Advertisement
E-Paper

ব্যাঙ্কে টাকা নেই শুনে পথ অবরোধ সারেঙ্গায়

বিধান পাত্র ১৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করবেন। তবে বীজ কিনতে পারছেন না। অতনু পাত্র তাঁর পাঁচ বিঘা জমিতে আলু লাগাবেন বলে ধার করে বীজ কিনেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০০

বিধান পাত্র ১৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করবেন। তবে বীজ কিনতে পারছেন না। অতনু পাত্র তাঁর পাঁচ বিঘা জমিতে আলু লাগাবেন বলে ধার করে বীজ কিনেছেন। তবে হাতে টাকা না থাকায় তিনি জনমজুর লাগাতে পারছেন না। দিন তিনেকের মধ্যে বীজ মাঠে লাগাতে না পারলে সেসব নষ্ট হয়ে যাবে। বিপ্লব প্রতিহার ছ’বিঘা জমিতে আলু লাগাবেন। তবে মাত্র ১০ বস্তা বীজ কিনতে পেরেছেন। এই বীজে তাঁর অর্ধেক জমিতেও আলু লাগানো যাবে না। তাঁদের মতোই জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত ব্লক সারেঙ্গার জামিরা পাড়ার বহু বাসিন্দাই এখন আতান্তরে পড়েছেন।

সমস্যার মূলে সেই নোট-সঙ্কট!

আলু চাষ করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়, তার চেয়ে ঢের গুণ বেশি টাকা তাঁদের গচ্ছিত রয়েছে এলাকার গ্রামীণ ব্যাঙ্কে। কিন্তু কেন্দ্রের ১০০০ ও ৫০০-র পুরনো নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই নিজেদের ওই গচ্ছিত টাকা তাঁরা ব্যাঙ্ক থেকে তুলতে পারছেন না। পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট বাতিল হওয়ার পর পার হয়ে গিয়েছে দু’টি সপ্তাহ। নোট বাতিল হওয়ার পর থেকে প্রায় দিনই সকাল থেকে ব্যাঙ্কে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অতনুবাবু তুলতে পেরেছেন মোটে ৩৫০০ টাকা! বিপ্লববাবু তুলেছেন ২৫০০ টাকা! মঙ্গলবার সকাল থেকে তাঁরা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ব্যাঙ্ক খোলার পরেই কর্মীরা মূল দরজার পাশে পোস্টার সাঁটিয়ে জানিয়ে দেন ‘টাকা নেই’। হয়তো পরদিন টাকা তুলতে পারবেন সেই আশা নিয়েই শুকনো মুখে ব্যাঙ্ক থেকে ফিরে গিয়েছিলেন গ্রাহকেরা। তবে পরদিন বুধবারও ব্যাঙ্ক খোলার পরে গ্রাহকদের জানিয়ে দেওয়া হয়, এ দিনও টাকা মিলবে না। চটে গিয়ে ব্যাঙ্কের গ্রাহকেরা প্রতিবাদে পথ অবরোধে নামেন।

এই ঘটনায় সারেঙ্গা-লালগড় সড়ক ঘণ্টা চারেক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পুলিশ এসে পথ অবরোধ তোলে। অতনুবাবু বলেন, “লোকের কাছে টাকা ধার করে বীজ কিনেছি দিন চারেক আগে। এখনও সেই বীজ মাঠে লাগাতে পারছি না শ্রমিকদের দেওয়ার মতো টাকা হাতে নেই বলে। এ বার তো বীজগুলোই নষ্ট হয়ে যাবে।” বিধানবাবু বলেন, “ব্যাঙ্কে টাকা পড়ে রয়েছে। অথচ তুলতে পারছি না। এমন ঘটনা কখনও ঘটতে পারে কল্পনাও করিনি। এই পরিস্থিতিতে এ বার আলু লাগাতে পারব কি না সেটাই সন্দেহ।”

ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, টাকা যতক্ষণ হাতে ছিল গ্রাহকদের দু’হাজার থেকে পাঁচশো করে টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে এখন ব্যাঙ্কের হাতে টাকাই নেই। টাকা না আসা পর্যন্ত এর কোনও সুরাহা হওয়ার সম্ভাবনাও নেই বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

সারেঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ধীরেন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “আলু চাষ খরচ সাপেক্ষ। এই সময় চাষিদের হাতে নগদ টাকার জোগান থাকা অতি আবশ্যিক। তবে কেন্দ্রের হঠকারী সিদ্ধান্তের জেরে নিজেদের টাকা সময় মতো তুলতেই পারলেন না চাষিরা! কী যে হবে, বোঝা যাচ্ছে না।’’

Bank Road Block
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy