Advertisement
E-Paper

অভিযোগে বানভাসি ভোটের মাঠ

ভোটদানে বাধা, বুথ দখল, মারধর, ছাপ্পা, ভোটারদের আটকে রাখার মতো অভিযোগ এসেছে বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর এবং পুরুলিয়া থেকে। 

নিজস্ব প্রতিবেদন 

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৯ ০১:২৬
(বাঁ দিকে) বিষ্ণুপুরের মড়ার গ্রামে আহত বিজেপি নেতা। কলাবাগানের এক বাসিন্দা অভিযোগ করছেন জওয়ানদের বিরুদ্ধে। ছবি: শুভ্র মিত্র

(বাঁ দিকে) বিষ্ণুপুরের মড়ার গ্রামে আহত বিজেপি নেতা। কলাবাগানের এক বাসিন্দা অভিযোগ করছেন জওয়ানদের বিরুদ্ধে। ছবি: শুভ্র মিত্র

বড় কোনও গোলমাল না হলেও রবিবার অভিযোগের বন্যায় ভাসল রাঢ়বঙ্গের ভোট রণাঙ্গন।

ভোটদানে বাধা, বুথ দখল, মারধর, ছাপ্পা, ভোটারদের আটকে রাখার মতো অভিযোগ এসেছে বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর এবং পুরুলিয়া থেকে।

এ দিন রাতে বলরামপুরের সুপুরডি গ্রামে এক বছর আগে নিহত বিজেপি কর্মী ত্রিলোচন মাহাতোর বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। আহত হন ত্রিলোচনের বাবা হাড়িরাম মাহাতো। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

দুপুরে বিষ্ণুপুরের বাঁকাদহ পঞ্চায়েতের কলাবাগানের ২০৭ নম্বর বুথের সামনে শূন্যে গুলি চালায় আধাসেনা। পুলিশ জানিয়েছে, বুথের সামনে এক ব্যক্তিকে সন্দেহজনক ভাবো ঘোরাঘুরি করতে দেখায় কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ান তাঁকে সরিয়ে দেন। তারপরেই গ্রামের একদল বাসিন্দা বিশৃঙ্খলা পাকায়। শূন্যে দু’রাউন্ড গুলি চালান এক জওয়ান।

রঘুনাথপুর বিধানসভার শাঁকা পঞ্চায়েতের গোপীনাথপুরে একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে তৃণমূল-বিজেপির বিবাদকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি তপ্ত হয়ে ওঠে। কুইক রেসপন্স টিম ঘটনাস্থলে গেলে গ্রামবাসীর একাংশ ইট ছোড়ে বলে অভিযোগ। হাতে চোট পান আধাসেনার এক জওয়ান। এক জওয়ানের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীর অভিযোগ, এর পরেই আধাসেনার জওয়ানেরা নির্বিচারে লাঠি চালায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ভোটগ্রহণে ঘটনার প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছেন বিডিও (রঘুনাথপুর ১) অনির্বাণ মণ্ডল।

বিজেপির ২ নম্বর মণ্ডল সভাপতি বিমল ঘরামির অভিযোগ, ‘‘মড়ার গ্রামের আমজাদ মোড়ের কাছে তাঁর উপরে হামলা চালায় তৃণমূলের কর্মীরা।’’ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মথুর কাপড়ির দাবি, ‘‘বিজেপি কর্মীরা নিজেদের মধ্যেই মারপিট করেছে।’’ বিজেপির অভিযোগ, ১৪৭ ও ১৫০ নম্বর বুথে তাদের পোলিং এজেন্টকে বসতে দেয়নি তৃণমূল। ভোটারদের বাধা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ মড়ার পঞ্চায়েতের লাউবাগান গ্রামের প্রায় ২৭৫ জন ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে দেন। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। পাত্রসায়রের ১৯২ নম্বর বুথের বাইরে সিপিএম ও বিজেপি সমর্থকেরা তৃণমূলকর্মী শ্রীকাম্ত ঘোষের পা ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ। মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় আরেক তৃণমূলকর্মী নিরূপ ঘোষের। সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘অভিযোগ মিথ্যা। আমাদের পোলিং এজেন্টকেই বুথে বসতে দেওয়া হয়নি।’’

পাত্রসায়রের তৃণমূল ব্লক সভাপতি পার্থপ্রতিম সিংহের অভিযোগ, বালসির ভাড়াবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী তাঁদের পোলিং এজেন্ট এবং বালসি (২) পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জিৎ মাজিকে মারধর করে। ভোটগ্রহণ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ ছিল। অভিযোগ এড়িয়ে বিডিও (পাত্রসায়র) প্রসন্ন মুখোপাধ্যায় জানান, কিছু সমস্যার জন্য ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল।

সিপিএমের অভিযোগ, বড়জোড়ার মান্দারবনি গ্রামের ৯১ ও ৯২ নম্বর বুথে ভোটারদের ভোটদানে বাধা দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল নেতা নীলাঞ্জন দাশগুপ্তের পাল্টা অভিযোগ, সিপিএমের লোকজনই আমাদের কর্মী-সমর্থকদের ভোট দিতে বাধা দেয়ে। সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা কমিটির সদস্য সুজয় চৌধুরীর অভিযোগ, বড়জোড়ার মগুলবাঁধে ১০০, ১০১ নম্বর বুথ, মান্দারমণির ৯১, ৯২ নম্বর বুথ, তাজপুরের ৬৮ ও ৭১ নম্বর বুথ দখল করেছিল তৃণমূল। নীলাঞ্জনবাবুর দাবি, ‘‘সব জায়গায় শান্তিতে ভোট হয়েছে।’’

বড়জোড়ার কয়েকটি জায়গায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। ভট্টপাড়ায় ২৫৩ নম্বর বুথের ভোটারদের একাংশের অভিযোগ, বহিরাগত দুষ্কৃতীরা তাঁদের ভোট দিতে দেয়নি। বিজেপি নেতা হীরালাল রায়ের অভিযোগ, ‘‘আসানসোল-দুর্গাপুর থেকে আসা দুষ্কৃতীরা শনিবার রাত থেকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।’’

বড়জোড়ার উঁয়ারা প্রাথমিক স্কুলের ২২৬ নম্বর বুথে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। বাহিনীর তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসার কার্তিক সাহার প্রতিক্রিয়া, ‘‘বুথের বাইরে কী হচ্ছে, তা দেখা আমার দায়িত্ব নয়।’’

Lok Sabha Election 2019 Election 2019 Phase 6 Purulia Bankura
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy