Advertisement
E-Paper

জঙ্গলে বাবার দেহ, পাশে আহত ছেলে

তাঁর বারো বছরের ছেলে সৈকতকে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছে। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য বিষ্ণুপুর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:১৩
দুর্ঘটনাস্থলে পড়ে রয়েছে মোটরবাইক। —নিজস্ব চিত্র।

দুর্ঘটনাস্থলে পড়ে রয়েছে মোটরবাইক। —নিজস্ব চিত্র।

ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে রাতে ফেরেননি। ফোনেও ধরা যায়নি। খোঁজ করতে বেরিয়ে পরের দিন সকালে বাড়ি থেকে বেশ কিছু দূরে রাস্তার পাশের জঙ্গলে মিলল তাঁর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ। ভাঙা মোটরবাইকের পাশে পড়ে গুরুতর আহত ছেলে। বাঁকুড়ার জয়পুরের বাসুদেবপুর জঙ্গলের কাটনার ক্যানাল পাড়ে শনিবার ওই দেহ উদ্ধার ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। মৃত মৃত্যুঞ্জয় রায়ের (৪০) বাড়ি বিষ্ণুপুর শহরের রাসতলায়। তাঁর বারো বছরের ছেলে সৈকতকে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছে। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য বিষ্ণুপুর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, রাস্তার পাশের গাছের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে মৃত্যুঞ্জয়বাবুর। যদিও তাঁর পরিবার তা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, খুন করা হয়েছে। তাঁরা এ দিন মৌখিক ভাবে পুলিশের কাছে খুনের অভিযোগ করেন। আজ, রবিবার থানায় লিখিত ভাবে খুনের অভিযোগ দায়ের করবেন বলে মৃত্যুঞ্জয়বাবুর পরিজনেরা জানিয়েছেন।

ট্রাকচালক মৃত্যুঞ্জয়বাবুর বাড়িতে এ দিন বেলায় গিয়ে দেখা যায়, কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিজনেরা। তাঁরা জানান, শুক্রবার মোটরবাইকে বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের রামজীবনপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে রওনা দেন মৃত্যুঞ্জয়বাবু। দুপুর ১টায় সেখানে পৌঁছে বিকাল ৩টায় বাড়ি ফেরার জন্য মোটরবাইকে চাপেন তাঁরা।

শোক: কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃত্যুঞ্জয়ের (ইনসেটে) স্ত্রী। ছবি: শুভ্র মিত্র।

কিন্তু, তাঁরা ফেরেননি। সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়িতে না আসায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে বাড়ির লোকজন তাঁর মোবাইল নম্বরে ফোন করেন। কিন্তু, কেউ ধরেননি। আশপাশে খোঁজ করেও হদিস মেলেনি। শনিবার সকালে তাঁরা খোঁজ করতে নেমে বাসুদেবপুর ক্যানাল পাড়ে মৃত্যুঞ্জয়বাবুর দেহ দেখতে পান। অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে ছিল সৈকত। প্রথমে তাকে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বাঁকুড়া মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়।

মৃতের দাদা বাবলু রায়ের দাবি, ‘‘ভাইয়ের দেহে আঘাতের চিহ্ন দেখে আমরা নিশ্চিত, তাকে খুন করা হয়েছে। ভাইপোর মাথার আঘাতও জোরাল। আততাতীয়কে চিহ্নিত করে কঠিন শাস্তির দাবি জানাচ্ছি আমরা।’’ মৃত্যুঞ্জয় বাবুর স্ত্রী রূপা রায়েরও একই দাবি। তাঁর পরিজনেরা দাবি করেন, ‘‘সৈকত হাসপাতালে মাঝে মধ্যেই আঁতকে উঠে বলছে— বাবাকে তোমরা মেরো না।’’ তার এই আতঙ্ক দেখেই মনে হচ্ছে, খুন ছাড়া আর কিছু নয়।

জয়পুর থানার পুলিশ অবশ্য এ দিন দাবি করেছে, প্রাথমিক তদন্তে তারা মনে করছে, খুব জোরে গাছে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। অন্যদিকে মৃতের দিদি পদ্মা দিগার দাবি করেছেন, ‘‘ভাই এক জনের কাছ থেকে টাকা পেত। বারবার তাগাদা দিলেও টাকা ফেরত পায়নি। তার জেরে এই খুন কি না দেখা দরকার।’’

Bankura murder খুন বাঁকুড়া
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy