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়ক থেকে সাঁতুড়ি থানার মোড় পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার রাস্তার পুরোটাই জুড়ে খানাখন্দে ভর্তি। বহু জায়গাতেই রাস্তার পিচ উঠে বেরিয়ে পড়েছে পাথর। সব মিলিয়ে দৃশ্যতই বেহাল গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি। কিন্তু নেতাজির নামাঙ্কিত সুভাষ রোড আমূল সংস্কারে এগিয়ে আসেনি প্রশাসন। যদিও সাঁতুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির দাবি, বহু চেষ্টায় পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ থেকে ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য কিছু টাকা পাওয়ায় সম্প্রতি কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দকৃত ১ কোটি ২১ লক্ষ টাকায় পুরো রাস্তার আমূল সংস্কার যে সম্ভব নয়, তা মানছেন পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বিধুভূষণ শান্তিকারিও। তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ থেকে পাওয়া টাকায় সাঁতুড়ির দিক থেকে পাথরবাঁধের সেতু পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার আমূল সংস্কার করা হবে।” কিন্তু বাকি ১১ কিলোমিটার রাস্তার কী হবে, সদুত্তর মেলেনি পঞ্চায়েত সমিতির তরফে।

জেলার ইতিহাস বলছে, ১৯২৮ সালের মার্চ সালে এই রাস্তা দিয়েই রামচন্দ্রপুর গ্রামে এসেছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। অন্নদাপ্রসাদ চক্রবর্তী তথা স্বামী অসীমানন্দের সঙ্গে দলীয় কর্মসূচিতে রামচন্দ্রপুরে যাওয়ার পথে এক অন্ধকে দেখেন নেতাজি। তিনি অসীমানন্দকে অন্ধদের জন্য কিছু করতে বলেন। তারপরেই রামচন্দ্রপুরে স্বামী অসীমানন্দ সরস্বতী তৈরি করেন ‘নেতাজি আই হাসপাতাল’।

ওই চক্ষু হাসপাতালে সড়কপথে যেতে হলে এই সুভাষ রোড ছাড়া গত্যন্তর নেই। ফলে ব্লকের কমবেশি ৬০ শতাংশ বাসিন্দার মতো রাস্তার বেহাল দশায় দৈনন্দিন সমস্যায় পড়তে হয় চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের। হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রীশেখর চক্রবর্তী জানান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বর্ধমান এমনকী ঝাড়খণ্ড থেকে হাসপাতালে বহু রোগী আসেন। তাঁর কথায়, ‘‘চোখের অস্ত্রোপচারের পরে রাস্তায় ঝাঁকুনি এড়িয়ে চলাই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু ওই রাস্তা দিয়েই রোগীদের যেতে হয়। এতে ঝুঁকি তো থাকেই।’’ বাসিন্দাদের কাছেও এই রাস্তার গুরুত্ব অনেকখানি।

কিন্তু কেন আমূল সংস্কার করা হচ্ছে না? সহ-সভাপতি বিধুভূষণবাবুও মানছেন, ‘‘সুভাষ রোডের আমূল সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু ১৬ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কারের জন্য ন্যূনতম চার কোটি টাকা প্রয়োজন। কিন্তু সমিতির পক্ষে ওই টাকা দেওয়া সম্ভব নয়।” তিনি জানান, ওই রাস্তার বাকি ১১টি কিলোমিটার অংশে কাজের জন্য জেলা পরিষদ দু’দফায় ৯০ লক্ষ টাকার দরপত্র আহ্বান করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে ওই টাকায় আদৌ আমূল সংস্কার হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Road Repair
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE