Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Fire

Fire: ঘিঞ্জি এলাকায় গেঞ্জি কারখানায় রাতে অগ্নিকাণ্ড

ক্ষতির পরে কাজের কী হবে, চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন শ্রমিকেরা।

জ্বলে ছাই: বিষ্ণুপুরের বুড়াশিবতলা এলাকায়।

জ্বলে ছাই: বিষ্ণুপুরের বুড়াশিবতলা এলাকায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২১ ০৫:৪৯
Share: Save:

আগুনে পুড়ে গেল কারখানায় তৈরি হওয়া প্রচুর গেঞ্জি। বাদ গেল না বারান্দায় থাকা সেলাই করার যন্ত্রপাতিও। সোমবার রাত সোয়া ২টো নাগাদ বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বুড়াশিবতলা এলাকায় গেঞ্জি কারখানার দোতলার অনেকখানি পুড়ে যায়। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ওই কারখানায় আগুন লাগায় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। দমকলের একটি ইঞ্জিন প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে কারখানায় কাজ বন্ধ ছিল। এক সিভিক ভলান্টিয়ার কাজ সেরে কারখানার পাশের রাস্তা গিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁর নজরে আসে গেঞ্জি কারখানা থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে কারখানা মালিকের বাড়িতে খবর দেন। তাঁদের চিৎকারে পড়শিদের ঘুম ভেঙে যায়। আশপাশে অনেক বাড়ি থাকায় বাসিন্দারা ভয় পেয়ে যান। আগুন নেভাতে সবাই ছুটে যান। সামনের পার্কের সাব-মার্সিবল পাম্প চালিয়ে জল তুলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন স্থানীয় মানুষজন। খবর দেওয়া হয় বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থায় ও দমকল কেন্দ্রে।

রাস্তা সরু হওয়ায় ঘটনাস্থল পর্যন্ত দমকলের ইঞ্জিন নিয়ে যেতে কার্যত কালঘাম ছুটে যায় দমকল কর্মীদের। তাঁরা পৌঁছেই আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। পরে, বিদ্যুৎ দফতরে কর্মীরা গিয়ে কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসায় নীচের তলার অফিস ও গুদামঘর রক্ষা পেয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা গণেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এত বড় আগুন লাগায় আমরা সবাই আতঙ্কে পড়ে গিয়েছিলাম। আগুন ছড়িয়ে পড়লে খুব বড় বিপদ হয়ে যেত।’’ স্থানীয় বাসিন্দা অতনু দাসের আক্ষেপ, ‘‘রাস্তা চওড়া হলে দমকলের বড় ইঞ্জিন ঢুকলে আরও আগে আগুন নেভানো যেতে পারত।’’

মঙ্গলবার ভোরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, চার পাশে জল আর বালি। দোতলায় উঠে দেখা যায়, চার পাশে পোড়া গন্ধ। তেতে রয়েছে পাকা দেওয়াল। কাঠের দরজা পুড়ে ছাই। জানলার কাচ ভেঙে পড়েছে। গ্রিল গিয়েছে বেঁকে। ঘরের মেঝেতে পড়ে পোড়া ও আধপোড়া বিভিন্ন মাপের গেঞ্জি ও প্যান্ট। বারান্দায় থাকা কয়েকটি সেলাই মেশিন আধপোড়া অবস্থায় পড়ে।

গেঞ্জি কারখানার মালিক মাঝ বয়সী মলয় কুণ্ডু কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে বলেন, ‘‘সোমবার রাত ৯টা পর্যন্ত এখানে শ্রমিকেরা গেঞ্জি প্যাকেটে ভরেছেন। আমরা কয়েকজন রাত্রি ১০টা পর্যন্ত কাজ করে বাড়ি ফিরি। বেশ কয়েক লক্ষ টাকার গেঞ্জি ও প্যান্ট তৈরি করা ছিল। দু’-এক দিনের মধ্যেই সেগুলো বাজারে পাঠানো হত। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যে সব পুড়ে ছাই হয়ে যাবে ভাবতে পারিনি। রাতে কারখানায় লোক থাকলে হয়তো, অগ্নিকাণ্ডের কথা গোড়াতেই তা জানা যেত। কপাল ভাল নীচের ঘরের কাঁচামাল বাঁচানো গিয়েছে।’’ ওই কারখানার বিভিন্ন কাজে ৩০ জন যুক্ত। করোনা পরিস্থিতিতে বাজার মন্দা থাকলেও কোনও রকমে কাজ চলছিল। কিন্তু এই ক্ষতির পরে কাজের কী হবে, চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন শ্রমিকেরা।

ঘটনাস্থলে গিয়েছিল বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কারখানার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হতে পারে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বিষ্ণুপুর দমকল কেন্দ্রের অফিসার ইনচার্জ পঙ্কজ চৌধুরী বলেন, “প্রাথমিক ভাবে অনুমান, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা-ও দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE