Advertisement
০৩ মে ২০২৪

টেন্ডার ফর্ম নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৃণমূলে

পঞ্চায়েতে টেন্ডার ফর্ম তোলাকে কেন্দ্র করে শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদে এ বার তেতে উঠল পাত্রসায়র থানার বেতুড় এলাকা। টেন্ডার ফর্ম তোলার সময় বুধবার স্থানীয় এক ঠিকাদারকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বিউর-বেতুড় পঞ্চায়েতে উত্তেজনা ছড়ায়। গণ্ডগোলের আঁচ করে পুলিশ আগে থেকেই ছিল। তারাই লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৫ ০১:৩২
Share: Save:

পঞ্চায়েতে টেন্ডার ফর্ম তোলাকে কেন্দ্র করে শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদে এ বার তেতে উঠল পাত্রসায়র থানার বেতুড় এলাকা। টেন্ডার ফর্ম তোলার সময় বুধবার স্থানীয় এক ঠিকাদারকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বিউর-বেতুড় পঞ্চায়েতে উত্তেজনা ছড়ায়। গণ্ডগোলের আঁচ করে পুলিশ আগে থেকেই ছিল। তারাই লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

উত্তেজনা এতটাই ছড়িয়েছিল যে এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) জে মারসিকে পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত এলাকায় পুলিশের টহলদারি চলে। এসডিপিও বলেন, “পঞ্চায়েতে টেন্ডার নিয়ে সামান্য গণ্ডগোল হয়েছিল। বেশ কিছু মানুষ পঞ্চায়েতের আশেপাশে জড়ো হয়েছিলেন। আগে থেকেই এলাকায় পুলিশ থাকায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গিয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত।”

গত শুক্রবার পাত্রসায়র পঞ্চায়েতে টেন্ডার ফর্ম তোলাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দু’পক্ষের বিরুদ্ধেই ঠিকাদারদেরকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তারই জেরে তৃণমূল নেতা জিয়ারুল ইসলামের গোষ্ঠীর লোকেদের ধরার দাবিতে থানায় গিয়ে ডিউটি অফিসার অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর সুকান্ত দাস দে-কে মারধর, ভাঙচুর এবং থানার ওসি রামনারায়ণ পালকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে আর এক নেতা গোপে দত্তের বিরুদ্ধে। ঘটনার পরেই তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য-সহ ২৪ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। যদিও প্রধান অভিযুক্ত গোপে এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাঁকে ধরেনি। বাকি অভিযুক্তেরাও ধরা পড়েনি।

সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এ দিন বেতুড় পঞ্চায়েতে টেন্ডার ফর্ম তোলাকে ঘিরে ফের উত্তেজনা ছড়ায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন টেন্ডার ফর্ম তোলার তারিখ ছিল। নিজেদের পছন্দের ঠিকাদারেরা যাতে কাজ পান, তার বন্দোবস্ত করতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীই এলাকায় জমায়েত করে। দলের একাংশের অভিযোগ, দুপুর ২টো নাগাদ পঞ্চায়েত থেকে ফর্ম নিয়ে ফিরছিলেন বিউরের বাসিন্দা এক ঠিকাদার। সেই সময় কয়েকজন তাঁকে হুমকি দেন। এর পরেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। পুলিশ রীতিমতো লাঠি উঁচিয়ে জমায়েত করে থাকা লোকজনকে তাড়া করে। তৃণমূল কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।

বিউর-বেতুড় পঞ্চায়েতে বর্তমানে ক্ষমতাসীন পাত্রসায়র ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়ের অনুগামীরাই। ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হারাধন মল্লিকের অভিযোগ, “নিজেদের পছন্দমতো ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য অন্য ঠিকাদারদের টেন্ডার ফর্ম তুলতে বাধা দিয়েছিলেন কয়েকজন। তাঁদের সেই বাধা উপেক্ষা করেই ঠিকাদারেরা ফর্ম তুলছিলেন। সেই সময় কয়েকজন পঞ্চায়েতে এসে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।” বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাটমানি পাওয়ার জন্যই তাঁদের টেন্ডার পাইয়ে দিতে পাত্রসায়রে শাসকদলের কিছু নেতার এত সক্রিয়তা। তৃণমূলের ব্লক নেতা শেখ হিরুও স্বীকার করেছেন, “টেন্ডার প্রক্রিয়া বানচাল করতে দলের কিছু লোকজন প্রকাশ্যে যা করছেন, তাতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জেলা নেতৃত্ব এখনই কড়া পদক্ষেপ না করলে দলের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tender form patrasayar tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE