অবরোধের জেরে হেঁটেই বাড়ির পথে। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো।
সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল নেই পুরুলিয়ার জঙ্গলমহল মানবাজার মহকুমায়। উন্নত পরিষেবা পেতে বাসিন্দাদের যেতে হয় জেলা সদরেই। বিভিন্ন জায়গায় দরবার করেও উন্নত স্বাস্থ্যকেন্দ্র হয়নি। এ বার পথে নামলেন মানবাজার ২ ব্লকের ডাঙরডি গ্রামের বাসিন্দারা।
শুক্রবার ভোর ৩টে থেকে মানবাজার-বান্দোয়ান রাজ্য সড়কের ডাঙ্গরডি মোড়ে পথ অবরোধ করেন বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলেও টানা অবরোধ চলে। প্রশাসনের আধিকারিকরা গিয়ে আলোচনা করলেও গ্রামবাসী অনড় থাকেন।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডাঙ্গরডি গ্রামে রাজ্য সড়ক ঘেঁষে তিন একরের বেশি জমি রয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নামে। কয়েক বছর আগে সেই জমি দখল হতে বসেছিল। সেখানে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরির দাবি নিয়ে জেলা প্রশাসন থেকে রাজ্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হন তাঁরা। বছর দুয়েক আগে ওই জমি মাপজোক হয়। বছর দেড়েক আগেও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ বিভিন্ন জায়গায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরির জন্য লিখিত ভাবে জানান তাঁরা। কিন্তু লাভ হয়নি।
মানবাজার ২ ব্লককে ঘিরে রয়েছে বান্দোয়ান, মানবাজার ও বরাবাজার। তাই এই এলাকায় উন্নতমানের স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে উঠলে উপকৃত হবে তিন ব্লকের মানুষজন। সুবিধা পাবেন পড়শি জেলা বাঁকুড়ার রানিবাঁধে ব্লকেরও মানুষজন।
অবরোধে শামিল রেখা মাহাতো, রীতা মাহাতো বলেন, ‘‘ছোটখাটো অস্ত্রোপচারের জন্যও পুরুলিয়া বা বাঁকুড়া মেডিক্যালে যেতে হয়। প্রাথমিক ও ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সে ভাবে চিকিৎসা পাওয়া যায় না। অথচ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নামে জমি থাকলেও কেন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়া হচ্ছে না?’’
দিনভর পথ অবরোধ চলায় যানজট তৈরি হয়। বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন থাকা পুলিশ গাড়িগুলিকে ছোট রাস্তা ধরে ঘুরপথে পাঠায়। পুরী থেকে আসা একটি বাস আটকে পড়ে অবরোধে। দীর্ঘ ক্ষণ আটকে থেকে অনেকেই হাঁটা পথে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কেন্দার পানিপাথরের টুকেন মাঝি, ষাটোর্ধ্ব বাবিবালা মাঝি ও কুচুং গ্রামের নবীন মাহাতো বলেন, ‘‘রবিবার পুরী গিয়েছিলাম। ফেরার সময় ভোর থেকে অবরোধে আটকে পড়ি। দীর্ঘ ক্ষণ আটকে থেকে বাধ্য হয়ে হেটেই ফিরছি।’’
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোককুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘অবরোধের কথা শুনেছি। এ নিয়ে এখনই কিছু বলব না। কয়েক বছর আগে হাসপাতাল তৈরির জন্য লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন বাসিন্দারা। সে সময়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল।’’
বন্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সরেন বলেন, ‘‘গ্রামবাসীর দাবি নায্য। ওই এলাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে উঠলে উপকৃত হবেন প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষজন। স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য স্বাস্থ্যভবনে
চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy