পথকুকুরদের মারধরের প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রাণ গেল এক প্রৌঢ়ের। মঙ্গলবার রাতে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণগঞ্জ এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সুদিন পাল (৫০)। হামলাকারীদের লাঠির আঘাতে আহত হয়েছেন মৃতের ভাই বালুচরি শিল্পী অমিতাভ পালও। ঘটনায় বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ স্থানীয় দুই যুবককে আটক করেছে।
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণগঞ্জ গড়গড়ান এলাকার বাসিন্দা অমিতাভ পাল নামী বালুচরি শিল্পী। স্থানীয়েরা জানান,অমিতাভ এবং সুদিন দুই ভাইই নিয়মিত এলাকার পথকুকুরদের খেতে দিতেন। কোনও কুকুর অসুস্থ হলে তাদের শুশ্রূষাও করতেন তারা। এ নিয়ে এলাকাবাসীদের অনেকের সঙ্গেই দুই ভাইয়ের বিবাদ। মঙ্গলবার রাতে অমিতাভ গাজন দেখে বাড়ি ফেরার পথে দেখেন, কয়েকটি পথকুকুরকে মারধর করছেন স্থানীয় দুই যুবক। বিষয়টি চোখে পড়তেই প্রতিবাদ করেন অমিতাভ। আর এতেই ওই দুই যুবক শিল্পীর উপর আক্রমণ চালায়। অভিযোগ, তাঁকে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। বিষয়টি নজরে আসতেই হামলাকারীদের বাধা দিতে যান অমিতাভর দাদা সুদিন। তাঁকেও মারধর করা হয়। সেই সময় সেখান থেকে কোনও ক্রমে পালিয়ে বিষ্ণুপুর থানায় যান অমিতাভ। ফেরার সময়ে দেখেন, রাস্তার উপর অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন সুদিন। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা সুদিনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অমিতাভ বলেন, ‘‘আমি আর আমার দাদা দীর্ঘ দিন ধরে নিয়মিত পথকুকুরদের খাবার দিয়ে আসছি। এতে অনেকেরই ক্ষিপ্ত। মঙ্গলবার রাতে আমরা গাজন দেখে বাড়ি ফেরার পথে দেখি, দু’জন কয়েকটা কুকুরকে মারছে। প্রতিবাদ করাতেই বচসা বাধে। পরে তারা ইট দিয়ে দাদার বুকে সজোরে আঘাত করে। সেই আঘাতেই দাদার মৃত্যু হয়েছে। আমরা ওই দুই যুবকের কঠোর শাস্তি চাই।’’
বিষ্ণুপুরের এসডিপিও সুপ্রকাশ দাস বলেন, ‘‘দুই অভিযুক্ত যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি এলাকায় থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’’