অবরোধ স্থল নিয়েছে মেলার আকার। —নিজস্ব চিত্র।
কুড়মি জাতিকে তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ে অন্তর্ভুক্তি এবং কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলির অন্তর্ভুক্তির দাবিতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। আটকে পড়েছে ট্রেন। সেই রেল স্টেশনে ঢোকার মুখে মেলা বসল পুরুলিয়ায়।
মঙ্গলবার পুরুলিয়া জেলার কুস্তাউর স্টেশনে রেল অবরোধ করেছে কুড়মি সমাজের মানুষরা। একই সঙ্গে অবরুদ্ধ করা হয়েছে পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কও। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছেন। স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে সড়ক এবং রেল যোগাযোগ। ইতিমধ্যে বহু ট্রেন বাতিল ঘোষণা করেছে রেল। প্রবল জনসমাগমে পুরুলিয়া-২ ব্লকের রেললাইনে বসল মেলা। এই অবস্থায় জাতীয় সড়কের পাশে, স্টেশন যাওয়ার রাস্তায় বসে পড়েছেন পসরা নিয়ে বসে গিয়েছেন দোকানিরা। বিক্ষোভও হচ্ছে। আবার তেলেভাজা, চপ-মুড়ি, ঘুগনি, মিষ্টি এমনকি, মাছ-ভাতও খাওয়া চলছে। কাতারে কাতারে মানুষের ভিড় জমছে রেললাইনের উপর। তাই এই দোকানগুলিতে বিক্রিবাটাও ভালই হচ্ছে।
কুড়মি সমাজের এই অবরোধের কারণে বিপাকেও পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেরিয়ে গন্তব্যে যেতে না পারা এই মানুষজনও ভিড় করছেন অস্থায়ী দোকানগুলিতে। রেলপথ বন্ধ দেখে অনেকে ভেবেছিলেন সড়কপথ ধরবেন। কিন্তু সেখানেও অবরোধ। আন্দোলনকারীদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই অবরোধ চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীদের নেতা অজিত প্রসাদ মাহাতোর কথায়, ‘‘আমাদের এই কর্মসূচি তো পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি। জনসাধারণের অসুবিধার কথা আমরা মানছি। তবে সরকার আমাদের দাবি না মানায় বাধ্য হয়ে এই পথ বেছে নিতে হয়েছে।’’
এ নিয়ে রেলের আদ্রা ডিভিশনের ম্যানেজার মণীশ কুমার বলেন, ‘‘এই অবরোধ শুধু পুরুলিয়ায় নয়, অনেক জায়গায় হচ্ছে। আমরা বিষয়টি দেখছি। অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’’
ছ’টি রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা প্রায় দেড় কোটি মানুষ কুড়মালি ভাষায় কথা বলেন। অথচ জাতীয়স্তরে এই ভাষার স্বীকৃতি মেলেনি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার অবশ্য কুড়মালিকে দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, অসম এবং ছত্তীসগঢ়ে বসবাসকারী কুড়মিরা (মাহাতো) এই ভাষায় কথা বলেন। কুড়মালি ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে জঙ্গলমহলের মূলবাসী কুড়মিদের একাধিক সংগঠন ধারাবাহিক আন্দোলন করে চলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy