শাসকদলের বিক্ষুব্ধ সদস্যদের মানবাজার ২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতির বিরদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব স্থগিত করে দিল প্রশাসন। সম্প্রতি পুরুলিয়ার মহকুমাশাসক (সদর) আশিস সাহা মানবাজার ২ বিডিওকে চিঠি পাঠিয়ে এ কথা জানান।
মানবাজার ২ বিডিও নির্মল চট্টোপাধ্যায় জানান, পঞ্চায়েত সমিতির কয়েকজন সদস্য সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা চেয়ে মহকুমাশাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সম্প্রতি মহকুমাশাসক জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত আইনের ১০১ (২) ধারা অনুযায়ী অনাস্থার চিঠি অসম্পূর্ণ রয়েছে। এ কারণে ওই অনাস্থা প্রস্তাব স্থগিত করে দেওয়া হল।
মহকুমাশাসক আশিস সাহা এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন, পঞ্চায়েত আইনে বলা হয়েছে যে বা যাঁরা অনাস্থা আনতে চান, তাঁরা কোন দলের সদস্য আবেদন পত্রে তা উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু মানবাজার ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে যাঁরা অনাস্থা চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন, তাঁদের লেখায় তাঁরা কোন দলের সদস্য তা লেখা ছিল না। এই কারণেই অনাস্থার আবেদন স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।
অনাস্থা স্থগিত করে দেওয়ায় মানবাজার ২ পঞ্চায়েত সমিতির শাসক দলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর ক্ষুব্ধ। তাঁদের মতে, একটি সামান্য ভুল বড় করে দেখিয়ে আমাদের আবেদন অগ্রাহ্য করা হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর প্রধান সীতারাম মুর্মুর দাবি, ‘‘আবেদনপত্রে সভাপতির বিরুদ্ধে দরখাস্তকারীদের সংখ্যাই অনাস্থা আনার বিচার্য হওয়া উচিত।’’ তিনি জানান, মানবাজার ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে ১৮ জন সদস্য রয়েছেন। তার মধ্যে সিপিএমের দু’জন সদস্য রয়েছেন। বাকি ১৬ জন তৃণমূল সদস্যের মধ্যে অনাস্থার পক্ষে ১০ জন সই করেছেন। সংখ্যা গরিষ্ঠতাকে মান্যতা দেওয়ার পরিবর্তে সামান্য কারণে তাঁদের আবেদন স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ।
বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর এক সদস্য বলেন, ‘‘ইতিপূর্বে আমরা পঞ্চায়েত সভাপতির বদল চেয়ে অনাস্থার চিঠি দিয়েছিলাম। তখন আমাদের বলা হয়েছিল, পঞ্চায়েত আইনের সংশোধনী আইনে আড়াই বছরের আগে অনাস্থা আনলেও তা কার্যকরি হবে না। আমরা তা মেনে নিয়েছিলাম। সেই সময়সীমা পার হওয়ার পরেও আমরা ফের অনাস্থা চেয়ে নতুন ভাবে চিঠি দিলাম। তখন আমাদের বলা হল এখন নির্বাচনী বিধি লাগু রয়েছে। তাই এখন অনাস্থা আনা যাবে না। আর এখন রাজনৈতিক পরিচয়ের দোহাই তুলে ফের অনাস্থা পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে!’’
সীতারামবাবু জানান, অনাস্থার পক্ষে থাকা তাঁরা ১০ জন সদস্য খুব শীঘ্রই মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করবেন। রাজনৈতিক দলের পরিচয় উল্লেখ করে আরও একবার অনাস্থার আবেদন জানিয়ে দু’সপ্তাহ অপেক্ষা করবেন। তারপরেও অনাস্থার সভা না ডাকা হলে তাঁরা অন্য পথে হাঁটতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারী দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy