পুকুরের ভাগ নিয়ে শরিকি বিবাদের জেরে এক ব্যক্তিকে খুন করার অভিযোগ উঠল। জখম আরও তিন জন। বৃহস্পতিবার রাতে বিষ্ণুপুর থানার উলিয়াড়া অঞ্চলের আঁন্দালা গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম উত্তম দে (৫৫)।
মেজ দাদাকে খুনের ঘটনায় বিষ্ণুপুর থানায় দেবদাস দে, দুর্গাদাস দে ও দুর্গাদাসের দুই ছেলে প্রদীপ ও প্রবীরের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন উত্তমবাবুর ছোট ভাই সুনীল দে। সুনীলবাবুর অভিযোগ, ‘‘ওরা চার জন মিলে আমাদের মারধর করে। শাবলের ঘায়ে দাদার মাথা চৌচির হয়ে যায়।’’ এই ঘটনায় মৃতের এক আত্মীয় প্রদীপ দে এবং তাঁর বাবা দুর্গাদাস দে-কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দুর্গাদাসবাবু নিজেও জখম হওয়ায় বিষ্ণুপুর হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করে পুলিশি ঘেরাটোপের মধ্যে রাখা হয়েছে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের একটি পুকুর নিয়ে দে পরিবারের আত্মীয়দের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে শরিকি ঝামেলা চলে আসছে। এ দিন তা নিয়ে আলোচনা চলাকালীন হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ। শাবল, মুগুর, বাঁশ প্রভৃতি নিয়ে পরস্পরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন শরিকেরা। অভিযোগ, শাবলের আঘাতে মাথা থেঁতলে যায় উত্তমবাবুর। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে বিষ্ণুপুর হাসপাতাল এবং পরে সেখান থেকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় উত্তমবাবুর।
ঘটনায় জখম হয়েছেন মৃত উত্তমবাবুর বড়দা স্বপন দে, খুনের অভিযোগে ধৃত দুর্গাদাস দে এবং তাঁর ভাই দেবদাস দে। তাঁদের বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে সেখান থেকে দেবদাসবাবুকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
মৃত উত্তমবাবুর দাদা স্বপন দে এবং খুনের অভিযোগে ধৃত দুর্গাদাস দে— দু’জনেই ভর্তি রয়েছেন বিষ্ণুপুর হাসপাতালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে। গ্রেফতার হওয়ার পর দুর্গাদাসবাবুর জন্য হাসপাতালেই বসেছে পুলিশি প্রহরা। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘পুকুরের ভাগ নিয়ে আমার বাবার জেঠতুতো ভাইপোর ছেলেদের সঙ্গে আগেও ঝামেলা হয়েছে। কিন্তু এ দিন ওরা যে একেবারে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চড়াও হবে, তা ভাবতেও পারিনি। ভাইকে তো খুন করেই ফেলল। আমাকেও মেরে ফেলতে চেয়েছিল। মাথায় মেরেছিল। তিনটে স্টিচ করতে হয়েছে।’’
হাসপাতালের বেডে শুয়েছিলেন দুর্গাদাসবাবু। ডান হাত ফোলা। দুর্গাদাসবাবুর দাবি, তাঁর ছেলে প্রদীপ ওই সময় ঘটনাস্থলেই ছিল না। মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, ‘উত্তম, স্বপনরাই আমাদের মারধর করে। আমার ভাই দেবদাসকেও মারে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy