Advertisement
E-Paper

জিততে ঝাঁপাবে দল, ‘ক্ষোভ’ গিলে বার্তা

দলের জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় যখন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, দল মনোনীত প্রার্থীকে জেতাতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাবেন। প্রার্থী নিয়ে দলে কোনও বিরোধ নেই। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৯ ০৪:১৮
নমস্য: প্রচারে বেরোনোর আগে দলের নেতার ছবিতে প্রণাম দুধকুমার মণ্ডলের। শুক্রবার সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

নমস্য: প্রচারে বেরোনোর আগে দলের নেতার ছবিতে প্রণাম দুধকুমার মণ্ডলের। শুক্রবার সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

কোচবিহারের মতো ‘ক্ষোভ’-এর বহিঃপ্রকাশ এখানে হয়নি ঠিকই। কিন্তু বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে দুধকুমার মণ্ডলের নাম ঘোষণার পর থেকেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে জেলা বিজেপি-র অন্দরে। কেউ কেউ আড়ালে বলতে শুরু করেছেন, দুধকুমার একদা ‘ডাকাবুকো’ নেতা হিসাবে পরিচিত ছিলেন ঠিকই। কিন্তু এখন দলে তাঁর অবস্থান কোথায়?

শুক্রবার বিকেলে সিউড়ির সাহিত্য পরিষদের হলে দলীয় প্রার্থীকে নিয়ে বিজেপি-র জেলা কমিটির বৈঠকে হয়। দলের নেতাদের একাংশই জানাচ্ছেন, বৈঠকে প্রার্থী নিয়ে নিজেদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ বলে জেলা বিজেপি-র ক্ষমতাসীন ও বিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে শেষ পর্যন্ত একটা বোঝাপড়া হয়েছে। তার প্রমাণও মিলেছে বৈঠকের পরে দুধকুমারের বিরোধী বলে পরিচিত দলের জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় যখন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, দল মনোনীত প্রার্থীকে জেতাতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাবেন। প্রার্থী নিয়ে দলে কোনও বিরোধ নেই।

বিজেপি সূত্রে খবর, বীরভূমে যে ঘরানার রাজনীতি হয়, সেখানে দুধকুমার মণ্ডলকেই ‘উপযুক্ত’ বলে মনে করছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রার্থী ঠিক করার জন্য শুধুমাত্র রাজ্য বিজেপির পাঠানো তালিকার উপরেই ভরসা রাখেননি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পেশাদার সংস্থাকে দিয়েও সমীক্ষা করানো হয়েছে। যদিও একমত নন জেলার বিজেপি নেতারা। তাঁদের একাংশের দাবি, বীরভূম আসনে গত লোকসভা ভোট থেকে দল ভাল জায়গায় ছিল। লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মতো হেভিওয়েট প্রার্থী হলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে ভাবে চোখে চোখ রেখে লড়াই দেওয়া যেত, সেটা দুধকুমার মণ্ডলকে দিয়ে হবে না। বীরভূমে লকেট টিকিট পাচ্ছেন না, এটা মোটামুটি জেলার নেতারা আগেই জেনে গিয়েছিলেন। বিকল্প হিসাবে জেলার কয়েক জনের নাম ভাসানো হয়েছিল। যদিও তা কাজে আসেনি।

এক সময় কিন্তু জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের চোখে চোখ রাখা রাজনীতি করেই শিরোনামে এসেছিলেন দুধকুমার। বর্তমানে অবশ্য জেলার রাজনীতিতে তিনি অনেকটাই কোণঠাসা। বিজেপি-র কিছু নেতার দাবি, গত বছর ময়ূরেশ্বর পঞ্চায়েতের একটি আসন জিতলেও দুধকুমরারে আগের দাপট নেই। এমনকি তিনি দলের জেলা কমিটির সদস্যও নন। সঙ্গে রয়েছে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর সঙ্গে বিরোধ।

বীরভূমে লকেট টিকিট পাচ্ছেন না, এটা মোটামুটি জেলার নেতারা জেনে গিয়েছিলেন। বিকল্প হিসাবে জেলার কয়েক জনের নাম ভাসানো হয়েছিল। যদিও তা কাজে আসেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতাও এ দিন দাবি করলেন, ‘‘বিজেপির এই কোন্দল শতাব্দী রায়ের জেতার পথ আরও সহজ করবে।’’

দুধকুমারের অনুগামীরা এই যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের পরে দুধকুমারের নেতৃত্বেই জেলায় বিজেপি-র উত্থান ঘটেছিল। পরে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে সংঘাতের জেরে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরে না দাঁড়ালে তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য কারও কথা ভাবতেই হত না। হতে পারে তিনি কিছুদিন সক্রিয় রাজনীতি থেকে একটু সরে গিয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁর মতো অভিজ্ঞ নেতার সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

বিজেপি সূত্রের খবর, প্রার্থী হয়েই দুধকুমার তাঁর সেই সব অনুগামীর সঙ্গে যোগ রাখতে শুরু করেছেন, যাঁরা কার্যত বসে রয়েছেন। কিন্তু, প্রার্থী হিসাবে দলের গঠনতন্ত্র এবং জেলার নেতাদের মর্যাদা দিয়ে চলতে হবে, এ কথা তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। দুধকুমার নিজেও সকলের সাহায্য নিয়ে চলার পক্ষপাতী। শুক্রবার থেকে প্রচারও শুরু করেছেন বীরভূম কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী।

এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ সিউড়িতে জেলা কার্যালয়ে এসে কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ১২টা নাগাদ সিউড়ির ১ নম্বর ওয়ার্ডের বরবাগান এলাকায় নিজের হাতে দেওয়াল লিখন করেন এবং পথ চলতি মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। তার পরে ভান্ডীরবন যান। সেখানে রাধা গোবিন্দের মন্দিরে পুজো দিয়ে দুপুর ৩টে নাগাদ সাহিত্য পরিষদ হলে জেলা কমিটির বৈঠকে যোগ দেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

Lok Sabha Election 2019 Dudh Kumar Mondal Birbhum BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy