ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই তিলপাড়া ব্যারাজ সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাস শেষ হতে চললেও কাজ শুরুর কোনও লক্ষণ নেই। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যারাজ সংস্কারের জন্য যে দরপত্র তৈরি করা হয়েছিল, তার মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা হয়েছে। যার ফলে দরপত্র প্রকাশের কাজ অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে। তবে সেচ দফতর যাতে কাজ শুরু করতে পারে, তার জন্য
সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে জেলা প্রশাসন।
গত বছর নভেম্বর মাসে তিলপাড়া ব্যারাজের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ দল ব্যারাজ পরিদর্শনে আসেন। তাঁদের সুপারিশ অনুযায়ী দ্রুত তিলপাড়া ব্যারাজ সংস্কারের কাজ শুরু করতে গত বছর ৬ ডিসেম্বর একটি দীর্ঘ আলোচনা হয় জেলা প্রশাসন ভবনে। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ব্যারাজের ভগ্ন স্বাস্থ্য যাতে আরও বিঘ্নিত না হয়, সে জন্য ব্যারাজের উপরের রাস্তায় ভারী যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
কার্যত ‘যুদ্ধকালীন তৎপরতায়’ ব্যারাজের পাশেই একটি বিকল্প রাস্তা তৈরির পর এ বছর জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকে যান নিয়ন্ত্রণ শুরু হয় ব্যারাজের উপর। জানুয়ারি মাসেই সেচ দফতরের সূত্রে জানানো হয়েছিল, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই শুরু হবে ব্যারাজ সংস্কারের কাজ। দরপত্র তৈরির কাজ শেষ হয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন আধিকারিকরা। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে এসেও সংস্কারের কাজ শুরু করতে পারেনি সেচ দফতর।
অথচ বিভাগের দাবি ছিল, এই কাজে ব্যারাজের ভিতের যে অংশগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলিকে সংস্কার করা ও ব্যারাজের যেখান থেকে জল বেরিয়ে আসে সেই অংশের সংস্কারের কাজ করা হবে। আরও কিছু সংস্কারের প্রয়োজন থাকলেও বর্ষার জলের চাপের কথা মাথায় রেখে আশু প্রয়োজনটুকুই মেটানো হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হতে পারে সংস্কারের কাজ। কিন্তু মার্চ মাসে কাজ শুরু করে আদৌ বর্ষার আগে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে তাঁদের মনেও। এই বিষয়ে সেচ দফতরের তরফে কোনও বক্তব্য পাওয়া না গেলেও দফতরের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘এখনই যদি কাজ শুরু করা যায়, তাহলে বর্ষার আগে কাজ শেষ করা সম্ভব।’’
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “বর্ষার আগে যাতে কাজ শেষ করা যায়, সে জন্য আমরাও নিয়মিত খোঁজখবর রাখছি। আমরা জানতে পেরেছি, দরপত্রে কিছু পরিবর্তনের জন্য সময় বেশি লাগছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের তরফ থেকে যান নিয়ন্ত্রণের কাজ চলছে। সেচ দফতর কাজ শুরু করলে নিয়ন্ত্রণ আরও কড়া করা হবে। আমাদের তরফ থেকে যে যে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি রয়েছে, সেগুলির জন্য আমরা সম্পূর্ণ তৈরি।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)