চলছে মূর্তি তৈরির কাজ। নিজস্ব চিত্র
দেবীর দশ হাতে থাকে না কোনও অস্ত্র। পরিবর্তে শান্তির প্রতীক হিসেবে দশ হাতে দশটি ফুল দেওয়া হয়। এই ভাবেই দু’দশক ধরে শান্তিনিকেতনের বোনের পুকুর ডাঙ্গা সোনাঝুরি জঙ্গলে পূজিত হয়ে আসছেন দশভূজা। এই পুজো ঘিরে আশেপাশের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দাদের উন্মাদনা যথেষ্ট।
২০০১ সালে এই পুজো শুরু করেছিলেন প্রয়াত শিল্পী বাঁধন দাস। পুজোর নাম দিয়েছিলেন হীরালিনি দুর্গা উৎসব। এর পরে ২০০২ সালে শিল্পী বাঁধন দাসের অকাল প্রয়াণের পরে পুজোর ভার এসে পড়ে বোন চিত্রা ঘোষ ও তাঁর স্বামী শিল্পী আশিস ঘোষের উপরে। শরতকালে যেমন দুর্গোৎসব হয়ে থাকে, তেমনই আদিবাসী জনজাতির মানুষেরা ‘বেলবরণ’ উৎসবে মাতেন। সোনাঝুরি জঙ্গলের চারপাশে বেশ কিছু আদিবাসী পরিবারের বসবাস রয়েছে। তাই আদিবাসী ও বাঙালি সংস্কৃতির মেলবন্ধন রয়েছে এই পুজোয়। আদিবাসী সম্প্রদায়ের বহু মানুষ এই পুজোয় যোগ দেন।
পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এখানে কোনও নতুন মূর্তি বানানো হয় না। পুরনো পাঁচটি মূর্তিকে নতুন রূপ দিয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুজোর আয়োজন করা হয়। এই বছর তা ফাইবারের। শুধু দুর্গা নয়, লক্ষ্মী, কার্তিক, গণেশ, সরস্বতী, মহিষাসুর সবই বানানো হয়েছে ফাইবার দিয়ে। কাঠের বিভিন্ন কারুকাজ দিয়ে মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে দশ অবতার থেকে শুরু করে কাঠের বিভিন্ন ধরনের নকশা তুলে ধরা হবে। রঙিন আলপনায় সাজছে মণ্ডপ। এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে।
বহু মানুষ এই পুজো দেখতে দূর থেকে ছুটে আসেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে পুজোর দিনগুলিতে যে অনুষ্ঠান তা বন্ধ রাখা হয়েছে। দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর সোনাঝুরি জঙ্গলে যে মেলা বসে, সেটিও বন্ধ রাখা হচ্ছে। কেবলমাত্র আচার বিধি মেনে পুজোটুকু হবে। পুজোর দিনগুলিতে বেশি লোক যাতে এক জায়গায় জমায়েত না হন, সেই দিকেও নজর রাখছেন পুজো উদ্যোক্তারা। অন্যতম উদ্যোক্তা শিল্পী আশিস ঘোষ বলেন, “২১ বছর ধরে এই পুজো চলে আসছে। আমাদের সাধ্য মতো আয়োজন চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy