E-Paper

‘নিরঙ্কুশ’ জয়েও বোর্ড গঠনে ‘দ্বন্দ্ব’

পুল জয়ের পরেও অবশ্য তৃণমূল গোষ্ঠী কোন্দল এড়াতে পারল না বোর্ড গঠনের দিনেও। উদাহরণ খয়রাশোল। এ দিন ঝামেলা হয় পাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে। মোট ২৩টি আসন রয়েছে ওই পঞ্চায়েতে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৪৩
অশান্তি এড়াতে পঞ্চায়েত কর্যালয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে খয়রাশোলের পাঁচড়ায়।

অশান্তি এড়াতে পঞ্চায়েত কর্যালয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে খয়রাশোলের পাঁচড়ায়। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।

কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বৃহস্পতিবার মোটের উপরে গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন শান্তিপূর্ণই হয়েছে সিউড়ি মহকুমায়।

মহম্মদবাজার, সাঁইথিয়া, সিউড়ি ১ ও ২, রাজনগর, দুবরাজপুর এবং খয়রাশোল— সদর মহকুমার এই ৭টি ব্লকে মোট ৬২টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ৫৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতে নিরঙ্কুশ ভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল। খয়রাশোলের লোকপুর, মহম্মদবাজারের কাপিষ্ঠা ও রামপুর, সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা এবং সাঁইথিয়ার দেরিয়াপুর—এই পাঁচটি পঞ্চায়েতে জিতেছে বিজেপি। ত্রিশঙ্কু আঙ্গারগড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতেরও দখল নিয়েছে বিজেপি। তবে, টসে তাদের হাতছাড়া হয়েছে ‘টাই’ থাকা খয়রাশোলের পারশুণ্ডি পঞ্চায়েতটি।

পুল জয়ের পরেও অবশ্য তৃণমূল গোষ্ঠী কোন্দল এড়াতে পারল না বোর্ড গঠনের দিনেও। উদাহরণ খয়রাশোল। এ দিন ঝামেলা হয় পাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে। মোট ২৩টি আসন রয়েছে ওই পঞ্চায়েতে। ১৫টিতে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। বিজেপি পেয়ে ৮টি। ফলে, প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন ভোটাভুটি পর্যন্ত গড়ানোর কথাই নয়। কিন্তু, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে সেটা শুধু ভোটাভুটি পর্যন্ত এগোয়নি, উপ-প্রধান নির্বাচনের ফল নিয়ে ঝামেলা হয়েছে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের নির্দেশ না-মেনে এ দিন দুই গোষ্ঠী পৃথক প্রধানের নাম প্রস্তাব করে। নাম প্রস্তাব করেল বিজেপিও। তবে ৯-৬ ভোটে জয় পান শাসকদলের অঞ্চল সভাপতি মনোনীত এক মহিলা প্রার্থী। একই ভাবে উপপ্রধান নির্বাচনের ভোটাভুটিতেও একই ফল হয়। তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর এক প্রার্থী ৯-৬ নির্বাচিত হন। বিজেপি প্রার্থী পান ৮টি ভোট। বিজেপির স্থানীয় মণ্ডল সভাপতি রথীলাল সিংহের দাবি, ‘‘প্রিসাইডিং অফিসার প্রথমে জানিয়েছিলেন শাসকদলের যে প্রার্থী ৯টি ভোট পেয়েছেন, তার মধ্যে দু’টি অবৈধ। স্বাভাবিক ভাবেই ৮টি ভোট পেয়ে আমাদের প্রার্থী জয়ী। কিন্তু, তৃণমূলের চাপে সেই ভোট পরে বৈধ ঘোষণা করেন তিনি।’’ কারচুপির অভিযোগ তুলে এ দিন পঞ্চায়েত কার্যালয় ঘেরাও করে রাখেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। বিডিওর প্রতিনিধি মহিলা প্রিসাইডিং আধিকারিককে শেষ পর্যন্ত পুলিশ পাহারায় পঞ্চায়েত থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা।

খয়রাশোলের বিডিও পৃত্থীশ দাশ বলেন, ‘‘ব্যালটে নির্দিষ্ট বক্সে ক্রস চিহ্ন না দিয়ে নামের পাশে দিয়েছিলেন নির্বাচত দুই প্রার্থী। নিয়ম অনুযায়ী ভোটার কাকে ভোট দিতে চাইছেন, সেই মনোভাব বুঝতে যদি অসুবিধা নয় হয়, তাহলে সেই ভোট বৈধ। প্রাথমিক ভাবে প্রিসাইডিং অফিসারের মনে সংশয় তৈরি হলেও পরে সেটা তিনি শুধরে নিয়েছেন।’’

সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও প্রধান ও উপ-প্রধান নির্বাচনে ভোটাভুটি হয়েছে কেন্দ্রগড়িয়া এবং খয়রাশোল পঞ্চায়েতে। অভিযোগ, খয়রাশোল পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যকে লুকিয়ে রাখা হয়। তাঁকে পুলিশের সাহায্যে নিয়ে আসা হয়। তাও ভোটাভুটি রোখা যায়নি। অন্য দিকে, ১৮টি আসন বিশিষ্ট দুবরাজপুরের লোবা গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৭টি আসন তৃণমূল পেয়েও প্রধান ও উপপ্রধান ভোটাভুটিতে নির্বাচিত হয়েছেন। দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর মতের বিরুদ্ধে প্রধান-উপ প্রধান নির্বাচিত হন। সাঁইথিয়ার মাঠপলসা পঞ্চায়েতে ব্লক সভাপতি না অঞ্চল সভাপতি মনোনীত প্রার্থী প্রধান হবেন, তা নিয়ে দ্বন্দ্বে দু’পক্ষের মারপিট হয়।

রাজনগর এবং সিউড়ি ২ ব্লকে (কার্যত বিরোধী শূন্য) বোর্ড গঠন নিয়ে কোনও ঝামেলা হয়নি। একই ছবি সিউড়ি ১ ব্লকে। আঙ্গারগড়িয়া পঞ্চায়েতে প্রধান ও উপ্রপ্রধান নির্বাচনের পরে বিজেপি তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে লাড্ডু বিলি করায় দু’দলের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। পুলিশ সরিয়ে দেয় দু’পক্ষকেই।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Birbhum Panchayat Elction

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy