Advertisement
E-Paper

বিদ্যুতের অভাবে বন্ধ সেচ প্রকল্প, সঙ্কটে চাষিরা

প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলাধারের স্বার্থে জেলার বেশ কিছু এলাকার চাষিদের সেচখালে জলের দাবি ছেড়ে দিতে হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৫৩
 বিকল: অব্যবহারে জীর্ণ সেচ প্রকল্পের যন্ত্র। ময়ূরেশ্বরে। নিজস্ব চিত্র

বিকল: অব্যবহারে জীর্ণ সেচ প্রকল্পের যন্ত্র। ময়ূরেশ্বরে। নিজস্ব চিত্র

বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ময়ূরেশ্বর থানা এলাকার একটি সরকারি সেচ প্রকল্প। তার জেরে প্রায় এক হাজার বিঘা জমিতে সেচের সুযোগ হারচ্ছেন স্থানীয় চাষিরা। অব্যবহৃত থেকে সেচ প্রকল্পের মূল্যবান যন্ত্রাংশ বিকল হতে বসেছে। প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।

প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলাধারের স্বার্থে জেলার বেশ কিছু এলাকার চাষিদের সেচখালে জলের দাবি ছেড়ে দিতে হয়েছিল। পরিবর্তে প্রশাসন ওই সব এলাকায় গভীর নলকূপ বা সাবমার্সিবল পাম্পের মতো ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প থেকে সেচের জলের বিকল্প ব্যবস্থার

আশ্বাস দেয়। সেই মতো ১৯৯৭-৯৮ সালে ‘পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের’ (পিডিসিএল) অর্থানুকুল্যে জেলা সেচ দফতরের তত্ত্বাবধানে ময়ূরেশ্বরের বড়ডিবুর মৌজায় একটি গভীর নলকূপ বসানো হয়।

ওই নলকূপ থেকে বড়ডিবুর, গুনুর, ষাটপলশা-সহ কয়েকটি মৌজার হাজার বিঘার বেশি জমিতে সেচের জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়। অভিযোগ, কয়েক বছরের মধ্যেই রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতির অভাবে ওই সেচ প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী কালে প্রশাসনিক উদ্যোগে ওই সেচ প্রকল্প সংস্কারের ব্যবস্থা হলেও, বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে চালু করা যায়নি। দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহার এবং রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে ওই সেচ প্রকল্পের অস্তিত্বই বিলুপ্ত হতে বসেছে বলে এলাকাবাসীর বক্তব্য।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রকল্পের জন্য একটি ২৫ কিলোভোল্টের ট্রান্সফর্মার ছিল। কিন্তু প্রকল্প বিকল থাকার সময় বিদ্যুৎ দফতর ওই ট্রান্সফর্মার থেকে অন্য জায়গায় সংযোগ দিয়ে দেয়। বর্তমানে ওই সব সংযোগের চাহিদা মেটানোর পরে ওই ট্রান্সফর্মারের পক্ষে সেচ প্রকল্পে বিদ্যুৎ জোগানের অতিরিক্ত ক্ষমতা নেই। বিদ্যুৎ দফতর বিকল্প বা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সফর্মার দেয়নি বলেও অভিযোগ।

রমাপতি দাস, ভূদেব বাগদির মতো এলাকাবাসীর বক্তব্য, ‘‘এলাকায় অধিকাংশই ক্ষুদ্র চাষি। নিজেদের খরচে সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে সেচের সংস্থান করা তাই সম্ভব নয়। চড়া দামে অন্যের থেকে জল কিনেও খরচে পোষাবে না। তাই অনেকের তিনফসলি জমি এক বার চাষের পরে অনাবাদী পড়ে থাকে। ওই সেচ প্রকল্প চালু থাকাকালীন বছরে তিন বার চাষ হয়েছে।’

ষাটপলশা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ঈশ্বর পাত্রের মতে, এক সময় ওই সেচ প্রকল্পই এলাকার চাষিদের বাঁচিয়ে রেখেছিল। কিন্তু বামফ্রন্ট সরকারের উদাসীনতায় ওই প্রকল্পের অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে পড়ে। এ নিয়ে উর্ধত্বন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

ময়ূরেশ্বর গ্রুপ ইলেকট্রিক সাপ্লাইয়ের স্টেশন ম্যানেজার রাজেন্দ্র পাল বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। চাষিরা লিখিত ভাবে দাবি জানালে খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।’’ একই প্রতিক্রিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর। তিনি জানান, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ওই সেচ প্রকল্পটি কী অবস্থায় রয়েছে জেনে এবং সেটির ইতিবাচক দিক খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Irrigation Farmers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy