উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে নার্সারিতে গাছের চারা তৈরির কাজ কেমন চলছে তা খতিয়ে দখতে সোমবার দুবরাজপুর রেঞ্জ ঘুরে গেলেন মুখ্য বনপাল কানাইলাল ঘোষ। বনদফতর সূত্রে খবর, প্রতি বর্ষায় অর্থাৎ জুন মাসে প্রচুর পরিমানে গাছ লাগানো হয় দফতরের পক্ষ থেকে। সেই জন্য নিজস্ব নার্সারিতে ফেব্রুয়ারি থেকে প্রয়োজনীয় চারা তৈরি করা হয়। সেই চারাই বনদফতরের জন্য নির্দিষ্ট বিভিন্ন প্রান্তে লাগানো হয়। কিন্তু যে পরিমাণ চারা লাগানো হয়, তার অনেকাংশই বিভিন্ন কারণে নষ্ট হয়। সে সবই ঘুরে দেখলেন মুখ্য বনপাল।
দফতর সূত্রে খবর, উন্নত মানের চারা গাছের অভাবে নানা রকমের সমস্যা হয়। সেই সমস্যা মিটিয়ে কীভাবে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে আরও বেশি সুস্থ সবল চারা তৈরি করা যায় কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে স্বল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে একটি জাপানী সংস্থা। জাপান ইন্টারন্যাশানাল কর্পোরেশন এজেন্সি, সংক্ষেপে জাইকা অর্থ সাহায্যে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে নার্সারিতে গাছের চারা তৈরি করতে শুরু করছে বন দফতর।
মুখ্য বনপাল তথা প্রকল্পের সহ অধিকর্তা কানাইলাল ঘোষ বলেন, ‘‘সারা রাজ্যে পাঁচ বছরের এই প্রকল্প ব্যয় বরাদ্দ ৪০৬ কোটি টাকার। মোট ৩৪টি ডিভিশন এর মধ্যে ধরা হয়েছে। বীরভূম তার অন্যতম। জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ৪৪০ হেক্টর। দুবরাজপুর রেঞ্জ অফিসেও বিদেশি অর্থ সাহায্যে তৈরি হচ্ছে চারাগাছ।’’
চারা তৈরিতে কীভাবে প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে?
দুবরাজপুরের রেঞ্জ অফিস সূত্রে জানানো হয়েছে, একধরণের লোহার টেবিল ব্যবহার করা হচ্ছে। তার উপর তারপরেই ছোট ছোট প্লাস্টিক পাত্র বা ‘রুট ট্রেনার’ এ বাসানো। সেখানেই অর্জুন, বহেড়া, নিম, চিকরাশী, চটরা, শিরিষ ইত্যাদি গাছের চারা তৈরি হচ্ছে। দূরে অপেক্ষাকৃত ছোট গাছ গুলির জন্য রয়েছে ছাউনি। সেখানেই রাখা হচ্ছে গাছগুলি। বীজ থেকে সবে অঙ্কুদগম হয়েছে এমন চারা রাখা হচ্ছে জার্মিনেশন শেডের মধ্যে। চারাগাছগুলিতে জল দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। যাতে সুস্থভাবে গাছের চারা গুলি তৈরি হতে পারে এবং শিকড় ক্ষতিগ্রস্থ না হয়, এরপর এই চারা তুলে নিয়ে গিয়ে বৃক্ষরোপণ করলে মরে যাওয়া সম্ভাবনা কম।
মুখ্য বনপাল বলেন, ‘‘ফরেস্টের ইকো সিস্টেমের উন্নতি ঘটানো অর্থাৎ যেখানে গাছপালা কম বা একেবারেই নেই সেইসব অঞ্চল বেছে নিয়ে সুপরিকল্পিত ভাবে গাছ লাগানো এবং জঙ্গল তৈরি করেত হবে। জেলায় মাত্র কয়েকটি অঞ্চলে ছাড়া শাল জঙ্গল নেই। মাটির চরিত্রের জন্য চেষ্টা করেও বন দফতর সেই গাছ বাঁচাতে পারছিল না। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy