Advertisement
E-Paper

ভোট মিটতে ‘মারধর’, গ্রামে আতঙ্ক 

গ্রামবাসী ফুলটুসি বাগদির অভিযোগ, সন্ধ্যায় তাঁর স্বামীর খোঁজ করে পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী রহিম মণ্ডল। স্বামী কোথায় তা তিনি জানেন না বলায় তাঁকে নলকূপের একটি হাতল দিয়ে রহিম মারতে যায়। গলা টিপে ধরে তাঁর।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৯ ০২:২৪
দোরগোড়ায়: সোমবার সকালে তখনও ঘরে তালা ঝুলছে। দেজহাট গ্রামের বৃদ্ধা ভুদি বাগদি অভিযোগ করছেন, রবিবার ভোট শেষের পরে উলিয়াড়া পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী গ্রামে এসে ঘর থেকে তাঁদের বার করে জোর করে তালা দিয়ে গিয়েছেন। ছবি: শুভ্র মিত্র

দোরগোড়ায়: সোমবার সকালে তখনও ঘরে তালা ঝুলছে। দেজহাট গ্রামের বৃদ্ধা ভুদি বাগদি অভিযোগ করছেন, রবিবার ভোট শেষের পরে উলিয়াড়া পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী গ্রামে এসে ঘর থেকে তাঁদের বার করে জোর করে তালা দিয়ে গিয়েছেন। ছবি: শুভ্র মিত্র

ভোট শেষে বিষ্ণুপুর থানার উলিয়াড়া পঞ্চায়েতের দেজহাট বাগদিপাড়ার কয়েকজনকে মারধর করে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রভাবশালী স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা এবং তাঁর কয়েক জন সঙ্গীর বিরুদ্ধে। রবিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ঘটনায় সোমবার সারাদিন আতঙ্ক ছিল গ্রামে। পুলিশ অভিযোগের তদম্ত শুরু করেছে। ঘর তালাবন্ধ থাকায় খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাতে হয়েছে কয়েকটি পরিবারকে। বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন, এই ধারণা থেকেই তৃণমূলের লোকজন গ্রামে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর একাংশের।

গ্রামবাসী ফুলটুসি বাগদির অভিযোগ, সন্ধ্যায় তাঁর স্বামীর খোঁজ করে পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী রহিম মণ্ডল। স্বামী কোথায় তা তিনি জানেন না বলায় তাঁকে নলকূপের একটি হাতল দিয়ে রহিম মারতে যায়। গলা টিপে ধরে তাঁর। অভিযোগ, এর পরে ফুলটুসি এবং গ্রামের কয়েক জন বাসিন্দার বাড়িতে রহিম এবং তার দলবল তালা ঝুলিয়ে দেয়। যাওয়ার আগে তারা একাধিক মহিলাকে মারধর করে। এমনকি, কয়েকজন মহিলাকেও তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়।

ঘটনায় হতবাক গ্রামবাসীর একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, গ্রামবাসীর একাংশ বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন, এই আশঙ্কা থেকেই ওই ঘটনা ঘটিয়েছে তৃণমূলের কর্মীরা। যদিও ঘটনার মূল অভিযুক্তে রহিমের দাবি, “ওরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে আমাদের নামে চালিয়ে দিচ্ছে। আমি কিছুই জানি না। সব অভিযোগ মিথ্যা।’’ ফুলটুসি ছাড়াও ওই গ্রামের বাসিন্দা ভদি বাগদি ও সুভাষ বাগদির বাড়িতেও ‘হামলাকারীরা’ তালা ঝুলিয়েছিল বলে অভিযোগ। আরেক মহিলার ঘরের দরজা ভেঙ্গে ধান, চাল মাটিতে ফেলে পোষা কয়েকটি মুরগি নিয়ে পালায় তারা। ওই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

মৌসুমি বাগদি নামে গ্রামের এক বাসিন্দার অভিযোগ, “রাতে প্রধানের স্বামী রহিম ও তাঁর সঙ্গীরা অত্যাচার চালায় আমাদের গ্রামে। বাড়ি থেকে আমাদের বের করে তালা ঝুলিয়ে দেয় রহিম। আমরা হাতজোড় করে নিস্তার চেয়েছিলাম। ওরা আমাকে চড় মারে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘প্রধানের স্বামীর সন্দেহ, আমরা ওদের ভোট দিইনি। ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তৃণমূল নেতারা আমাদের আঙুল শুঁকেছিল। আমার মনে হয় ইভিএমে তৃণমূল প্রার্থীর বোতামে কোনও ক্যামিক্যাল দেওয়া হয়েছিল।” পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘ আমার স্বামী প্রাক্তন সেনাকর্মী। তবু পুলিশ পদক্ষেপ করল না। এবার আমরাই আমাদের নিরাপত্তা বুঝে নেব।”

বিষ্ণুপুরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি মথুর কাউড়ির প্রতিক্রিয়া, “আমি কিছুই জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক মানস মণ্ডল বলেন “রবিবার রাতে খবরটি পেয়েছি। পুলিশের মিটমাট করে দেওয়ার কথা। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

তবে গ্রামের কয়েক জনের বাড়িতে যে তালা ঝোলানো হয়েছিল, সেই কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বিষ্ণুপুর থানার আইসি পথিকৃৎ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “রাতে খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এ দিন অভিযোগ পেয়ে পুলিশ বাড়িগুলির তালা ভেঙ্গে দেয়।’’ নতুন করে কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি বলে

জানিয়েছে পুলিশ।

Lok Sabha Election 2019 Violence Bishnupur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy