Advertisement
E-Paper

বহু এলাকা জলে ডুবে পুরুলিয়ায়

কৃষি দফতর জানিয়েছে, রবিবার ও সোমবার তুমুল বৃষ্টি হয়েছে, কাশীপুর (৩৩০.২ মিমি), পাড়া ৩০০.৮ মিমি), পুরুলিয়া (২৪৯.৪ মিমি), নিতুড়িয়া (২৫২.২ মিমি), বলরামপুর (১৯৯.৫ মিমি) ব্লকগুলিতে। অন্যান্য ব্লকেও কম বৃষ্টি হয়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ০২:৩১
ডুবে পুরুলিয়া-চন্দনকিয়ারি রাস্তা, ঘোঙ্গা গ্রামের কাছে। ছবি :সুজিত মাহাতো।

ডুবে পুরুলিয়া-চন্দনকিয়ারি রাস্তা, ঘোঙ্গা গ্রামের কাছে। ছবি :সুজিত মাহাতো।

সাম্প্রতিক কালের সব রের্কড ছাপিয়ে বৃষ্টিতে ভিজল পুরুলিয়া। যার জেরে রুখা জেলা পুরুলিয়ারও বিভিন্ন এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল। টানা বৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন এলাকার কজওয়ে ও সেতু জলের তলায় চলে গিয়েছে। সে জন্য মঙ্গলবার জেলার বেশ কয়েকটি রুটে যান চলেনি। জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘টানা বৃষ্টির জেরে জনজীবন বিপর্যস্ত। জলের তোড়ে রাস্তা ধুয়ে যাওয়ায় ও কয়েকটি কজওয়ে জলের তলায় থাকায় কিছু রুটে যান চলতে পারেনি। প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। জেলা সদর ও সব ব্লকে ‘কন্ট্রোলরুম’ খোলা হয়েছে।’’

কৃষি দফতর জানিয়েছে, রবিবার ও সোমবার তুমুল বৃষ্টি হয়েছে, কাশীপুর (৩৩০.২ মিমি), পাড়া ৩০০.৮ মিমি), পুরুলিয়া (২৪৯.৪ মিমি), নিতুড়িয়া (২৫২.২ মিমি), বলরামপুর (১৯৯.৫ মিমি) ব্লকগুলিতে। অন্যান্য ব্লকেও কম বৃষ্টি হয়নি।

মানবাজার-পুঞ্চা রাস্তায় পুঞ্চার কাছে নির্মীয়মাণ কালভার্টের পাশের বিকল্প রাস্তা জোড়ের জলে ডুবে গিয়েছে। রবিবার সকালে এই রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে কিছু গাড়ি পারাপার করলেও সোমবার দুপুরের পর থেকে সব গাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এতে বলরামপুর, বরাবাজার, বান্দোয়ান, মানবাজার থেকে পুঞ্চা হয়ে বাঁকুড়া যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে বরাবাজার ও বান্দোয়ান থেকে পুঞ্চা হয়ে কলকাতা যাওয়ার বাসও বন্ধ রয়েছে। ওই বাসের মালিক মনোজ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অত জলের মধ্যে বাস নিয়ে যাব কী করে?’’

এ দিন মঙ্গলবার দুপুরে মানবাজার ও পুঞ্চার বিডিও-দের নিয়ে মহকুমাশাসক (মানবাজার) সঞ্জয় পাল ওই এলাকা পরিদর্শনে যান। তিনি বলেন, ‘‘পুঞ্চা-মানবাজার সড়কে এই বিকল্প রাস্তা জলের তলায় থাকায় স্বাভাবিক যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে। দ্রুত মেরামতির জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বলা হয়েছে।’’ তিনি জানান, জল কমলেই কজওয়ে দিয়ে যাতায়াত স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

বরাবাজার থেকে মানবাজারের রাস্তায় বরাবাজারের নেংসাই নদীতে জলস্ফীতি ঘটায় বাল্লার ঘাটের কজওয়ে উপচে জল বইছে। বিডিও (বরাবাজার) শৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে যাতে কেউ পারাপারের চেষ্টা না করেন, সে জন্য আপাতত ওই রাস্তা ‘সিল’ করে দেওয়া হচ্ছে। তবে বাইপাস থাকায় মানবাজার-বরাবাজার যোগাযোগ বন্ধ হবে না।’’

বোরো থানার মানবাজার-বান্দোয়ান রাস্তায় খড়িদুয়ারা থেকে দিঘি যাওয়ার পথে একটি কজওয়ে ডুবে গিয়েছে। ওই থানারই বোরো থেকে জয়পুর হয়ে কুইলাপালের রাস্তায় জয়পুর গ্রামের কজওয়ে জলের তলায় চলে গিয়েছে। ফলে এই রাস্তায় যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। বান্দোয়ান-কুইলাপাল রাস্তায় স্থানীয় একটি খালের জল উপচে কজওয়ের উপর গিয়ে বয়ে যাওয়ায় এই রাস্তাতেও ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন পারাপার করেছে। মানবাজার ও কেন্দা থানার সীমানায় চাকা নদীর উপর জল বইতে শুরু করায় মানবাজারের বামনি-মাঝিহিড়া অঞ্চল দিয়ে পুরুলিয়া যাওয়ার রাস্তা এখন বন্ধ।

দু’দিন ধরে বিচ্ছিন্ন কাশীপুর-বাঁকুড়া রুট। এই পথের ডাংরা নদীর সেতু জলের তলায় থাকায় কোনও যানই চলছে না। ইন্দ্রবিল-মণিহারা ও ইন্দ্রবিল-কেতনকিয়ারি রাস্তায় এই নদীর দু’টি সেতু জলে ডুবে থাকায় যান বন্ধ। রবিবারই ভেঙে পড়ে রঞ্জনডি জলাধারের পাড়ের রাস্তা। বিচ্ছিন্ন রয়েছে রঞ্জনডি গ্রাম। কাশীপুর-সোনাথলি রুটের দুধিভেরিয়া সেতুও রবিবার থেকে জলের তলায়। এলাকার বাসিন্দা কাঞ্চন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বহু সেতু ও কালভার্ট জলের তলায় থাকায় পুরোপুরি বিপর্যস্ত আমরা।’’ কাশীপুর-বাঁকুড়া সড়কের মাজরামুড়া গ্রামের অদূরে কজওয়ে জলের তলায় চলে যাওয়াতে কাশীপুরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কালীদহ, মণিহারা, বড়রা ও গৌরাঙ্গডি পঞ্চায়েতের।

সাঁতুড়ি ব্লকের গড়শিকা পঞ্চায়েতের মাটিদুন্দরা যাওয়ার রাস্তার উপরে কালভার্টের একাংশ ভেঙে পড়েছে। রঘুনাথপুর মহকুমার ছ’টি ব্লক থেকে পুরো ও আংশিক মিলিয়ে শতাধিক বাড়ি ভেঙেছে বলে জানান মহকুমাশাসক দেবময় চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, ব্লকগুলিকে ত্রিপল পাঠানো ও ত্রাণের ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঝালদা ১ ব্লকের শালদহ নদীতে জল বাড়ায় তুলিনের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন মাঘা, দড়পা, চাঁদাই, বামুনডি, মহুলডি প্রভৃতি গ্রাম। এই নদীতে সেতু থাকলেও সংযোগকারী রাস্তা না থাকায় বিপাকে বাসিন্দারা। পুরুলিয়া ২ ব্লকের ঘোঙা গ্রামের অদূরে ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া একটি জোড়ের কজওয়ে জলমগ্ন। অযোধ্যাপাহাড়ের মুখে বান্দু নদীর কজওয়েতে জল বইছে।

জেলা বাসমালিক সমিতির সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘বাইরের জেলাগুলি থেকে অনেক বাসই ঢুকতে পারেনি। জেলার বিভিন্ন রুটে হাতে গোনা বাস চলছে।’’ ো

Heavy Rain Flood Weather Climate মানবাজার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy