নিজস্ব চিত্র।
বাড়িতে বহুমূল্য মিয়াজ়াকি আম ফলেছে। চার গাছে অন্তত ২০০টি আম। আপেলের মতো দেখতে এই আমের বাজারমূল্য কেজি প্রতি লক্ষাধিক টাকা! এই জাপানি আম যাতে চুরি না হয়ে যায়, তাই এ বার পুলিশের দ্বারস্থ হতে চলেছেন বীরভূমের রাজনগরের বাসিন্দা মান্নান খান।
দিন কয়েক আগে দুবরাজপুরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের গউসিয়া মসজিদের কাছে মিয়াজ়াকি আমের ফলনের খবর প্রকাশ্যে আসে। তা জানাজানি হওয়ার পরের দিন নিলামে একটি আম ১০ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রিও হয়। সংবাদমাধ্যম ও সমাজমাধ্যমে সেই খবর দেখে নিজের বাগানের আমগুলি নিয়েও উৎসাহী হয়েছেন রাজনগরের ভবানীপুর পঞ্চায়েত এলাকার কানমোড়া গ্রামের ফল চাষি মান্নান। তাঁর দাবি, তাঁর গাছে যে আম ফলেছে, সেটি মিয়াজ়াকিই! জাপানি এই আম চারা তিনি বাংলাদেশ থেকে আনিয়েছিলেন বছর চারেক আগে। মান্নান বলেন, ‘‘এত দিন তো বুঝিনি যে, এই আমের দাম এত! কেউ জানতেন না বলে কোনও সমস্যাও হয়নি। এখন তো সকলেই জেনে গিয়েছে এই আমের দাম। বাড়িতে অন্তত ২০০টা মিয়াজ়াকি আম রয়েছে। যে কোনও সময়েই চুরি হয়ে যেতে পারে। পুলিশের কাছে যাব ভাবছি।’’
এমনকি আম বাগানে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কথাও ভেবেছেন মান্নান। তিনি জানান, বছর চারেক আগে জমিতে ভাল জাতের আম লাগানোর উদ্দেশ্যে কলকাতার একটি নার্সারির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। ওই নার্সারি বাংলাদেশ থেকে জাপানের একটি প্রজাতির ১০টি আম চারা তাঁকে এনে দিয়েছিল। প্রতিটির দাম পড়েছিল ১ হাজার টাকা করে। তার মধ্যে চারটি চারা বেঁচেছে। মান্নান এমনিতে বিভিন্ন ফলের গাছের সঙ্গে ড্রাগন ফলের চাষ করেছেন। তাতে লাভও হয়েছে ভালই। পাশেই এক ফালি জমিতে এই আম চারাগুলো বসিয়েছিলেন। যাতে এ বারই প্রথম ফল এসেছে। ডিম্বাকৃতি আমগুলি পরিণত হতেই প্রথমে লালচে বেগুনি ও পরে টুকটুকে লাল রং হয়েছে।
প্রথমে নাম না জানলেও ইন্টারনেট ও ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া জেলার একটি টিভি চ্যানেলে এই আমের বিজ্ঞাপন দেখে মিয়াজ়াকির কথা জানতে পারেন মান্নান। দুবরাজপুরের মসজিদে আমের ফলন ও চড়া দরে নিলামের খবর তাঁকে বাড়তি উৎসাহ জুগিয়েছে বলে জানান ওই ফল চাষি। জেলা কৃষি ও উদ্যানপালন দফতরের কর্তাদের মতে, রাজনগরে আম চাষের আদর্শ পরিবেশ রয়েছে। ব্লক জুড়ে প্রচুর আম বাগান। নানা প্রজাতির আম গাছ রয়েছে। যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে আমটি মিয়াজ়াকি প্রজাতির হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে অনেক সময় আমের আর এক বিদেশি প্রজাতি ‘আমেরিকান রেড পালমার’-এর সঙ্গে মিয়াজ়াকিকে গুলিয়ে ফেলা হয়। আমগুলি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। রাজনগরের ওই ফল চাষি জানান, ফলের চাষ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে তিনি থাকলেও বাগানটি এখন কলকাতার একজন লিজ় নিয়েছেন। ফল বিক্রি হলে লাভের বড় অঙ্ক তাঁরই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy