অনুষ্ঠান: জয়চণ্ডী পর্যটন উৎসবের উদ্বোধনে। নিজস্ব চিত্র
জয়চণ্ডী পর্যটন উৎসবকে ‘জাতীয় উৎসব’-র স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি উঠল। বৃহস্পতিবার এই দাবিকে সামনেই সূচনা হল জয়চণ্ডী পর্যটন উৎসব।
গত ১২ বছর ধরে জয়চণ্ডী পাহাড়ের কোলে সাফল্যের সঙ্গে এই উৎসব হয়ে যাচ্ছে। এই উৎসব ঘিরে শুধু রঘুনাথপুর নয়, সারা জেলারই আবেগ জড়িয়ে রয়েছে বলেই দাবি করে ওই স্বীকৃতি চাইছেন মেলা কমিটি। উৎসব কমিটির সভাপতি বিষ্ণুচরণ মেহেতা, কর্মকর্তা সুকুমার মণ্ডলদের দাবি, ‘‘উৎসব শুরু হওয়ার পরেই জয়চণ্ডী পাহাড় ঘিরে পর্যটনের বিকাশ ঘটেছে। বছরের শেষে পাঁচ দিনের উৎসবে কয়েক হাজার মানুষ সামিল হচ্ছেন। তাই এই পর্যটন উৎসবকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেওয়া হোক।’’
সায় দিয়েছেন মেলা কমিটির অন্য কর্মকর্তারাও। রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি আশ্বাস দিয়েছেন, রাজ্য সরকারের মাধ্যমে কেন্দ্রের কাছে জয়চণ্ডী উৎসবকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানাবেন।
এ বছর জয়চণ্ডী পর্যটন উৎসব হবে কি না, তা নিয়ে গোড়াতেই সংশয়ের মেঘ ঘনিয়েছিল। পুরনো কমিটি ভাঙার পরে ওই কমিটির সম্পাদক তথা পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায় উৎসব করার ব্যাপারে নিজে বিশেষ আগ্রহী ছিলেন না। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছিলেন, উৎসবের দায়িত্ব এ বার অন্যেরা নিক। পুরসভা অবশ্য সব রকম ভাবে সাহায্য করবে। সেই সময়ে এগিয়ে আসেন কংগ্রেস কাউন্সিলর মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। বাসিন্দাদের উৎসব নিয়ে আগ্রহ দেখে আসরে নামে তৃণমূলও। শেষ পর্যন্ত জড়তা কাটিয়ে উৎসবে সক্রিয় ভূমিকা নেন পুরপ্রধান।
বৃহস্পতিবার উৎসবের উদ্বোধনে দেখা গিয়েছে, মাইক হাতে নিয়ে অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করছেন পুরপ্রধান। ছিলেন তৃণমূলের দুই মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, শ্যামল সাঁতরা, সাংসদ মৃগাঙ্ক মাহাতো। এসেছিলেন কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা উৎসব কমিটির সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীও। তিনি বলেন, ‘‘সংশয় কাটিয়ে সবার সাহায্যে উৎসব শুরু হয়েছে। এলাকাবাসী চাইছেন, উৎসবের উন্নতি হোক। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উৎসবের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিক।”
১২ বছর আগে বাম আমলে জয়চণ্ডী পাহাড়কে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ার লক্ষ্যে এই উৎসবের শুরু হয়েছিল। এলাকার সাংসদ বাসুদেব আচারিয়ার উদ্যেগে উৎসব শুরু হলেও জয়চণ্ডীতে পর্যটনের বিকাশ কিন্তু হয়েছে রাজ্যে পালাবদলের পরেই।
এ দিন অনুষ্ঠানে জয়চণ্ডীতে পর্যটনের বিকাশের প্রসঙ্গ তুলে দুই মন্ত্রী দাবি করেছেন, ‘‘পুরুলিয়া, বাকুঁড়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে প্রচুর পর্যটক এই এলাকায় আসেন। দুই জেলার পর্যটনের বিকাশের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী এই এলাকায় পর্যটন সার্কিট গড়েছেন।’’
শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘পুরুলিয়ার অযোধ্যা, মাঝে জয়চণ্ডী ও বর্ধমান সীমান্তের গড়পঞ্চকোট পাহাড়কে ঘিরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ট্যুরিজম সার্কিট তৈরি হয়েছে। এই তিন এলাকায় পর্যটকদের সংখ্যা বহুগুন বেড়েছে। এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে পর্যটনকে ঘিরে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy