Advertisement
০৩ মে ২০২৪

সত্যি সামনে আসুক, আর্জি নিগৃহীতার

পুলিশ সূত্রের খবর, সেই সময় স্থানীয় কিছু শিক্ষিক যুবক উন্মত্ত জনতাকে না থামালে এবং সময়ে সদাইপুর থানার পুলিশ না পৌঁছলে প্রাণে বাঁচতেন না ওই তরুণী। এরপরেই সাবিত্রী ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে মহম্মদবাজার থানা এলাকার শেওড়াকুড়ি কালীতলাপড়ার বাপের বাড়ি চলে যান।

সরেজমিন: মহম্মদবাজারে।—নিজস্ব চিত্র।

সরেজমিন: মহম্মদবাজারে।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৭ ০৬:৫০
Share: Save:

বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যদের কাছে সত্যিটা সামনে আনার আর্জি রাখলেন সদাইপুরের নির্যাতিতা বধূ। বৃহস্পতিবার মণি ওরফে সাবিত্রী বাগদির বাপের বাড়ি মহম্মদবাজারের শেওড়়াকুড়ি যান বিজ্ঞান মঞ্চের পাঁচ প্রতিনিধি। তাঁদের সামনে পেয়ে সাবিত্রী বলেন, ‘‘আমি তুকতাক কিংবা তন্ত্রসাধনা করে স্বামীকে মারিনি। আমি চাই সত্যিটা সামনে আসুক। আর আমার স্বামী ঠিক কী কারণে মারা গিয়েছে, হাসপাতাল থেকে তার কাগজ দেওয়া হোক।’’

রবিবার রাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে রোগেভুগে মারা যান সদাইপুর থানা এলাকার তাপাসপুর গ্রামের বাসিন্দা বছর বাইশের অভিজিৎ বাগদি। সোমবার তাঁর দেহ গ্রামের বাড়িতে আনার পরে যুবকের মৃত্যুর জন্য সদ্যবিধবা স্ত্রীকে দায়ী করে বেধড়ক পেটান এলাকাবাসী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। এলাকাবাসীর বিশ্বাস ছিল, ওই বধূ ও তাঁর বাপেরবাড়ির পরিবারের লোকজনের তন্ত্রসাধনা, ঝাড়ফুঁক, তুকতাকের জন্যই রক্তশূন্য হয়ে মারা গিয়েছেন ওই যুবক। মণির অভিযোগ, ‘‘এই বিশ্বাস এতই দৃঢ় ভাবে গেঁথে গিয়েছিল, যে কাউকেই থামানো যাচ্ছিল না।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, সেই সময় স্থানীয় কিছু শিক্ষিক যুবক উন্মত্ত জনতাকে না থামালে এবং সময়ে সদাইপুর থানার পুলিশ না পৌঁছলে প্রাণে বাঁচতেন না ওই তরুণী। এরপরেই সাবিত্রী ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে মহম্মদবাজার থানা এলাকার শেওড়াকুড়ি কালীতলাপড়ার বাপের বাড়ি চলে যান। মহম্মদবাজারের প্যাটেলনগর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাও করান। এক দিকে স্বামী হারানো ও অন্য দিকে শরীরের ক্ষত সমালে মঙ্গলবার রাতে পুলিশের কাছে শ্বশুরবাড়ির আত্মীয় ও পড়শিদের বিরুদ্ধে নালিশ জানান সাবিত্রী। তবে, এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযুক্তকেই পুলিশ ধরেনি।

কী অবস্থায় রয়েছেন তরুণী ওই বধূ, অভিযোগের ভিত্তি কী— তা দেখতে বৃহস্পতিবার সাবিত্রীর বাপেরবাড়ি যান রাজ্য বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা কমিটির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল। বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা কমিটির সদস্য দেবাশিস পাল, কাজী হুমায়ুন কবীর, শুভাশিস গড়াইরা বলছেন, ‘‘তরুণীর সঙ্গে কথা বলে সদস্যদের মনে হয়েছে ওই বধূর উপরে অযথা অত্যাচার করা হয়েছে। এর জন্যে দায়ী কুসংস্কার আর অশিক্ষা।’’ আগামী দিনে মহম্মদবাজার ও সদাইপুরের তাপাসপুরে শিবির করার পরিকল্পনা রয়েছে বিজ্ঞান মঞ্চের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Domestic Violence Mohammad Bazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE