চন্দ্রযান ৩ , বিষ্ণুপুর রসিকগঞ্জ সর্বজনীন । ছবিঃ অভিজিৎ অধিকারী ।
গত কয়েক দশক ধরেই পুজো আয়োজনে একের পর এক নতুনত্ব এনে দর্শকদের মন জয় করে নিচ্ছেন বিষ্ণুপুরের দুর্গা পুজোর উদ্যোক্তারা। এ বারও তার ব্যতিক্রম নেই। মণ্ডপ ও প্রতিমা সজ্জায় একে অন্যকে টেক্কা দিতে তৈরি তাঁরা।
বিষ্ণুপুরের আঁইশবাজার দুর্গোৎসব কমিটির থিম ‘দর্পদলনা’। ওড়িশার পুরীর সুভদ্রার রথের আদলে মণ্ডপ সাজানো হয়েছে। প্রয়োজনমাফিক কিছু পরিবর্তনও করা হয়েছে। প্রতিমাতেও রয়েছে ওড়িশার শিল্পের ছোঁয়া। মণ্ডপে থাকছে ওড়িশার খোর্দা জেলার মুলাঝারিগঢ় গ্রামের দেবী উগ্রতারার মূর্তি। থাকছে কটকে মহানদীর তীরে অবস্থিত কটক চণ্ডীর মূর্তিও। রথের চাকা, কাঠামো ও ঘোড়া তৈরি করতে যথেষ্ট সময় লেগেছে বলে জানান মৃৎশিল্পী অশোক সূত্রধর।
বিষ্ণুপুর দলমাদল সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এ বার ডোকরা শিল্পের প্রসারে বিকনার শিল্পডাঙাকেই যেন তুলে এনেছে। ডোকরা মূর্তির আদলে প্রায় ৩০ ফুট উঁচু প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। মণ্ডপ চত্বরে দর্শকদের দেখানো হবে ডোকরা সামগ্রী তৈরির কৌশল। পুজো কমিটির তরফে আশিস রায় বলেন, ‘‘বিকনার ডোকরা শিল্পীদের একাংশের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। শিল্প সামগ্রীর প্রচারের আরও প্রয়োজন। ওই শিল্প ও শিল্পীদের বাঁচিয়ে রাখতেই এই থিম।’’
বিষ্ণুপুর ৩ নম্বর ওয়ার্ড সর্বজনীন কমিটি মণ্ডপ তৈরি হয়েছে দুবাইয়ের বুর্জ খলিফার আদলে। ৮৫ ফুট উচ্চতার মণ্ডপ। উচ্চতম মণ্ডপের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে একাধিকবার পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকেরা পরিদর্শন করেছেন। কমিটির তরফে সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিশ্বের উচ্চতম ভবনই এ বারের চমক।’’
দক্ষিণ বৈলাপাড়ার নবরূপা সর্বজনীন পুজো কমিটির থিম ‘অধিকার’। মণ্ডপে জুড়ে রয়েছে অরণ্যের পরিবেশে বেড়ে ওঠা বিশেষ উপজাতির ইতিকথা। যাঁরা সমাজের আনন্দ উৎসব থেকে বঞ্চিত। যাঁদের কাছে ‘অধিকার’ শব্দটার কোনও অর্থ হয় না। তাঁদের নিয়েই এ বারের মণ্ডপ। এমনটাই জানাচ্ছেন কমিটির সম্পাদক কৌশিক পাল। তিলবাড়ি সর্বজনীন পুজো কমিটি বরাবর হারিয়ে যাওয়া শিল্পকেই তাঁদের পুজোর থিম হিসেবে তুলে ধরে। তাদের এ বছরের থিম ‘যাত্রাশিল্প’। ইন্টারনেটের দুনিয়ায় হারাতে বসেছে যাত্রাশিল্প, ধুঁকছেন যাত্রাশিল্পীরা। সেই সমস্যাকেই তুলে ধরা হয়েছে পুজো মণ্ডপে।
শালবাগান পুজো কমিটি থিম ‘সৃষ্টি ও বিবর্তনের ধারা, আমাদের এই বসুন্ধরা’। জীবকূলের বিবর্তনের পর্যায়গুলি তুলে ধরা হয়েছে মণ্ডপে। পরিবেশ বান্ধব উপাদান বাঁশ, মাটি, পাটের বস্তা ও কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে মণ্ডপ সজ্জায়। দক্ষিণ ভারতের শিব মন্দিরের আদলে নির্মিত হচ্ছে বিষ্ণুপুর সেনহাটি সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির মণ্ডপ। পাঁচমুড়ার পোড়ামাটির শিল্পের প্রচার ও প্রসারে মণ্ডপ তৈরি করেছে ময়রাপুকুর পুজো কমিটি। রসিকগঞ্জ পুজো কমিটির থিম ‘চন্দ্রযান ৩’। আলো ও শব্দ সহযোগে সেজে উঠেছে মণ্ডপ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy