পরিদর্শনে নাবার্ডের প্রতিনিধিরা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
প্রথমে স্বনির্ভর গোষ্ঠী তারপরে মশলা তৈরির কারখানায় অংশীদার হয়ে নিজেরাই রান্নার মশলা তৈরি করছেন আদিবাসী মহিলাদের একাংশ। আর তাঁদের সাহায্য করতে এগিয়ে এল নাবার্ড। মহম্মদবাজার ব্লকের চড়িচা পঞ্চায়েতের কদমহীড় গ্রামের এই মশলা তৈরির কারখানা ইতিমধ্যেই বীরভূমে নজর কেড়েছে। আদিবাসী মহিলাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়েরাও। এই কারখানায় হলুদ, জিরে, লঙ্কা ও ধনে গুড়ো, মুসুর কলাই, মুগ কলাই এবং কাজুবাদাম ছাড়াও মোমবাতি ও কেঁচো সারও তৈরি করছেন তাঁরা। আনাজের চাষও করছেন এখানকার মহিলারা। সেই আনাজ বাজারজাতও হচ্ছে।
সোমবার সকালে এই কারখানায় যান ১৯টি জেলার নাবার্ডের আধিকারিকেরা। ২০ সদস্যের দলটি ওই কারখানা এবং মহিলাদের কাজ ঘুরে দেখেন। এই দলটিতে ছিলেন নাবার্ডের সিজিএম সুব্রত মণ্ডল, জি এম গৌতম ঘোষ-সহ অন্য অন্যেরা। নাবার্ডের বীরভূম জেলার উন্নয়ন আধিকারিক সুমর্ত্ত ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের মূল লক্ষ্য পিছিয়ে পড়া আদিবাসী মহিলাদের স্বনির্ভর করা ও তাঁদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাঁদের উন্নতির দিশা দেখানো।’’ নাবার্ডের কর্তারা জানান, মহিলা পরিচালিত এই কারখানাটি বীরভূম জেলার এমন ১৫টি কারখানার মধ্যে এগিয়ে আছে। আদিবাসী মহিলা পরিচালিত সংস্থার কাজ করার প্রক্রিয়া সরেজমিনে দেখতেই তাঁদের এই পরিদর্শন। সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০০১ সাল থেকে তাঁদের পথ চলা শুরু। এখন এই কোম্পানিতে ১০১৭ জন কাজ করছেন। প্রত্যেকেই সংস্থার অংশীদার। সকলেই নিজের কাজের জন্য বেতন এবং লাভের অংশটুকু পান।
এ দিন সকালে নাবার্ডের দলটিতে থাকা হুগলির আধিকারিক তনুশ্রী ভট্টাচার্য, মুর্শিদাবাদের কৌশল সিংহ এবং মালদহের সতীশকুমার সিংহেরা বলেন, ‘‘আমরা শুনেছি বীরভূম জেলায় সবথেকে বেশি কাজ হচ্ছে। এখানে এসে নিজের চোখে দেখে গেলাম। বেশ লাগলো। এঁদের কাজের পদ্ধতি একদম আলাদা।’’
সুমিত্রা হেমব্রম নামে এক অংশীদার বলেন, ‘‘আমরা প্রথমে একটি স্বনির্ভর দল গড়েছিলাম। তারপরে এই কারখানায় কাজ শুরু করি। প্রথম দিকে এখানে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করেছি। এখন আমরা মাস গেলে ২৪০০ টাকা করে বেতন পাই। আগে আমাদের গ্রামের মহিলারা জঙ্গলে শালপাতা কুড়িয়ে থালা-বাটি তৈরি করতো। তাতে সেই ভাবে আয় হতো না। ছেলে মেয়েদের স্কুলের খরচও জোগাতে পারতাম না। এখন আমরা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কিছু টাকা সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে পারি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy