করোনা-কালে বেশ কয়েক মাস বন্ধ থাকার পরে এ বার পুজোর মুখে আবার খুলল পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলের দুয়ারসিনি প্রকৃতি ভ্রমণ কেন্দ্রের কটেজ। পর্যটকদের জন্য শর্ত: কটেজে থাকতে হলে অবশ্যই করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার নথি দেখাতে হবে।
খবর পেয়েই শুরু হয়েছে পর্যটকদের আনাগোনা। বন দফতর জানিয়েছে, পুজোর সময়ে দুয়ারসিনিতে তাদের সমস্ত কটেজ ‘বুকিং’ হয়ে গিয়েছে। তবুও কটেজ বুকিংয়ের জন্য লাগাতার তাদের কাছে ফোন আসছে।
ডিএফও (কংসাবতী দক্ষিণ) অসিতাভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র খুলে দিতে পেরে আমাদেরও ভাল লাগছে। প্রশাসনের নির্দিষ্ট করে দেওয়া স্বাস্থ্য-বিধি মেনেই সবাইকে কটেজে থাকতে হবে।’’
এক সময়ে মাওবাদী ‘উপদ্রুত’ বান্দোয়ানের এই অতিথি আবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ফের সংস্কার করে বন দফতর। কিন্তু তার পরেও বন্ধ হয়ে পড়েছিল প্রকৃতি ভ্রমণ কেন্দ্রটি। তাই দুয়ারসিনিতে বেড়াতে এসে সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল পর্যটকদের।
গত এক বছর আগে বন দফতরের উদ্যোগে দুয়ারসিনি প্রকৃতি ভ্রমণ কেন্দ্রের তিনটি কটেজের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। তাতে আগের মতোই পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে। জঙ্গলের পরিবেশের মধ্যে রাত কাটানোর অ্যাডভেঞ্চারের টানে দুয়ারসিনি বরাবরই পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। অনেকে আশপাশের আদিবাসী গ্রামগুলি, টটকো জলাধার, হাড়গাড়া জঙ্গল, রাইকা পাহাড়, বুড়িঝোর গ্রামের ঝর্না দেখতে যান। দুয়ারসিনির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সাতগুড়ুম নদী সারা বছর ধরেই পর্যটকদের মন কাড়ে। কয়েক কিলোমিটার পার হলেই ঝাড়খণ্ডের রয়েছে বুরুডি জলাধার।
গত বছর দীর্ঘ লকডাউন পর্ব কাটিয়ে এখানে শুরু হয়েছিল পর্যটকদের আনাগোনা। এর পরেই আবার থাবা বসায় করোনা। দ্বিতীয় ধাপে করোনার জন্য আবার বন্ধ হয়ে যায় কটেজের দরজা।
সম্প্রতি চালু হওয়ার খবর পেয়ে বেড়াতে এসেছিলেন কলকাতার বাসিন্দা ভাস্কর চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “অনেক দিন থেকেই দুয়ারসিনিতে ঘুরতে আসার সাধ ছিল। কিন্তু যোগাযোগ করে জানতে পারি, করোনার জন্য বন্ধ রয়েছে প্রকৃতি ভ্রমণ কেন্দ্র। হঠাৎ এক দিন ফোন করে জানতে পারি, কটেজ খুলেছে। সে দিনই কটেজ ‘বুক’ করেছিলাম।’’ আবার যোগাযোগ না করেই বেড়াতে এসে কটেজ না পেয়ে ফিরে যেতে হয়েছে ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের বাসিন্দা রাকেশ সিংহকে। তাঁর কথায়, ‘‘সপরিবারে বেড়াতে এসেছিলাম। ভেবেছিলাম, এখন হয়তো কটেজের ঘর ফাঁকা পাব। কিন্তু দুয়ারসিনিতে গিয়ে জানতে পারি, পুজো পর্যন্ত টানা সব কটেজ ‘বুকিং’ হয়ে রয়েছে! কাছাকাছি আরও কিছু হোটেল-লজ থাকলে, ফিরে যেতে হত না।’’