Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
কর্তার কাছে অভিযোগ

বিদ্যুৎ নেই, ক্ষোভ খয়রাশোলের গ্রামে

গত সাত দিন ধরে এলাকার বিদ্যুৎ পরিষেবা তলানিতে। তার উপরে রয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ঠিকদার সংস্থার কর্মীদের প্রতি দু্র্ব্যবহারের অভিযোগ। অতিষ্ঠ গ্রামবাসী শেষমেশ দ্বারস্থ হলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়রের। পরিষেবা উন্নত করার দাবিতে দিলেন স্মারকলিপিও। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে খয়রাশোলের বিদ্যুৎ দফতরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খয়রাশোল শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৬ ০৬:৪৯
Share: Save:

গত সাত দিন ধরে এলাকার বিদ্যুৎ পরিষেবা তলানিতে। তার উপরে রয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ঠিকদার সংস্থার কর্মীদের প্রতি দু্র্ব্যবহারের অভিযোগ। অতিষ্ঠ গ্রামবাসী শেষমেশ দ্বারস্থ হলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়রের। পরিষেবা উন্নত করার দাবিতে দিলেন স্মারকলিপিও। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে খয়রাশোলের বিদ্যুৎ দফতরে। স্মারকলিপি দেন খয়রাশোলের বড়রা গ্রামের বাসিন্দারা। যাতে সই করেছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর বর্ষার সময় ওই এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা বিঘ্নিত হয়। তবে, এ বার তার মাত্রা অনেকাংশেই ছাড়িয়ে গিয়েছে। স্মারকলিপি দিতে আসা সুদীপ্ত মিত্র, আনসারুল হক, পূর্ণানন্দ মিশ্রদের দাবি, ‘‘গত এক সপ্তাহ ধরে দিনে ৩-৪ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। এক বার বৃষ্টি বা ঝড় উঠলেই বিদ্যুৎ সংযোগ চলে যাচ্ছে। তা সারাতেই বেশ কয়েক ঘণ্টা গড়িয়ে যাচ্ছে।’’ তীব্র গরমের সঙ্গে টানা এই বিদ্যুৎ-বিভ্রাট স্কুল, কলেজের পড়ুয়া থেকে রোগী সকলেরই সমস্যা বাড়িয়েছে। অভিযোগ যে সত্যি, তা জানিয়েছেন বড়রা পঞ্চায়েতের প্রধান নিরঞ্জন মাজিও। স্থানীয় বাসিন্দাদের আরও দাবি, শুধু বড়রা গ্রাম নয়, বাবুইজোড় ফি়ডারের উপর নির্ভলশীল সব ক’টি গ্রামেরই এক হাল। ভাদুলিয়া, নওপাড়া, বাতাসপুর, কৈথি-বড়রা, কাঁকরতলা, পেঁচালিয়া বাবুইজোড়-সহ বহু গ্রামের মানুষই দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন। আর এই দুর্ভোগের কথা জানাতে গিয়েই ঠিকাদার সংস্থার কর্মীদের কাছে দুর্ব্যবহার পেতে হচ্ছে বলেও তাঁদের অভিযোগ।

অভিযোগের সত্যতা রয়েছে বলে মেনে নিয়ে নিয়েছেন খয়রাশোলের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র শৌভিক মণ্ডল। তবে, পরিষেবা স্বাভাবিক ভাবে চালাতে বেশ কিছু ক্ষেত্রে সমস্যার কথাও বলছেন ওই আধিকারিক। শৌভিকবাবুর দাবি, ‘‘বর্ষার সময় বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার মূলে রয়েছে বজ্রপাত। কিন্তু সেটা ঠেকাতে ১১ হাজার কেভি লাইনের প্রতিটি বিদ্যুৎ খুঁটির নীচে থাকে আর্থিং ব্যবস্থা। সেই আর্থিংয়ের সামগ্রীই প্রায় চুরি হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বাজ পড়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার ঘটনা আটকানো যাচ্ছে না।’’

দফতরের ওই আধিকারিক আরও জানাচ্ছেন, শুধু আর্থিংয়ের সামগ্রী চুরি করাই নয়, হাইটেনশন লাইনের উপর ইচ্ছাকৃত ভাবে গাছ ফেলে অথবা গাছ পড়ে গেলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হলেই চোরেরা লম্বা তার চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। যার ফলেই এই দুর্ভোগ। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি বলে শৌভিকবাবুর ক্ষোভ। তবে, এ বার নতুন করে আর্থিং করিয়ে স্থানীয় প্রাশসন ও গ্রামবাসীদের সহযোগিতা চাওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা। ঠিকাদারদের আওতায় থাকা কর্মীদের দুর্ব্যহারের প্রসঙ্গে অবশ্য কিছু বলতে চাননি ওই আধিকারিক।

যদিও ঠিকাদারের আওতায় থাকা কর্মীদের একংশ জানাচ্ছেন, বাতাসপুর, পেঁচালিয়া, মুড়াবেড়িয়া-সহ কয়েকটি জায়গায় প্রতিনিয়ত তার চুরির কারণেই পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা যাচ্ছে না। দিন রাত ওই কয়েকটি অঞ্চলে গিয়ে পরিষেবা ঠিক করার সময়ে কখনও কখনও কেউ কেউ মেজাজ হারিয়ে ফেলছেন। তবে, তা অস্বাভাবিক নয় বলেই তাঁরা মনে করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

khoyrasole Electricity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE