সম্প্রীতির পুজো পাণ্ডুয়া গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুজোর মণ্ডপ তৈরিতে সবার সঙ্গে তদারকি করছেন গ্রামের ইমাম বদরুদ্দিন শেখ। পুজোর শোভাযাত্রার প্রস্তুতিতে বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন মরিয়ম বিবি, শ্যামলী পালেরা। পাত্রসায়রের কুশদ্বীপ পঞ্চায়েতের পাণ্ডুয়া গ্রাম ষোলোআনা ও যুবগোষ্ঠীর পুজোতে মেতে উঠেছেন গ্রামের সব সম্প্রদায়ের মানুষ।
পুজো কমিটির আহ্বায়ক (প্রশাসন) সাজাহান মিদ্যা বলেন, ‘‘বাঙালির অন্যতম বড় উৎসব দুর্গাপুজো। কিন্তু আমাদের গ্রামে দুর্গাপুজো ছিল না। সারা দেশ যখন শারদোৎসবে মাতোয়ারা, তখন আমাদের গ্রাম খাঁ খাঁ করত। তাই সব ধর্মের মানুষ একত্রিত হয়ে তিন বছর আগে দুর্গাপুজো শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’
পুজো কমিটির সভাপতি অসিত নন্দী জানান, পাণ্ডুয়া গ্রামে হিন্দু, মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের বাস। গ্রামের উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এই উৎসবে যোগ দেন।’’
শুধু হিন্দুদের বাড়িতেই নয়, পুজো দেখতে মরিয়ম বিবিদের বাড়িতেও আত্মীয়স্বজনেরা আসেন। তাই বাজার বেরিয়েছিলেন মরিয়ম বিবি। তিনি বলেন, ‘‘আগে আমাদের গ্রাম পুজোর সময় সুনসান থাকত। এখন গ্রামের সবার বাড়িতেই পুজো দেখতে আত্মীয়স্বজন আসেন। সবাই নতুন জামাকাপড় পরে উৎসবের যোগ দেন। এখন পুজোকে ঘিরে এই ক’দিনে গ্রামের সবাই আনন্দে মেতে উঠি।’’
এক সঙ্গে পুজোর ফলের বাজার করতে বিষ্ণুপুর যান সনৎ চক্রবর্তী, আজাদ মিদ্যা। পুজো কমিটির সম্পাদক দীনবন্ধু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দুর্গোৎসব এখন গ্রামের অন্যতম প্রধান উৎসব হয়ে উঠেছে। উৎসব পরিচালনার বিভিন্ন কাজ সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে করি।’’
মণ্ডপ সজ্জার দায়িত্বে থাকা অঞ্জলি নন্দী, আহেলা বিবি বলেন, ‘‘এ বার বৃষ্টিতে অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। তাই দিনরাত এক করে কাজ চলছে। এখন নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই।’’ বিসর্জনের শোভাযাত্রার দায়িত্বে থাকা রমজান আলি খান, সন্দীপ দে জানান, শোভাযাত্রায় যাতে অপ্রীতিকর কিছু না ঘটে, সে দিকে তাদের কড়া নজর রাখতে হয়। কারণ শোভাযাত্রায় বাড়ির মেয়ে-বউরাও থাকেন। গ্রামের সবাই মিলে যে এক পরিবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy