Advertisement
E-Paper

ভোটের আগের দিনেও নানা নালিশ

বাঁকুড়া শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৯ ০০:৪০
বিতর্কিত: রঘুনাথপুরে আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। পাশে রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

বিতর্কিত: রঘুনাথপুরে আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। পাশে রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

ভোটের আগের দিন বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা অভিযোগ উঠে এল। শুক্রবার রাতে পাত্রসায়রের বালসিতে জয়দেব পাল নামে এক বিজেপি কর্মীর বাড়ি ও মোটরবাইক ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। জয়দেবের দাদা হারাধন পাল বলেন, ‘‘কিছু দুষ্কৃতী আমাদের বাড়ির পাঁচিলের বাইরে থেকে গালিগালাজ করছিল। তার পরে ঢিল ছুড়ে ভাইয়ের বাড়ির কাঁচের জানলা ভেঙে দেয়। ভাইয়ের বাচ্চা মেয়েটা ভয়ে চেঁচিয়ে উঠেছিল।’’ তাঁর অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা পাঁচিল টপকে বাড়িতে ঢুকে পড়ে। ভাঙচুর হয় একটি মোটরবাইক ও একটি স্কুটারে। সবাই চিৎকার করে উঠলে তারা পালায়।

হারাধনবাবু বলেন, ‘‘আমার ভাই জয়দেব পাল বিজেপি কর্মী। বিজেপির হয়ে ভোটে খাটাখাটি করছিল। তাই আক্রমণ।’’ জয়দেব পাল বলেন, ‘‘তৃণমূলের লোকই এই কাজ করেছে।’’ বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি স্বপন ঘোষের দাবি, তাঁরা নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে পাত্রসায়রের তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম সিংহের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।

বাঁকুড়া শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার দলীয় কর্মীদের নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। বিজেপির অভিযোগ, শহরের ৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৯ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে মুখে কাপড় বাঁধা বহিরাগত লোকজন মোটরবাইক মিছিল করে ভোটারদের শাসিয়ে গিয়েছে। সুভাষবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূলের বহিরাগত গুন্ডারা মোটরবাইক নিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে সাধারণ মানুষকে শাসাচ্ছে। আমাদের লোকজন ওদের প্রতিরোধও করে। ঘটনাটি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছি।” বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটের কায়দায় লোকসভা ভোটেও তৃণমূল সন্ত্রাস করতে চাইছে। মানুষ সর্বত্র প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত।”

পাত্রসায়রের বালসিতে ভাঙচুর হওয়া সেই স্কুটার। নিজস্ব চিত্র

সুভাষবাবুর অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ বলেন, “ভোটে হার নিশ্চিত বুঝেই ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে বিজেপি।’’ বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “শহরের কোথাও দুষ্কৃতীরা মোটরবাইক মিছিল করছে, এমন অভিযোগ পাইনি।” জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, ‘‘একটি রাজনৈতিক দলের তরফে বাঁকুড়া শহরে ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ পেয়েছি। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা সব রকম ভাবে প্রস্তুত।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

শনিবার দুপুরেই পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবের কাছে বিজেপি অভিযোগ জানিয়েছিল, প্রচার শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও তৃণমূলের বাইরের জেলার নেতামন্ত্রীরা চলে আসছেন। ঠিক তার কয়েক ঘণ্টা পরেই রঘুনাথপুর শহরে তৃণমূলের পার্টি অফিসের সামনে দেখা গেল আসানসোলের তৃণমূলের মেয়র জীতেন্দ্র তিওয়ারিকে। সূত্রের দাবি, এ দিন সাড়ে চারটে নাগাদ আসানসোল থেকে রঘুনাথপুর শহরের পার্টি অফিসে পৌঁছন তিনি। ছিলেন রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায় এবং রঘুনাথপুর ১ ব্লক এলাকার কিছু নেতাকর্মীও। আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়র অভিযোগ, জিতেন রঘুনাথপুরে গিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘বাইরের জেলার নেতামন্ত্রীদের এনে তৃণমূল অশান্তি পাকাতে পারে, সেই কথা আমরা পুলিশ পর্যবেক্ষককে জানিয়েছি। তার পরেই আসানসোলের মেয়র যে ভাবে রঘুনাথপুরে কর্মীদের নিয়ে সভা করলেন, তাতেই স্পষ্ট হয়ে গেল, তৃণমূল ভোটে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে।’’ তবে অভিযোগ উড়িয়ে জিতেন দাবি করেছেন, ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলেন। কোনও ভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘রঘুনাথপুরে আমার অনেক আত্মীয় আছেন। আমি কি তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে আসতে পারি না?’’

রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান ভবেশবাবু দাবি করেছেন, আসানসোলের মেয়র পুরসভা সংক্রান্ত কিছু কাজকর্মের জন্য তাঁর সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন। তাঁরও দাবি, জিতেন দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কোনও বৈঠক করেননি।

Lok Sabha Election 2019 লোকসভা ভোট ২০১৯ Violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy