Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Bus Service

বাস গিয়েছে সভায়, পথে নাকাল যাত্রী

পুরুলিয়ার ৪৮টি রুটে চারশোর কিছু বেশি বাস চলাচল করে। বাঁকুড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য তার মধ্যে প্রায় একশোটি নেওয়া হয়েছে বলে বাস মালিক সমিতি সূত্রের খবর।

বাস আসতেই ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি যাত্রীদের। বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ডে বুধবার। নিজস্ব চিত্র

বাস আসতেই ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি যাত্রীদের। বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ডে বুধবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২০ ০৪:১৪
Share: Save:

বাঁকুড়ায় এখনও চালু হয়নি লোকাল ট্রেন। এই পরিস্থিতিতে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় যাওয়ার জন্য বেশ কিছু বেসরকারি বাস না থাকায় সাধারণ যাত্রীরা সমস্যায় পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠল।

বাসমালিক কল্যাণ সমিতির বাঁকুড়ার সম্পাদক সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, জেলায় প্রায় চারশো বাস রোজ চলাচল করে। তার মধ্যে প্রায় দু’শ’ গিয়েছে জনসভায়। সুকুমারবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘যাত্রীদের যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য সব রুটেই বাস রাখা হয়েছিল। এমনিতেই বেসরকারি বাসগুলিতে লোক খুব কম হচ্ছে।’’ বাঁকুড়ার জেলাশাসক এস অরুণপ্রসাদ বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তা নিশ্চিত করা হয়েছিল।’’

তবে এ দিন সকাল থেকেই জেলার নানা জায়গায় দেখা গিয়েছে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন মানুষজন। বাস এলে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি পড়েছে। সরকারি বাসে উপচে পড়েছে ভিড়। কোথাও ছোট গাড়ি, কোথাও ট্রাকে চেপে গন্তব্যে রওনা হয়েছেন কেউ কেউ। বাঁকুড়ার সুকান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘বড়জোড়ার একটি কারখানায় কাজ করি। বাস পেলাম না বলে অকারণে ছুটি নষ্ট হল।’’

জেলা বাসমালিক কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি অঞ্জন মিত্র জানান, পাত্রসায়র, সোনামুখী, দুর্গাপুর, কোতুলপুর, আরামবাগ, বাঁকুড়ার মতো বেশ কিছু রুটের মোট ২২৭টি বাস বিষ্ণুপুর হয়ে যাতায়াত করে। তিনি বলেন, ‘‘এ দিন ১৫-২০টি বাস চলেছে।’’ সকাল ৯টা নাগাদ বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা বুদ্ধদেব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাঁকুড়া মেডিক্যালে মা ভর্তি আছেন। যাব বলে দেড় ঘণ্টা বসে আছি। বাস নেই।’’ ওই বাসস্ট্যান্ডেই কোতুলপুর রুটের বাসের অপেক্ষায় থাকা অরূপ ঘোষ বলেন, ‘‘দেখে মনে হচ্ছে, বন্‌ধ চলছে।’’

বড়জোড়া বাসস্টপে বহু ক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন পখন্নার চাঁপা মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘দুর্লভপুরে বিয়েবাড়ির গাড়ি অপেক্ষা করছে। কিন্তু বাস পাচ্ছি না।’’ দক্ষিণ বাঁকুড়ার নানা এলাকার রাস্তায় ভরসা ছিল ছোট গাড়ি। সকাল ৯টায় খাতড়া পাম্প মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন দহলা গ্রামের পূর্ণিমা মুর্মু। বছর ষাটের বৃদ্ধা জানান, হিড়বাঁধের হাতিরামপুর আত্মীয়ের বাড়ি যাবেন। তিনি বলেন, ‘‘দহলা থেকে বাস পাইনি। ট্রেকারে এসে পাম্প মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি প্রায় এক ঘণ্টা।’’

পুরুলিয়ার ৪৮টি রুটে চারশোর কিছু বেশি বাস চলাচল করে। বাঁকুড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য তার মধ্যে প্রায় একশোটি নেওয়া হয়েছে বলে বাস মালিক সমিতি সূত্রের খবর। বাঁকুড়া থেকে যে সব বাস পুরুলিয়ায় আসে, এ দিন সেগুলিও কম ছিল। তবে যাত্রীদের ভোগান্তি বিশেষ হয়নি বলেই পুরুলিয়ার বাস মালিক সমিতি দাবি করেছে। দাবি করা হয়েছে, ধান কাটার মরসুম চলায় এখন এমনিতেই যাত্রী কম হচ্ছে।

বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারের অভিযোগ, ‘‘সব সময় মানুষের অসুবিধা করেই সব করছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ বাঁকুড়ার সিটু নেতা উজ্জ্বল সরকারও বলেন, ‘‘বাস না থাকায় মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।’’ জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা অবশ্য বলেন, ‘‘মানুষ নিজে থেকেই সভায় এসেছিলেন। লোক দেখে বিরোধীরা ভয় পাচ্ছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bus Service Harassment Daily passengers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE